কোনও কোচিং ছাড়াই ঘরে বসে পড়ে প্রথমবারেই সফল বেহালার ২৪ বছরের মেয়ে দিয়া গোলদার।
অঙ্কিতা আগরওয়াল।
মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: স্বপ্নপূরণ কলকাতার মেয়ে অঙ্কিতা আগরওয়ালের (Ankita Agarwal)। সোমবার সিভিল সার্ভিসের (UPSC Civil Services 2021 Final) ফল প্রকাশ হতেই দেখা যায়, মেধা তালিকার দ্বিতীয় স্থানে কলকাতার লেকটাউনের মেয়ে অঙ্কিতা। স্কুলজীবন কেটেছে এই শহরেই। তার পর কলেজের পাঠ নিতে দিল্লি যাত্রা। সেখানেই কর্পোরেটে চাকরি, ইউপিএসইসি পরীক্ষা দিয়ে রাজস্ব সার্ভিসে যোগ, তার পর ফের পরীক্ষা দিয়ে অবশেষে স্বপ্নপূরণ— আইএএস।
অর্থনীতিতে স্নাতক অঙ্কিতা জানান, কর্পোরেটে চাকরি করতে করতেই দেশের জন্য কাজ করার তাগিদ অনুভব করেন। তাই চাকরি ছেড়ে পড়াশোনায় মনোনিবেশ। প্রথমে সুযোগ পান আইআরএস (ইন্ডিয়া রেভিনিউ সার্ভিস)-এ। আইআরএসের ট্রেনিংয়ে এই মুহূর্তে ফরিদাবাদে রয়েছেন অঙ্কিতা। কিন্তু লক্ষ্য ছিল আইএএস। সে কারণে ২০২১-এ ফের সিভিল সার্ভিস পরীক্ষায় বসলেন। এবার স্বপ্ন সফল। অঙ্কিতা বলেন, ‘‘আমার ভাগ্য ভাল যে, শিক্ষার জন্য উপযুক্ত পরিবেশ ও পরিবার পেয়েছি। অনেকে পান না। আমি সুযোগ পেয়েছি। এ বার আমার সমাজকে ফিরিয়ে দেওয়ার পালা।’’
আরও পড়ুন: নারীশক্তির জয়! ইউপিএসসি সিভিল সার্ভিস পরীক্ষায় প্রথম তিনে তিন কন্যা
বাংলায় কাজ করার ইচ্ছে রয়েছে বঙ্গ-তনয়ার। নিজের ভবিষ্যৎ পরিকল্পনার কথাও জানালেন তিনি। বললেন, ‘‘ভবিষ্যতে স্বাস্থ্য ও শিক্ষার উন্নতির পাশাপাশি মহিলাদের আরও শক্তিশালী করার জন্য কাজ করতে চাই। এ ছাড়াও গ্রামোন্নয়নে কাজ করার ইচ্ছা আছে। আর আমি তো বাংলার ক্যাডার। কাজ করার জন্য বাংলাকেই বেছে নেওয়ার চেষ্টা করব।’’
"The issues of poverty, unemployment, climate change, etcetera, prevalent in other countries, are across the table everywhere. I'd like to work on them," said Ankita Agarwal, AIR 2 in #UPSC, on being asked about the issues she'd like to work on after getting posted in West Bengal pic.twitter.com/2FsEgbmNiq
— ANI (@ANI) May 30, 2022
">
দমদমের বাসিন্দা শুভম শুক্লা তালিকা ৪৩ নম্বর স্থানে রয়েছেন। এ নিয়ে চতুর্থবার এই পরীক্ষায় বসেন। মেধাতালিকায় এতটা উপরে নিজের নাম দেখে খুবই খুশি শুভম। এবার দেশের জন্য কিছু করতে চান তিনি। দিনে কখনও ছয় ঘণ্টা, তো কখনও ১২ ঘণ্টা— পড়াশোনা করেছেন নিয়মিত। এক্ষেত্রে এক শতাংশও ফাঁকি দেননি এবার নিজের শখ ফুটবল আর ভিডিওগেম নিয়ে কয়েকটা দিন পড়ে থেকে মানুষের কাজে মন দেবেন বলে জানান শুভম।
মেদিনীপুরের ছেলে নরেন্দ্রপুর রামকৃষ্ণ মিশনের ছাত্র ইন্দ্রাশিস দত্ত ৯৪ নম্বর স্থানে রয়েছেন। ২৭ বছরের ইন্দ্রাশিস আমেরিকা, সুইৎজারল্যান্ড, ইজরায়েল থেকে বিভিন্ন কাজের সুযোগ পেলেও ভারতেই থাকতে চান। তাই ইউপিএসসি দেওয়ার কথা ভাবেন। প্রথমবার ২০২০ সালে তালিকায় ৩১৮ নম্বরে জায়গা পান। কিন্তু তালিকায় প্রথম ৫০ জনের মধ্যে থাকার ইচ্ছা নিয়ে আবার পরীক্ষায় বসেন। ছেলের ফলাফলে খুশি ইন্দ্রাশিসের বাবা গুরুপ্রসাদ দত্ত।
ইউনাইটেড পাবলিক সার্ভিস কমিশনে ৬১২ ব়্যাঙ্ক করেছে বেহালার মেয়ে দিয়া গোলদার। প্রথমবার এই পরীক্ষায় বসেন ২৪ বছরের দিয়া। বাবা অজিত গোলদার ডব্লিউবিসিএস অফিসার। তাঁর কথায়, “খড়গপুর আইআইটিতে পড়াশোনা চলাকালীন লকডাউন শুরু হয়ে যায়। মেয়ে বাড়িতে বসে না থেকে ইউপিএসসির প্রস্তুতি নেওয়ার ইচ্ছেপ্রকাশ করেছিল। কোনও কোচিং ছাড়া মেয়ে যে এত ভাল ফল করবে কখনও ভাবতে পারিনি।” দিয়া জানাচ্ছেন, “নিজের মতো করে নোটস তৈরি করে কখনও কখনও টপারদের সঙ্গে ফোনে কথা বলে বা অনলাইনে বিভিন্ন সাইট ঘেঁটে আমি কোচিং ছাড়াই প্রস্তুতি নিয়ে ফেলি।”