তৃণমূলের গোষ্ঠীকোন্দলের জেরে তালাবন্ধ উপ-স্বাস্থ্যকেন্দ্র, কী করল প্রশাসন?
উপস্বাস্থ্যকেন্দ্রের তালা ভাঙল পুলিশ-প্রশাসন (নিজস্ব চিত্র)
মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: কার দখলে থাকবে উপ স্বাস্থ্যকেন্দ্র, তাই নিয়ে শাসকদলের দুই গোষ্ঠীর দ্বন্দ্ব। আর ওই গোষ্ঠীদ্বন্দ্বে দীর্ঘ এক বছর ধরে তালাবন্ধ উপ স্বাস্থ্যকেন্দ্র। তার জেরে পরিষেবা থেকে বঞ্চিত হয়ে পড়েছিলেন প্রসূতি ও যক্ষারোগীরা। শেষ পর্যন্ত মঙ্গলবার উপ স্বাস্থ্যকেন্দ্রের তালা ভাঙতে দৌড়তে হল বিডিওতে। এমনই নজিরবিহীন ঘটনাে ঘটেছে দুর্গাপুর (Durgapur) মহকুমার বুদবুদের দেবশালা অঞ্চলের পশ্চিম চণ্ডীপুরে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বছরখানেক আগে আউশগ্রাম জঙ্গলমহলবাসীর সুবিধার্থে দুর্গাপুর (Durgapur) মহকুমার বুদবুদের দেবশালার কাঁকোড়ায় পশ্চিম চণ্ডীপুরে উপ স্বাস্থ্যকেন্দ্রটি তৈরি করা হয়। সেখানে দেবশালা অঞ্চলের কাঁকোড়া, কলমডাঙা, সহ ১০ টি গ্রামের প্রায় ৪ হাজার মানুষ চিকিৎসা পরিষেবা পেতেন। মূলত প্রসূতি, বয়স্ক ও যক্ষা রোগীরা বেশী উপকৃত হতেন। গত ২০২৩ সালের ১২ জানুয়ারি উপ স্বাস্থ্যকেন্দ্রটিতে তালা ঝুলিয়ে দেওয়া হয়। জানা গিয়েছে, এলাকাটি জঙ্গলমহল। অনগ্রসর সম্প্রদায়ের বসবাস। সরকারি ওই স্বাস্থ্যকেন্দ্রটির একাংশ দখল করে তৃণমূলের স্থানীয় নেতৃত্ব ক্লাবঘর করতে চেয়েছিল। তাই নিয়ে দুই গোষ্ঠীর বিবাদের জেরে তালা ঝুলে যায়। অভিযোগ, উপ স্বাস্থ্যকেন্দ্রটি কার দখলে থাকবে তা নিয়ে তৃণমূলের দুই গোষ্ঠীর বিবাদ শুরু হয়েছিল। বিবাদের জেরে শেষ পর্যন্ত তালা ঝুলে যায় উপ স্বাস্থ্যকেন্দ্রে। তার জেরে চিকিৎসা পরিষেবা থেকে বঞ্চিত হন সাধারণ মানুষ। বিপাকে পড়েন গর্ভবতী মা'য়েরা ও যক্ষা রোগীরা। শেষ পর্যন্ত মঙ্গলবার আউশগ্রাম-২ বিডিও চিন্ময় দাস বুদবুদ থানার পুলিশকে নিয়ে দেবশালা অঞ্চলের পশ্চিম চন্ডিপুর উপ স্বাস্থ্যকেন্দ্রে আসেন। তালা ভেঙে দেওয়া হয়।
পশ্চিম চন্ডিপুর উপ স্বাস্থ্যকেন্দ্রের স্বাস্থ্যকর্মী সোমা ঘোষ জানান, খুব অসুবিধে হচ্ছিল। বিশেষ করে গর্ভবতী মহিলারা সমস্যায় পড়ছিলেন। নিয়মিত ভ্যাকসিন দেওয়া সম্ভব হচ্ছিল না। যক্ষা রোগীদের জামতাড়া স্বাস্থ্যকেন্দ্র থেকে ওষুধের ব্যবস্থা করা হচ্ছিল। ব্লক প্রশাসনের উদ্যোগে ফের পরিষেবা চালু হল।
তৃণমূল কংগ্রেসের আউশগ্রাম-২ ব্লক সভাপতি আব্দুল লালন বলেন, "দল কখনই এধরনের কাজে মদত দেয় না। যারা তালা ঝুলিয়েছিল, তারা সমাজবিরোধী।" বিজেপির বোলপুর সাংগঠনিক জেলার ওবিসি মোর্চার সহ সভাপতি সৌমেন পাত্র বলেন," তৃণমূলের কোন্দলের জন্য ভুগতে হয় সাধারণ মানুষকে। এটা অমানবিক, বেদনাদায়ক ঘটনা। আশ্চর্যের বিষয়, বহু আবেদনের পর বন্ধ তালা ভাঙতে পুলিশ-প্রশাসনের এক বছর সময় লাগল। শাসকদলের কাছে কত'টা অসহায় পুলিশ ও প্রশাসন, এটা তারই প্রমাণ।"
আউশগ্রাম-২ নম্বর ব্লকের বিডিও চিন্ময় দাস বলেন, "কে বা কারা তালা ঝুলিয়েছিল, পুলিশকে তদন্ত করে রিপোর্ট দিতে বলেছি। এরপর যদি কেউ তালা মারে এই স্বাস্থ্যকেন্দ্রে, তাহলে তার বা তাদের বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে।"
দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের Facebook, Twitter এবং Google News পেজ।