অত্যাধুনিক মানের পরিকাঠামো প্রস্তুত, এক মাস আগে বালুরঘাটে এসে পৌঁছেছে যন্ত্রও
এমআরআই পরিষেবা চালু করা গেল না বালুরঘাট হাসপাতালে। নিজস্ব চিত্র
মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: শেষ হচ্ছে না প্রতীক্ষার। অত্যাধুনিক মানের পরিকাঠামো প্রস্তুত। এক মাস আগে বালুরঘাটে এসে পৌঁছেছে যন্ত্রও। পরিষেবা চালু হচ্ছে বলে সরকারি বিজ্ঞাপনে শহর ছয়লাপ। তবুও মুখ্যমন্ত্রীর ঘোষণার ১৬ মাস পরেও এমআরআই পরিষেবা চালু করা গেল না বালুরঘাট হাসপাতালে (Hospital)। এবার হিলিয়াম গ্যাসের অভাবে ওই পরিষেবা চালু কার্যত বিশবাঁও জলে। ফলে আজও উন্নত স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য ভিন জেলা বা কলকাতায় ছুটতে হচ্ছে দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার মানুষকে। অর্থ বরাদ্দ, অনুমোদন, যন্ত্রপাতি সহ সব কিছুই ঠিক থাকলেও কেন আজও এল না হিলিয়াম গ্যাস, তার উত্তর মেলেনি। বরং এই নিয়ে চলছে টালবাহানা। সীমান্ত জেলার স্বাস্থ্য ব্যবস্থার সঙ্গেই কেন এমন টালবাহানা চলে, উঠছে প্রশ্ন।
এর আগে এন্ডোস্কপি, ল্যাপারোস্কপির মতো বিভিন্ন যন্ত্রাংশ বালুরঘাট জেলা হাসপাতালে (Hospital) বছরের পর বছর ফেলে রাখা হয়েছিল। সেগুলি প্রতিস্থাপিতই করা হয়নি বা ব্যবহার করা হয়নি। পরে ওই যন্ত্রাংশগুলি কলকাতায় ফেরত পাঠানো হয়। অক্সিজেন সংযোগকারী সংস্থার উদাসীনতায় প্রায় দু বছর ধরে চালু না হয়ে পড়ে রয়েছে ২৪ বেডের সিসিইউ বিভাগ। এবারে বহু প্রতীক্ষিত এমআরআই পরিষেবাও চালু না হওয়ায় বাড়ছে ক্ষোভ।
এই বিষয়ে বালুরঘাটের এক বাসিন্দা তপন বাগচি বলেন, 'এমআরআইয়ের জন্য নার্সিংহোমে গেলে অনেক খরচ পড়ে যায়। যখন বালুরঘাট সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে এই মেশিনটি আসে, আমরা ভেবেছিলাম আর অসুবিধা হবে না। কিন্তু একমাস হতে চলল এখনও পরিষেবা চালু হল না। আমরা চাই, দ্রুত এই পরিষেবা চালু হোক।'
প্রসঙ্গত, সীমান্তের দক্ষিণ দিনাজপুর জেলাতে বেসরকারি চিকিৎসা পরিষেবা প্রায় নেই বললেই চলে। এই জেলার অধিকাংশ মানুষই সরকারি চিকিৎসা ব্যবস্থার ওপর নির্ভরশীল। অথচ বিভিন্ন সময় চিকিৎসক ও পরিকাঠামোর অভাব থাকায় জেলা থেকে রেফারের হার বেশি হয় বলে অভিযোগ। এছাড়াও বালুরঘাট জেলা হাসপাতাল (Hospital) নিয়ে রয়েছে বিস্তর অভিযোগ। যা নিয়ে প্রত্যন্ত এই জেলার মানুষকে ব্যাপক সমস্যায় পড়তে হয়। কারণ বাইরের রোগীদের নিয়ে যেতে যা খরচ, তা বহন করা সম্ভব হয় না৷ আজও এই জেলায় চালু নেই এমআরআই পরিষেবা। অথচ ২০২১ সালের ডিসেম্বর মাসেই রায়গঞ্জ থেকে বালুরঘাট হাসপাতালে এই পরিষেবা চালু হল বলে ঘোষণা করেন মুখ্যমুন্ত্রী। তার পরের দিনই বালুরঘাট সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালের নিচতলায় একটি ঘর বরাদ্দ করা হয়। ধীরে ধীরে পরিকাঠামো গড়া হয়। চিলার মেশিন বসানো হয়। প্রতীক্ষার অবসান ঘটিয়ে গত মার্চ মাসেই বালুরঘাটে এসে পৌঁছয় এমআরআই মেশিন। এই মেশিন আসতেই বালুরঘাট শহরের বিভিন্ন এলাকায় পোস্টার দিয়ে এই পরিষেবার বিষয়ে মানুষের সামনে প্রচার তুলে ধরা হয়েছিল। কিন্তু আজও হিলিয়াম গ্যাস না আসায় ওই পরিষেবা চালুই হয়নি। ফলে এখনও জটিল রোগ নির্ণয়ের ক্ষেত্রে রোগীকে বাইরে নিয়ে যেতে হচ্ছে। চলছে রোগী হয়রানিও।
বালুরঘাট সদর হাসপাতাল (Hospital) সুপার কৃষেন্দুবিকাশ বাগ জানান, এমআরআই মেশিন প্রতিস্থাপিত করা হয়ে গিয়েছে। কিন্ত হিলিয়াম গ্যাসের অভাবে ওই পরিষেবা চালু করা যাচ্ছে না। যে সংস্থা এই গ্যাস সরবরাহ করবে, তারা এখনও এই গ্যাস দেয়নি। কবে দেবে তাও জানা নেই। আমরাও চাইছি দ্রুত বালুরঘাট হাসপাতালে এমআরআই পরিষেবা চালু করতে।
দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের Facebook, Twitter এবং Google News পেজ।