বকেয়া টাকা চাওয়ার জেরেই খুন, দাবি পুলিশের
টিটাগড় খুনে ধৃতদের আদালতে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে (নিজস্ব চিত্র)
মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: বকেয়া টাকা চাওয়ার জন্যই টিটাগড়ে তৃণমূল কর্মী আনোয়ার আলিকে খুন (Titagar Shootout) করা হয়েছে। তদন্তে নেমে পুলিশের হাতে প্রাথমিকভাবে এই তথ্য সামনে এসেছে। ইতিমধ্যে প্রকাশ্য দিবালোকে শুটআউটের (Titagar Shootout) ঘটনায় মূল অভিযুক্ত ও তার স্ত্রীসহ তিনজনকে পুলিশ গ্রেফতার করেছে। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ধৃতদের নাম মহম্মদ সানি, মহম্মদ আরিফ এবং সানির স্ত্রী শবনম বানু। তিনজনকেই পূর্ব বর্ধমানের মেমারি থেকে গ্রেফতার করা হয়েছে। শনিবার তাদের বারাকপুর মহকুমা আদালতে তোলা হয়। ১৪ দিনের পুলিশ হেফাজত চেয়ে আদালতে আবেদন করা হয়।
স্থানীয় ও পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, সানির বাড়ি টিটাগড়ের উড়ানপাড়া এলাকায়। বছর পাঁচেক আগে সানির বিরুদ্ধে একটি খুনের অভিযোগও ছিল। তাতে সে জেলও খেটেছে। পরে, জেল থেকে ছাড়া পেয়ে মোবাইল কেনাবেচার কাজ করা শুরু করেছিল। আনোয়ারসাহেব তৃণমূল কর্মীর পাশাপাশি এলাকায় তিনি প্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়ী হিসেবে পরিচিত ছিলেন। টিটাগড় এলাকায় তাঁর মোবাইলের দোকান রয়েছে। তিনি জমি কেনাবেচার সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। পাশাপাশি পরিবহণের তাঁর ব্যবসা ছিল। আনোয়ারের মোবাইল দোকান থেকে ধারে মোবাইল নিত সানি। পরে, তা বিক্রি করে টাকা ফেরত দিত সে। এইভাবে কারবার দুজনের মধ্যে ঠিকঠাক চলছিল। তবে, কয়েকমাস আগে আনোয়ারের দোকান থেকে সানি বেশ কয়েকটি মোবাইল ধারে নিয়েছিল। যার বাজারমূল্য প্রায় ৪ লক্ষ ৬২ হাজার টাকা। সেই টাকা দীর্ঘদিন ধরে ফেরত দিচ্ছিল না বলে অভিযোগ। আনোয়ার আলি ও তার ছেলে সোহেল বার বার সানির কাছে বকেয়া টাকা চেয়েছিলেন। কিন্তু, সানি সেই বকেয়া টাকা ফেরত দেয়নি বলে অভিযোগ। যার জেরে সোহেলের সঙ্গে সানির একবার ঝামেলা হয়েছিল। আনোয়ারের সঙ্গে তুমুল বচসাও হয়। আনোয়ার বকেয়া টাকা ফেরত না দেওয়া পর্যন্ত সানির উপর চাপ দিয়েছিলেন। নতুন করে আর সানিকে মোবাইল তিনি আর ধার দেননি। ফলে, সানি চরম বিপাকে পড়ে যায়। এরপরই সানি তার বন্ধু আরিফকে সমস্ত বিষয়টি বলে। আরিফ নৈহাটি থেকে একজন শার্প শুটারকে নিয়ে আসে। আনোয়ারকে খতম করার তারা ছক কষে।
বারাকপুর পুলিশ কমিশনারেটের ডিসি (সেন্ট্রাল) আশিস মৌর্য বলেন, সানির সঙ্গে আনোয়ার আলির আর্থিক লেনদেন সংক্রান্ত সমস্যা ছিল। এনিয়ে বচসাও হয়েছিল। এরপরই তাকে খুন করা হল। ঘটনাস্থল থেকে একটি স্কুটি বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। শুক্রবার সকাল থেকে আনোয়ারের গতিবিধির উপর সানি ও তার দলবল নজর রাখছিল। এমনকী সানির স্ত্রী শবনম আনোয়ারকে ফোন করে তাঁর অবস্থান জানার চেষ্টা করে। আনোয়ার খুন হওয়ার কিছুক্ষণ আগে তাঁকে শবনম ফোন করে বকেয়া টাকা নিয়ে যাওয়ার কথা বলেছিল। সেই টাকা আনতে গিয়েই সানি ও তাদের গ্যাংয়ের হাতে আনোয়ারসাহেব খুন (Titagar Shootout) হন। তবে, ঘটনার সময় সানি আরিফ ছাড়়াও আরও একজন ছিল। তার খোঁজে তল্লাশি চলছে।
দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের Facebook, Twitter এবং Google News পেজ।