img

Follow us on

Monday, Sep 16, 2024

Tollywood: 'বিশ্বাস ব্রাদার্স'-এর তুঘলকি কাণ্ডে ৫০০ কোটির ক্ষতি টলিপাড়ার! তাও চুপ রাজ্য

Swarup Biswas: স্বরূপ বিশ্বাসের অঙ্গুলিহেলনে ফেডারেশনের কঠোর নিয়মাবলির কারণে টলিপাড়ার বিপুল ক্ষতি...

img

স্বরূপ বিশ্বাসের অঙ্গুলিহেলনে ফেডারেশনের কঠোর নিয়ম টালিগঞ্জে।

  2024-08-02 17:47:11

মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: লাইট-ক্যামেরা-অ্যাকশন। কয়েক দিন ধরে এই শব্দগুলি শোনা যায়নি টলি-পাড়ায় (Tollywood)। প্রতিবাদের আঁচ পড়েছিল স্টুডিও পাড়ায়। সিনেমা-সিরিয়াল টু ওটিটি- সব শুটিং ছিল বন্ধ। অবশেষে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হস্তক্ষেপে নাকি কাজ শুরু হল স্টুডিও পাড়ায়। মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে পরিচালক-টেকনিশিয়ানদের বৈঠকের পর সমাজমাধ্যমে তারকা-সাংসদ দেব জানিয়েছিলেন ফেডারেশনের সঙ্গে পরিচালকদের দ্বন্দ্বে দাঁড়ি পড়তে চলেছে। কিন্তু আদতে কি দাঁড়ি পড়ল নাকি টালিগঞ্জের প্রযোজক-পরিচালকরা একপ্রকার বাধ্য হলেন তাঁদের ক্ষতিটা মেনে নিতে? আসলে ফেডারেশনের তথাকথিত যেসব 'নিয়ম' নিয়ে সরব হয়েছিলেন টলিপাড়ার পরিচালক এবং প্রযোজকেরা সেসব নিয়ম-কানুন পাল্টে যাবে, এমনটাই আশ্বাস মিলেছে। কিন্তু সেই নিয়ম পাল্টাবেন কে? ফেডারেশনের সমস্ত রকমের নিয়ম কানুন নিয়ে একটি রিভিউ কমিটি তৈরি হচ্ছে। সেই কমিটির মাথায় রয়েছেন রাজের মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস। তিনি আবার ফেডারেশনের সভাপতি স্বরূপ বিশ্বাসের (Swarup Biswas) দাদা। অতএব ক্ষমতার অদলবদল হল না আদপে পাট্টা রইল "বিশ্বাস ব্রাদার্সের" হাতেই!

অনিশ্চিত কাজের পরিবেশ

বুধবার টালিগঞ্জের (Tollywood) কলাকুশলীদের সংগঠনের সভাপতি স্বরূপ বিশ্বাস (Swarup Biswas)  জানান, পরিচালক রাহুল মুখোপাধ্যায়ের বিষয়ে তাঁদের আরও কিছু আলোচনা বাকি রয়েছে। তার জন্য কয়েকদিন প্রয়োজন। ফেডারেশনের আওতাভুক্ত টেকনিশিয়ানরা রাহুলের পরিচালনায় কাজ করবেন কি না মূলত সেই বিষয়ে আলোচিত হবে আগামী কয়েকদিনের ফেডারেশনের বৈঠকে। বক্তব্য শেষে স্বরূপ আরও জানান, ৫ অগাস্ট নিজেদের সিদ্ধান্ত জানাবে ফেডারেশন। অতএব এখনও কিন্তু কোনও নিশ্চয়তা নেই। 

স্বজনপোষণ

যে বিষয়গুলি এখনও অস্পষ্ট, তা হল স্রেফ স্বজনপোষণের ভিত্তিতেই কি চলতে থাকবে গিল্ডের কার্ড পাওয়ার প্রক্রিয়া? না কি যোগ্যতার নিরিখে বিচার করা শুরু হবে?  আর তা যদি না হয়, তাহলে  মেধাবী ছাত্ররা যেমন চলে যাচ্ছেন, সে রকম মেধাবী পরিচালকরাও বাংলা ছেড়ে ভিন্-রাজ্যে পাড়ি দেবেন। না, ফেডারেশনের সভাপতি কোনও দিনই ‘ব্যানড’ শব্দটি সমর্থন করেন না। পরিবর্তে, অসহযোগ নীতিকেই টেকশিয়ানদের আন্দোলনের ক্ষেত্রে ব্যবহার করতে চান। ফলে, পরিচালক রাহুল মুখোপাধ্যায় যখন ফেডারেশনকে লুকিয়ে বাংলাদেশে শুটিং করেন, তখন ফেডারেশনের তরফে রাহুলের বিরুদ্ধে বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়। সেখানে লেখা, “চিরন্তন মুখোপাধ্যায় (রাহুল) ফেডারেশনের নিয়মবিরুদ্ধ কাজ করেছেন। সেই সূত্রে ডিরেক্টর অ্যাসোসিয়েশন অফ ইস্টার্ন ইন্ডিয়া (ডিএইআই) তাঁকে শুটিং সংক্রান্ত কাজ বন্ধ রাখতে নির্দেশ দিয়েছে।”

