নির্দেশিকা জারি করে কি নিজেদের পিঠ বাঁচাতে তৎপর যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ?
যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়।
মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: ছাত্র মৃত্যুর (JU Student Death) জেরে অবশেষে ‘ঘুম ভাঙলো’ যাদবপুরের। তরুণ তাজা একটি প্রাণ অকালে ঝরে যাওয়ার পর টনক নড়লো বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের। এখন ‘নিজেদের পিঠ বাঁচাতে’ একাধিক পদক্ষেপ গ্রহণ করা হচ্ছে। যদিও, তাতে আদৌ কতটা লাভ হবে, তা নিয়ে প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে।
স্বপ্নদীপের মৃত্যুর পর চারদিক থেকে ধেয়ে আসা প্রবল চাপের মধ্যে অবশেষে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের (Jadavpur University) রেজিস্ট্রার স্নেহমঞ্জু বসু বৃহস্পতিবার নির্দেশিকা জারি করেন। তাতে বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরে প্রবেশ নিয়ে একাধিক বিধিনিষেধ জারি আরোপ করা হয়েছে। নির্দেশিকা অনুযায়ী, রাত ৮টার পর থেকে সকাল ৭টার মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রবেশ করতে গেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের দেওয়া ‘বৈধ’ পরিচয়পত্র লাগবে। অর্থাথ, ক্যাম্পাসে রাত ৮টা থেকে সকাল ৭টা পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয় ইস্যু করা পরিচয়পত্র ছাড়া প্রবেশ করা যাবে না।
এছাড়া, নির্দেশিকায় বলা আছে, বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে বসে কোনও জাতীয় মাদক সেবন করা যাবে না। কেউ যদি মাদক সেবন করতে গিয়ে ধরা পড়েন, তবে তাঁর বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে। বিশ্ববিদ্যালয়ে বহিরাগত প্রবেশে নিয়ন্ত্রণ করা হবে। বাইক বা চারচাকার সামনে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় (Jadavpur University) কর্তৃপক্ষের অনুমোদন স্টিকার না থাকলে ক্যাম্পাসে ঢুকতে দেওয়া হবে না। রোজ রেজিস্ট্রার মেনটেন করা হবে। এছাড়াও ক্যাম্পাসের গেটগুলিতে সিসি ক্যামেরা বসছে।
স্নেহমঞ্জু বসু সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে জানান যে, ‘ছাত্র মৃত্যুর মতো অপ্রীতিকর ঘটনা আটকাতে কী কী করা উচিত তা নিয়ে আমরা বৈঠক করেছি।’ অথচ, র্যাগিং বন্ধ করতে কী কী বদক্ষেপ, তা সম্পর্কে কোনও ব্যবস্থাগ্রহণের আশ্বাস শোনা গেল না তাঁর কথায়। ফলে, এই নির্দেশিকায় কতটা লাভ হবে, বা আদৌ কোনও লাভ হবে কিনা, তা নিশ্চিত করে কেউ-ই বলতে পারছেন না। এমনকী, এই নির্দেশিকা কার্যকর কোন পদ্ধতিতে করা হবে, বা একে লঙ্ঘন করলে, আইন ভঙ্গকারীর বিরুদ্ধে ঠিক কী ব্যবস্থাগ্রহণ করা হবে, তাও স্পষ্ট নয়। এর পাশাপাশি, প্রশ্ন উঠছে, বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ যদি জেনেই থাকতো যে, সেখানে মাদক সেবন হয়, তাহলে, এতদিন কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি কেন? এসব প্রশ্নের উত্তর অধরাই থেকে গেল।
আরও পড়ুন: টানা ৩ ঘণ্টা পুলিশি জেরার মুখে ডিন কি দায় এড়ালেন?
যাদবপুর (Jadavpur University) বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র মৃত্যুর (JU Student Death) ঘটনা থেকে শিক্ষা নিয়ে প্রথম বর্ষের পড়ুয়াদের জন্য আলাদা হস্টেলের ব্যবস্থা করছে কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ। হস্টেলে কারা থাকছেন, প্রাক্তনীরা থাকছেন কিনা, থাকলেও কী প্রয়োজনে? সবটাই খতিয়ে দেখছে মেডিক্যাল কলেজ কর্তৃপক্ষ। প্রথম বর্ষের পড়ুয়াদের জন্য ২ টি আলাদা হস্টেলের ব্যবস্থা করা হচ্ছে। একটি গার্লস হস্টেল ও আরেকটি বয়েজ হস্টেলের ব্যবস্থা করছে কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ কর্তৃপক্ষ। গিরিবাবু লেনের বয়েজ হস্টেলে রাখা হবে প্রথম বর্ষের পড়ুয়াদের। পুনর্গঠন করা হয়েছে হস্টেল কমিটি ।হস্টেলে কারা থাকছে এবং কারা প্রাক্তনী হয়েও হস্টেলে রয়েছে, সেই বিষয়গুলি নিয়ে রিপোর্ট জমা দেবেন হস্টেল সুপার।
দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের Facebook, Twitter এবং Google News পেজ।