Didir Doot: দিদির সুরক্ষাকবচ কর্মসূচিতে রাজ্য জুড়ে বিক্ষোভ...
তৃণমূলকর্মীদের বচসা এবং হাতাহাতি দেগঙ্গায়
মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: ফের প্রকাশ্যে শাসকদলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব। ‘দিদির দূত’ কর্মসূচিতে মন্ত্রীর সামনেই দেখা গেল এই গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব। দত্তপুকুরের পর দেগঙ্গা। এদিন উত্তর ২৪ পরগনার দেগঙ্গার চাকলায় ‘দিদির দূত’ হয়ে পৌঁছে গিয়েছিলেন দমকলমন্ত্রী সুজিত বসু। সেখানেই বচসায় জড়িয়ে পড়েন তৃণমূলের দুই গোষ্ঠীর নেতারা। আর তার পরই শুরু হয় ধাক্কাধাক্কি, মারামারি। ঝামেলায় জড়িয়ে পড়েন পঞ্চায়েত সদস্য বাগবুল ইসলাম। এই ঘটনা থেকেই গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব প্রকাশ্যে এলেও ‘দিদির দূত’ সুজিত গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের কথা অস্বীকার করেছেন। তাঁর দাবি, খাওয়ার জায়গা নিয়ে একটা ভুল বোঝাবুঝি হয়েছিল। সেটা মিটে গিয়েছে।
আজ বৃহস্পতিবার উত্তর ২৪ পরগনায় দেগঙ্গার চাকলা গ্রাম পঞ্চায়েতের পাথরঘাটা এলাকায় পৌঁছন ‘দিদির দূত’ সুজিত। সঙ্গে ছিলেন দেগঙ্গার বিধায়ক রহিমা মণ্ডল, দলীয় কর্মী-সহ পুলিশ আধিকারিকেরা। সকালে চাকলার মন্দিরে পুজো দিয়ে এলাকার একটি মসজিদেও যান তিনি। এরপর দলীয় কর্মসূচি অনুযায়ী, দুপুরে এলাকার এক তৃণমূলকর্মীর বাড়িতে দমকলমন্ত্রী এবং বিধায়কের খাওয়ার কথা ছিল। তবে মন্ত্রী-বিধায়কের জন্য তৃণমূলের আর এক কর্মীর বাড়িতেও খাওয়াদাওয়ার আয়োজন করা হয়েছিল। অভিযোগ, তা নিয়েই ঝামেলা শুরু হয় তৃণমূলের দুই গোষ্ঠীর মধ্যে। মন্ত্রী-বিধায়কেরা কোথায় খাবেন, তা নিয়ে সুজিতদের সামনেই বচসায় জড়িয়ে পড়েন দুই গোষ্ঠীর লোকজন। বচসা গড়ায় হাতাহাতিতে। মন্ত্রীর সামনেই ঝামেলা বাড়তে থাকে। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছয় দেগঙ্গা থানার পুলিশবাহিনী। পরে পরিস্থিতি সামলে মন্ত্রী দুই তৃণমূল কর্মীর বাড়িতে গিয়েই দেখা করেন বলে জানা গিয়েছে। গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের কথা উড়িয়ে দমকলমন্ত্রী সুজিত বসু দাবি করেন, ভুল বোঝাবুঝি থেকেই এই ঘটনা ঘটেছে।
দিদির সুরক্ষাকবচ কর্মসূচিতে 'দিদির দূত' হিসেবে গিয়ে প্রায় রোজই গ্রামবাসীদের হাজারো প্রশ্ন আর ক্ষোভের মুখে পড়ছেন তৃণমূলের নেতা, মন্ত্রী, সাংসদ, বিধায়করা। দেগঙ্গার ঘটনাই প্রথম নয়, এর আগে গত শনিবার দত্তপুকুরের নীলগঞ্জের সাইবনা এলাকায় ‘দিদির দূত’ কর্মসূচি চলাকালীন স্থানীয় বাসিন্দা সাগর বিশ্বাসের গালে সপাটে চড় কষিয়ে দিয়েছিলেন তৃণমূল সমর্থক শিবম রায়। পরে ওই ঘটনায় শিবমের বিরুদ্ধে বিজেপির প্রতিবাদ-বিক্ষোভও হয়েছে। আবার রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় এই কর্মসূচিতে বিক্ষোভ করতে দেখা গিয়েছে স্থানীয় বাসিন্দাদের।
উত্তর ২৪ পরগনার বাদুড়িয়াতেও একই ঘটনা। দিদির দূত কর্মসূচি ঘিরে প্রকাশ্যে চলে এল তৃণমূলের অন্দরের বিবাদ। দলের ব্লক সভাপতি ও অঞ্চল সভাপতিদের পৃথক পৃথক কর্মসূচিতে যোগ দিতে হল তৃণমূল সাংসদ কাকলি ঘোষ দস্তিদারকে। শুধু তাই নয়, সাংসদের সামনেই বচসায় জড়াল তৃণমূলের দুই গোষ্ঠী। পরিস্থিতি এমন পর্যায়ে পৌঁছয় যে, বাইরে তৃণমূল কর্মীদের বিক্ষোভের জেরে, দরজা বন্ধ করে বৈঠক করতে হয় তৃণমূল সাংসদকে।
বাগদায় দিদির দূত কর্মসূচিতে গিয়ে দলবদল নিয়ে প্রশ্নের মুখে পড়েছিলেন বিধায়ক বিশ্বজিৎ দাস। বাগদার বাঁশঘাটায় লোকেদের অভাব-অভিযোগের কথা শুনতে গিয়েছিলেন তিনি। সেখানেই এক বাসিন্দা তাঁকে বলেন, 'তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে গিয়েছিলেন, ভোটে জিতে আবার তৃণমূলে ফিরে এসেছেন। আপনাকে কী অভিযোগ করব?'
এখানেও রাস্তা সংস্কার থেকে পানীয় জলের সমস্যা নিয়ে একাধিক প্রশ্নের মুখে পড়তে হয় কোচবিহারের সিতাইয়ের তৃণমূল বিধায়ক জগদীশ বর্মা বাসুনিয়াকে। স্থানীয় বাসিন্দাদের একজন বলেন, 'আমরা রাস্তা পাকা চাই আর ড্রেন পাকা চাই। তাহলে ভোট পাবেন।'
অনুব্রতহীন বীরভূমেও দিদির দূত কর্মসূচিতে গ্রামবাসীদের ক্ষোভের মুখে একের পর এক তৃণমূল বিধায়ক ও সাংসদ। এদিন ময়ূরেশ্বরের নন্দীগ্রামে পানীয় জল নিয়ে ক্ষোভের মুখে পড়েন বিধায়ক অভিজিৎ রায়। জল না পেলে ভোট দেব না বলে তৃণমূল বিধায়ককে হুঁশিয়ারি দেন গ্রামবাসীরা।