বাজেট বেশি

ফেডারেশনের মতে, এক একটা শুটিংয়ে গড়ে ১২০ জন টেকশিয়ান নিতে হবে। অর্থাৎ, মানুষ বেশি, ছবির বাজেট বড়। ছবির বাজেট ছোট হলে চলবে না। কিন্তু এই বাজেট দিতে রাজি হন না কোনও প্রযোজক। অতএব সমস্যায় পড়েন পরিচালকরা। ফেডারেশনের নতুন নিয়ম অনুযায়ী, বাংলাদেশের ওয়েব প্ল্যাটফর্ম ‘চরকি’ কলকাতা থেকে চলে গেল। স্বরূপ ওরফে ফেডারেশনের দাবি, বাংলাদেশ হল ‘বিদেশ’। তাই এখানকার টেকনিশিয়ানরা কাজ করার জন্য চারগুণ বেশি অর্থ নেবেন। স্বাভাবিক ভাবেই ‘চরকি’ সেই টাকা দেবে না, ফলে তারা বাইরে চলে গেল। ধরা যাক, একটি ওটিটি প্ল্যাটফর্ম বছরে ১২টি ছবি ও ১২টি ওয়েব সিরিজ নিয়ে আসে। ওয়েব সিরিজের খরচ ধরা যাক গড়ে ১.৫ কোটি। তা হলে ১২টি ওয়েব সিরিজের খরচ ১৮ কোটি। গড়ে একটি ওটিটি ছবির খরচ যদি ১ কোটি হয়, তা হলে ১২টি ছবির হিসেবে ১২ কোটি। অতএব, ‘চরকি’ চলে যাওয়ায় মোট ৩০ কোটির আর্থিক ক্ষতি হল পশ্চিমবঙ্গে! ‘চরকি’ কলকাতায় শুটিং করতে পারলে আরও অনেক ওটিটির শুটিং হত এখানে। যদি কম করে তিনটি ওটিটির শুটিং হত, তা হলে অঙ্ক দাঁড়াত মোটামুটি দেড়শো কোটি! 

আরও পড়ুন: ঘূর্ণাবর্তের প্রভাবে শুক্রবারও কলকাতা-সহ দক্ষিণবঙ্গের ৬ জেলায় বৃষ্টির সতর্কতা

কত টাকার ক্ষতি

কলকাতায় কোনও হিন্দি ছবি শুট করা হলে চোখ বন্ধ করে ৬.৫ কোটি বাজেট থাকে টেকশিয়ানদের জন্য। তামিল, তেলুগু ছবির ক্ষেত্রেই একই হিসেব। যদি ৫টি হিন্দি ছবি আর ৫টি দক্ষিণী ছবি কলকাতায় হয় তা হলে অঙ্ক দাঁড়ায় ৬০ থেকে ৭০ কোটি। মাঝেমধ্যে তা ১০০ কোটিও ছুঁয়ে ফেলে। হিন্দি ওটিটির শুটিং সব বাইরে চলে গিয়েছে। হিন্দি ওটিটি থেকে কমপক্ষে ৫০ কোটি টাকার ব্যবসা হতে পারত। শুধুমাত্র ফেডারেশনের কঠোর নিয়মাবলির কারণে তা সম্ভব হয়নি।

বাংলা ছবি কমেছে

আগে বছরে ১৪০টি বাংলা (Tollywood) ছবি হত। এই বছরে তা ৬৫ থেকে ৭০। প্রতিটি ছবি যদি ১.৫ কোটির হয়, তা হলে প্রায় মোট প্রায় একশো কোটি। যদি বিজ্ঞাপনী ফিল্মের কথা বলা হয়, কলকাতার বিজ্ঞাপনী ফিল্মের বাজেট থাকে ২৫ লক্ষ, মুম্বইয়ের ক্ষেত্রে তা ৭০ লক্ষ। আগে পুজোর সময় অধিকাংশ বিজ্ঞাপনী ফিল্মের শুটিং হত কলকাতায়। ঠিক যে রকম আইপিএলের মরসুমে শুটিং হয় মুম্বইয়ে। সে ক্ষেত্রে হিসেব করলে আয় হতে পারত একশো কোটি। ফেডারেশনের পরিকাঠামোর জন্য সেই পথও বন্ধ! নানাদিক দিয়ে হিসেব করলে দেখা যাবে বিশ্বাস ব্রাদার্সের তৈরি নানান নিয়মে প্রায় ৫০০ কোটি টাকার ক্ষতি হচ্ছে টলিপাড়ার। তবু উদাসীন রাজ্য সরকার।

 

দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের  Whatsapp, FacebookTwitter, Telegram এবং Google News পেজ।

Tags:

Madhyom

bangla news

Tollywood

bengali Film industry

Arup Biswas

Swarup Biswas


আরও খবর


ছবিতে খবর