BJP: নকশালবাড়ি স্টেশনে দূরপাল্লার ট্রেন দাঁড়াবে, খবরে খুশির হাওয়া
নকশালবাড়ি (নিজস্ব চিত্র)
মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: ভারতীয় রেলের মানচিত্রে বহুদিন আগেই যুক্ত হয়েছিল নকশালবাড়ি (Naxalbari) স্টেশন। কিন্তু, দূরপাল্লার ট্রেন সেখানে দাঁড়ায় না। নকশালবাড়ির মানুষকে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হয়। গাড়ি ভাড়া করে এনজেপি গিয়ে দূরপাল্লার ট্রেন ধরতে হয়। এবার সেই দুর্ভোগ মিটতে চলেছে। ২৬ মে, শুক্রবার থেকে শিয়ালদহ-আলিপুরদুয়ার কাঞ্চনকন্যা এক্সপ্রেস নকশালবাড়ি স্টেশনে দাঁড়াবে। পরীক্ষামূলকভাবে এই স্টপেজের উদ্বোধন করবেন দার্জিলিংয়ের বিজেপি সাংসদ রাজু বিস্তা। এটিই হবে নকশালবাড়িতে (Naxalbari) প্রথম দূরপাল্লার কোনও মেল ট্রেনের স্টপেজ।
ঐতিহাসিক গুরুত্ব হারিয়ে অবহেলায় নকশালবাড়ি
কৃষকের অধিকার রক্ষায় ঐতিহাসিক নকশালবাড়ি (Naxalbari) আন্দোলনের এই পীঠস্থান উন্নয়ন ও প্রসারে সেভাবে গুরুত্ব পায়নি। নকশালবাড়ি আন্দোলনের ইতিহাস বহনকারী এই জায়গার জনসংখ্যা বেড়েছে। অবস্থানের দিক থেকেও এই অঞ্চল গুরুত্বপূর্ণ। রয়েছে ভারত-নেপাল সীমান্ত। কিন্তু সেভাবে বাণিজ্যিক প্রসার ও কর্মসংস্থান হয়নি। নকশালবাড়ি আন্দোলনের অন্যতম নেতা কানু সান্যালের কমিউন ভেঙে ভেঙে পড়ছে। ঐতিহাসিক গুরুত্ব হারিয়ে নকশালবাড়ি (Naxalbari) এখন চরম অবহেলায় পড়ে রয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী হওয়ার আগে থেকেই নকশালবাড়িকে (Naxalbari) তার ঐতিহাসিক গুরুত্ব অনুযায়ী গড়ে তোলার স্বপ্ন ছিল নরেন্দ্র মোদি ও তাঁর দল বিজেপির। ২০১৪ সালের লোকসভা নির্বাচনের প্রচারে এসে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি শিলিগুড়ির কাছে মাটিগাড়ায় একটি জনসভা করেছিলেন। সেখানে নকশালবাড়ির ঐতিহাসিক গুরুত্ব উল্লেখ করে এই অঞ্চলের উন্নয়নের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন তিনি। দার্জিলিংয়ের সাংসদ হওয়ার পর বিজেপির সুরেন্দ্র সিং আলুওয়ালিয়া নকশালবাড়ির হাতিঘিসাতে একটি গ্রাম দত্তক নিয়েছিলেন। পাশাপাশি কেন্দ্রীয় প্রকল্পের টাকায় পানীয় জল, রাস্তাসহ বেশ কিছু সমস্যার সমাধান হয়। তারপর দার্জিলিংয়ের সাংসদ হন বিজেপির রাজু বিস্তা। উন্নয়নের লক্ষ্যে তিনি নকশালবাড়িতে দূরপাল্লার যাত্রীবাহী ট্রেনের স্টপেজ দেওয়ানোর ব্যাপারে উদ্যোগ নেন। সেইমতো এবার কাঞ্চনকন্যা এক্সপ্রেস নকশালবাড়িতে পরীক্ষামূলকভাবে স্টপেজ দেবে, এমনই সিদ্ধান্ত নিয়েছে রেল।
খুশির হাওয়া নকশালবাড়ির (Naxalbari) সাধারণ মানুষ থেকে শুরু করে ব্যবসায়ী মহলে। নকশালবাড়ি ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি নিখিল ঘোষ বলেন, "কলকাতার ট্রেন নকশালবাড়িতে দাঁড়ালে এই অঞ্চলে ব্যবসা-বাণিজ্যের প্রসার ঘটবে। ব্যবসায়ীরা বিশেষভাবে উপকৃত হবে। এখানকার ছোট ব্যবসায়ীদের কলকাতা থেকে জিনিস আনতে হয়। এনজেপিতে নেমে তারপরে গাড়ি করে আসতে হয়। কাঞ্চনকন্যা এখানে দাঁড়ালে আমরা সরাসরি নকশালবাড়িতে জিনিস নিয়ে নামতে পারব"।
বিজেপির নকশালবাড়ি (Naxalbari)-মাটিগাড়ার বিধায়ক আনন্দময় বর্মন বলেন, "আমরা প্রথম থেকেই গ্রামীণ এলাকার উন্নয়নে গুরুত্ব দিয়েছি। রাজ্যের তৃণমূল সরকার এখানকার কোনও উন্নয়ন করেনি। আমাদের উদ্যোগে নকশালবাড়িতে কাঞ্চনকন্যা এক্সপ্রেসের স্টপেজ পরীক্ষামূলকভাবেই শুরু হচ্ছে। আশা করি এটা স্থায়ী স্টপেজ হবে। এখানকার বিস্তীর্ণ এলাকার মানুষ, যাঁরা চিকিৎসা ও অন্যান্য কাজে কলকাতায় যান, তাঁদের আর শিলিগুড়িতে গাড়ি ভাড়া করে গিয়ে ট্রেন ধরতে হবে না। এই অঞ্চলের কাছে এটা বড় প্রাপ্তি। নানা ধরনের ব্যবসা জমজমাট হয়ে উঠবে। সবদিক দিয়েই নকশালবাড়ি (Naxalbari) আরও সমৃদ্ধ হবে"।
দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের Facebook, Twitter এবং Google News পেজ।