ইসলামপুর বাজারের মধ্যে চলল গুলি, গুলিবিদ্ধ ১৫, তৃণমূলের কোন্দল প্রকাশ্যে
হাসপাতালে গুলিবিদ্ধ তৃণমূল কর্মী (নিজস্ব চিত্র)
মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: ফের তৃণমূলের গোষ্ঠী সংঘর্ষের ঘটনায় উত্তপ্ত ইসলামপুর (Islampur)। এবারে গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের জেরে চলল গুলিও। গুলিবিদ্ধ প্রায় ১৫ জন। তাদের ইসলামপুর মহকুমা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। মঙ্গলবার রাতে ঘটনাটি ঘটেছে উত্তর দিনাজপুর জেলার ইসলামপুরের সুজালি গ্রাম পঞ্চায়েতের চোতরাগছ গ্রামের আতালডাঙ্গী-হাট এলাকায়। ঘটনায় তীব্র উত্তেজনা সৃষ্টি হয়েছে গোটা এলাকাজুড়ে। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যায় ইসলামপুর থানার বিশাল পুলিশ বাহিনী। বুধবার সকাল থেকে সেখানে পুলিশ মোতায়েন রয়েছে।
স্থানীয় ও পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, স্থানীয় আতালডাঙ্গী-হাট এলাকায় হঠাৎই দুই গোষ্ঠীর মধ্যে সংঘর্ষ বাধে। সংঘর্ষের জেরে চলে গুলি ও ব্যাপক বোমাবাজি হয়। এই ঘটনায় গুলিবিদ্ধ হন প্রায় ১৫ জন। আহতদের অভিযোগ, আমরা তৃণমূল কর্মী। জেলা পরিষদ আসনে নির্দল প্রার্থীকে ভোট না দেওয়ার কারণে আমাদের ওপরে গুলি চালানো হয়েছে। ইসলামপুরের (Islampur) সুজালি গ্রাম পঞ্চায়েতের তৃণমূলের অঞ্চল সভাপতি আব্দুল হক ও তার লোকজন এই হামলার ঘটনায় জড়িত। উল্লেখ্য, উত্তর দিনাজপুর জেলা পরিষদের ৪নং আসনে তৃণমূলের প্রার্থী ছিলেন মৌসুমী খাতুন। তৃণমূলের টিকিট না পাওয়ায় নির্দল প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে নেমেছিলেন চোপড়ার তৃণমূল বিধায়ক হামিদুল রহমানের মেয়ে আরজুনা বেগম। নির্বাচনে জয়ী হয় তৃণমূল প্রার্থী মৌসুমী খাতুন। এই প্রার্থী পদ নিয়ে শুরু থেকেই সেখানে তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব লেগেই ছিল। তারই অঙ্গ হিসেবে মঙ্গলবার এই সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে বলে জানিয়েছেন আহতরা। সংঘর্ষে আহত মহঃ সারোয়ার নামে এক তৃণমূল কর্মী জানিয়েছেন, আমরা মহঃ জাহিদুলের অনুগামী। আমরা তৃণমূল প্রার্থীকে ভোট দিয়ে জিতিয়েছি। চোপড়ার তৃণমূল বিধায়ক হামিদুল রহমানের মেয়ে নির্দল প্রার্থী হয়ে দাঁড়িয়েছিল। তাঁকে আমরা ভোট দিইনি। তাই তাঁর লোকজনেরা আমাদের ওপরে গুলি চালিয়েছে। অপর এক গুলিবিদ্ধ খলিল মহম্মদ জানিয়েছেন, আমি তৃণমূল দল করি। আমি হাটে গিয়েছিলাম। হঠাৎ করে নির্দল প্রার্থীর লোকজনেরা গুলি চালাতে আরম্ভ করে। আমারও পায়ে গুলি লেগেছে।
কী বললেন তৃণমূল নেতৃত্ব?
ঘটনার খবর পেয়ে ইসলামপুর (Islampur) হাসপাতালে ছুটে আসেন তৃণমূলের জেলা সভাপতি কানাইয়ালাল আগরওয়াল, ইসলামপুরের তৃণমূল ব্লক সভাপতি জাকির হোসেন, ইসলামপুরের যুব তৃণমূল নেতা কৌশিক গুণ সহ অন্যান্য নেতৃত্ব। তাঁরা অবশ্য এই গোষ্ঠীকোন্দলের বিষয়টি এড়িয়ে যান। এই ঘটনায় জেলা পরিষদের বিজয়ী তৃণমূল প্রার্থী মৌসুমী খাতুনের স্বামী মহঃ জাহিদুল বলেন, আতালডাঙ্গী এলাকায় আমাদের কিছু লোক বাজার করতে গিয়েছিল। সেখানে তাদের উপরে নির্দল সমর্থিত কিছু দুষ্কৃতী হামলা চালায় ও গুলি করে। ওই এলাকা বিরোধীশূন্য হলেও নির্বাচনকে কেন্দ্র করে সেখানে দুটি গোষ্ঠী হয়ে গিয়েছিল। বেশ কিছুদিন ধরেই নির্দল সমর্থিত দুষ্কৃতীরা আমাদের তৃণমূল কর্মী-সমর্থকদের হুমকি দিচ্ছিল। সুজালি অঞ্চলে কোনও অশান্তি হোক আমরা তা চাইনি। তাই আমাদের লোকজনদের শান্ত থাকতে বলেছিলাম। কিন্তু, আজ অশান্তি হয়েই গেল। এ বিষয়ে তৃণমূলের জেলা সভাপতি কানাইয়ালাল আগারওয়াল বলেন, ২০-২২ জনের মতো আহত হয়েছে। তাদের ওপর গুলি চালানো হয়েছে। ১ জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় তাঁকে উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। গোটা ঘটনা পুলিশ সুপারকে জানানো হয়েছে। পুলিশ সঠিক তদন্ত করবে। তারপরই বিস্তারিত জানা যাবে।"
দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের Facebook, Twitter এবং Google News পেজ।