TMC: নন্দীগ্রামে গৃহযুদ্ধ! তৃণমূল পঞ্চায়েত প্রধানের হুমকিতে ঘরছাড়া দলেরই পঞ্চায়েত সদস্য

"এই মুহূর্তে আমি নন্দীগ্রামছাড়া। যে কোনও সময় খুন হয়ে যেতে পারি", বলছেন তৃণমূলেরই পঞ্চায়েত সদস্য!
TMC_(6)
TMC_(6)

মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: বিরোধী রাজনৈতিক দলের কর্মী-সমর্থকদের ঘরছাড়া করার অভিযোগ বারবার উঠেছে রাজ্যের শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেসের বিরুদ্ধে। এবার তৃণমূল কংগ্রেসেরই পঞ্চায়েত সদস্যকে ঘরছাড়া করার অভিযোগ উঠল দলের (TMC) পঞ্চায়েত প্রধানের বিরুদ্ধে। ঘটনাটি পূর্ব মেদিনীপুর জেলার নন্দীগ্রামের। নন্দীগ্রাম এক নম্বর ব্লকের দাউদপুর গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার পঞ্চায়েত সদস্য আব্বাস বেগ। এখানকার প্রধানের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ এনে কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন তিনি এবং আরও কয়েকজন পঞ্চায়েত সদস্য (TMC)। সেই অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে থানায় এফআইআর দায়ের করেন নন্দীগ্রাম ১ ব্লকের বিডিও। শেষ পর্যন্ত দুর্নীতির দায়ে জেলে যেতে হয় দাউদপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান সেখ শামসুল ইসলামকে। প্রায় দুমাস জেলে থাকার পর ফিরে এসেছেন তিনি। কিন্তু ফেরার পর থেকেই পঞ্চায়েত সদস্য আব্বাস বেগকে নানাভাবে হুমকি দিচ্ছেন প্রধান, অভিযোগ এমনই। এমনকী প্রাণনাশের হুমকি দেওয়া হয়েছে বলেও অভিযোগ ওই পঞ্চায়েত সদস্যের। ইতিমধ্যেই নন্দীগ্রাম থানা সহ বিভিন্ন জায়গায় বিষয়টি জানিয়েছেন তৃণমূলের পঞ্চায়েত সদস্য। শেষ পর্যন্ত প্রাণ বাঁচাতে নন্দীগ্রাম ছেড়ে পালিয়েছেন তিনি।

কী বলছেন ওই পঞ্চায়েত সদস্য?

আব্বাস বেগ বলেন, ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে আমি এবং অন্য দুই পঞ্চায়েত সদস্য মহামান্য হাইকোর্টে মামলা দায়ের করেছিলাম শামসুল ইসলামের দুর্নীতির বিরুদ্ধে। তার ভিত্তিতে তদন্ত করার পর দুমাসের জেল হয় শামসুল ইসলামের। জেল খেটে বাড়ি ফেরার পরই আমাকে ঘরছাড়া করা হয়। আমি শেখ সুফিয়ান সাহেবের অনুগামী। আলোচনার ভিত্তিতে আমাকে বাড়িতে ফিরিয়ে দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু বাড়ি ফেরার পর ফের আমাকে ঘরছাড়া হতে হয়। নানা জায়গায় অভিযোগ জানিয়েও সুরাহা মেলেনি। কয়েকদিন আগে দাদা মারা যাওয়ার পর আমি বাড়ি ফিরেছিলাম। কিন্তু গত ৭ তারিখ শামসুল ইসলাম (TMC) আমাকে ফোন করে হুমকি দেয়, তোকে কেস তুলে নিতে হবে। না হলে মার্ডার করে দেব। তার অডিও ক্লিপ আমার কাছে আছে। আমি এ নিয়ে এফআইআর করি। তারপরই বাড়ি ঘিরে ধরে চলে হুমকি। আমি ধামসাবাদে এক আত্মীয়ের-বাড়িতে ছিলাম। সেখানেও আমাকে তাড়া করা হয়। ফলে এই মুহূর্তে আমি নন্দীগ্রামছাড়া। যে কোনও সময় খুন হয়ে যেতে পারি।

কী বললেন পঞ্চায়েত প্রধান?

নিজের বিরুদ্ধে ওঠা সব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন পঞ্চায়েত প্রধান সেখ শামসুল ইসলাম। তিনি বলেন, পঞ্চায়েত সদস্য আব্বাস বেগ বিভিন্ন দুর্নীতিতে যুক্ত। এলাকার বহু মানুষের কাছে চাকরি দেওয়ার নাম করে টাকা তুলেছেন। কিন্তু চাকরি হয়নি। বহুবিধ দুর্নীতির অভিযোগ থাকায় নিজেই এলাকা ছেড়ে পালিয়েছেন।

নবজোয়ারের আগে গৃহযুদ্ধ!

তৃণমূল কংগ্রেসের (TMC) পঞ্চায়েত সদস্য এবং তৃণমূলের গ্রাম প্রধানের ফোনে কথাবার্তার অডিও রেকর্ডিং ইতিমধ্যেই ভাইরাল হয়েছে সোশ্যাল মিডিয়ায়। পঞ্চায়েত ভোট এবং তৃণমূল কংগ্রেসের নবজোয়ার যাত্রার আগে জমি আন্দোলনের আঁতুড়ঘর নন্দীগ্রামে শাসকদলের ভয়ে তৃণমূল পঞ্চায়েত সদস্যেরই ঘরছাড়ার এই ঘটনায় রীতিমতো শোরগোল পড়ে গেছে পূর্ব মেদিনীপুর জেলার রাজনৈতিক মহলে।

 

দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের FacebookTwitter এবং Google News পেজ।

Share:

Facebook
Twitter
WhatsApp
LinkedIn

You may also like

+ There are no comments

Add yours

Recent Articles