পুজোর মধ্যেও হাতির হানা! প্রাণে বাঁচতে কী পদক্ষেপ নিলেন গ্রামবাসীরা?
হাতির হামলা থেকে বাঁচতে গ্রামবাসীর হাতে তৈরি ঘণ্টা (সংগৃহীত ছবি)
মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: হাতির তাণ্ডব রুখতে রাজ্য সরকারের কোনও উদ্যোগ নেই। এমনই অভিযোগ বাঁকুড়়ার (Bankura) সিমলাপালের দুবরাজপুর গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার বাসিন্দাদের। এই অবস্থায় রাতের অন্ধকারে গ্রামে ঢুকে পড়া হাতির উপস্থিতি টের পেতে অভিনব কৌশল নিয়েছেন সিমলাপালের নেকড়াতাপল গ্রামের বাসিন্দারা।
মাস খানেক আগেই পশ্চিম মেদিনীপুর থেকে বাঁকুড়ার (Bankura) গ্রামে ঢোকে ৪০টি হাতির দল। একটি বাচ্চা হাতির মৃত্যু হওয়ায় আক্রমণাত্মক ভাবে গ্রামে ঢোকে দলটি। জঙ্গল লাগোয়া এলাকায় আক্রমণ চালিয়ে দুই পুলিশ কর্মীকে আহত করে হাতির দল। তাঁদেরকে বিষ্ণুপুর হাসপাতালে পাঠানো হয়। ৪০টি হাতির দল একবারে বাঁকুড়া জেলায় ঢুকে পড়ায় চিন্তায় পড়ে যায় বন বিভাগ। বৈঠক করে জেলা প্রশাসন। কিন্তু, বাস্তবে কাজের কাজ কিছুই হয়নি। ফলে, জঙ্গল লাগোয়া গ্রামবাসীদের পুজোর মধ্যেও হাতি আতঙ্ক রয়েছে। তাই, হাতির হামলার আগে সতর্ক হতে গ্রামের বিভিন্ন প্রান্তে নিজেদের হাতে তৈরি ঘণ্টা দড়ি দিয়ে বেঁধে রেখেছেন। স্থানীয়ভাবে ওই ঘণ্টা 'ঠরকা' নামেই পরিচিত। সেই ঘণ্টা ঝুলিয়ে রেখেছেন গ্রামবাসীরা। ওই ঠরকা বিশালাকার হাতির শরীরে লেগে বেজে উঠবে। ফলে, গ্রামের মানুষ সতর্ক হওয়ার সুযোগ পাবেন। এর ফলে হাতির হানায় বাড়ি বা সম্পত্তি হানির ঘটনা ঘটলেও প্রাণহানির আশঙ্কা অনেকখানি কমানো সম্ভব বলে ওই গ্রামের মানুষ জানিয়েছেন। এমনিতেই খাবারের খোঁজে হাতির দল গ্রামে হানা দেবে জঙ্গল লাগোয়া গ্রামগুলিতে। পুজোর মধ্যেও হাতির আতঙ্কে আতঙ্কিত এলাকাবাসী। কারণ, হাতির দল এসে ঘর বাড়ি, চাষের জমি নষ্ট করে দেয়। ক্ষয়ক্ষতি হয় গ্রামবাসীদের। হাতির তাণ্ডবে অতিষ্ট গ্রামবাসী। তাই, হাতির হাত থেকে বাঁচতে এই অভিনব কৌশল নিয়েছেন গ্রামবাসীরা।
গ্রামবাসীরা কী বললেন?
গ্রামবাসীদের বক্তব্য, একটি আবাসিক হাতি বাঁকুড়ার (Bankura) এই এলাকায় রয়েছে। তবে, বিগত একমাস তার দেখা নেই। পুজোর দিন গুলোতে হাতির আক্রমণের আশঙ্কা রয়েছে। আমাদের নিরাপত্তার স্বার্থে গ্রাম জুড়ে আমরা 'ঠরকা' বেঁধে রেখেছি। হাতির হামলা হয়েছে জানতে পারলে আমরা সকলেই সতর্ক হয়ে যাব। এতে প্রাণে রক্ষা পাওয়া যাবে।
বন দফতরের দুবরাজপুর বিট অফিসার বৈদ্যনাথ টুডু বলেন, ইতিমধ্যে হাতির আক্রমণে ক্ষতিগ্রস্তরা সরকারি নিয়মানুযায়ী ক্ষতিপূরণ পেয়েছেন। নতুন করে আবেদনকারীরাও ক্ষতিপূরণ পাবেন। তবে, পুজোর সময় হাতির আক্রমণ ঠেকাতে গ্রামবাসীরা নিজেদের মতো উদ্যোগ নিতে পারেন। আমরাও দফতরের পক্ষ থেকে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেব।
দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের Facebook, Twitter এবং Google News পেজ।