এই ঘটনার পিছনে তাঁর পারিবারিক সমস্যাই মূলত জড়িত রয়েছে, বললেন পুলিশ সুপার
ক্লাসরুমে বন্দুক হাতে সেই ব্যক্তি। নিজস্ব চিত্র
মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: বন্দুকবাজের তাণ্ডবের পর এখনও থমথমে পুরাতন মালদা থানার মুচিয়ার চন্দ্রমোহন হাইস্কুল (Malda School)। স্কুলে মোতায়েন করা হয়েছে পুলিশ বাহিনী। বৃহস্পতিবার সকাল থেকেই চন্দ্রমোহন হাইস্কুল এবং মুচিয়া এলাকা রয়েছে থমথমে। এদিন স্কুলে ছাত্রছাত্রীদের উপস্থিতির হার ছিল একেবারেই সামান্য। বহু অভিভাবক আতঙ্কের কারণে নিজেদের ছেলেমেয়েদের স্কুলে পাঠানোর সাহস পাননি। শিক্ষক-শিক্ষিকারা উপস্থিত থাকলেও তাঁদের একটি অফিসঘরে গুটি-শুটি মেরে বসে থাকতে দেখা গিয়েছে। স্কুল কর্তৃপক্ষের বক্তব্য, এখন তো নিরাপত্তা দেওয়া রয়েছে। এটা কতদিন থাকবে? আগামী দিনে যে এই ধরনের ঘটনা ঘটবে না, তা নিশ্চিত করে কে বলতে পারে। তাই আমরা চাই পুলিশের নজরদারি আরও বাড়ানো হোক।এদিকে বুধবার রাতে মালদার পুলিশ সুপার তাঁর নিজস্ব অফিসে একটি সাংবাদিক বৈঠক করেন। পুলিশ সুপার প্রদীপকুমার যাদব জানিয়েছেন, এই ধরনের উন্নতমানের আগ্নেয়াস্ত্র বিহার অথবা ঝাড়খণ্ড থেকেই সংগ্রহ করে থাকতে পারে অভিযুক্ত বন্দুকবাজ দেব বল্লভ। তবে এই ঘটনার পিছনে তাঁর পারিবারিক সমস্যাই মূলত জড়িত রয়েছে। তা বলে স্কুলে ঢুকে এমন ঘটনা ঘটাবে, এটা পরিকল্পনা মাফিক। আমাদের পুলিশ অফিসার ও কর্মীরা দারুণ কাজ করেছে। যেভাবে চন্দ্রমোহন হাইস্কুলের ক্লাস সেভেনের ছাত্র-ছাত্রীদের সুরক্ষিত রেখে পুলিশ অফিসাররা ওই বন্দুকবাজকে ধরেছে, তা সত্যি প্রশংসনীয়।
কার হাত ঘুরে আগ্নেয়াস্ত্র এল, তদন্তে পুলিশ
পুলিশ সুপার সাংবাদিক বৈঠকে আরও জানিয়েছেন, এই ধরনের আগ্নেয়াস্ত্র কার মাধ্যমে অভিযুক্ত দেব বল্লভ আমদানি করল, সে ব্যাপারেও তদন্ত শুরু করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার ধৃতকে মালদা আদালতের মাধ্যমে ১৪ দিনের পুলিশি হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের আবেদন জানানো হবে। ধৃতকে জিজ্ঞাসাবাদ করলেই হয়তো অনেক তথ্য বেরিয়ে আসতে পারে। পুলিশ সুপার বলেন , ইতিমধ্যে জেলা শিক্ষা দফতর, জেলাশাসক নীতিন সিংহানিয়া সহ প্রশাসনের পদস্থ কর্তাদের নিয়ে একটি বৈঠকে বসার কথা রয়েছে। যেখানে প্রতিটি স্কুলে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করতে কী ধরনের পদক্ষেপ নেওয়া প্রয়োজন, সেসব নিয়েই মূলত আলোচনা করা হবে। স্কুল (Malda School) চলাকালীন গেট বন্ধ রাখা, বিভিন্ন স্কুলে সিসি ক্যামেরা বসানো, প্রয়োজনে স্কুলে নিরাপত্তার যাতে ব্যবস্থা করা যায়, সে ব্যাপারে আলোচনা করা হবে।
এদিকে পুলিশের একটি সূত্র থেকে জানা গিয়েছে, গত দেড় বছর আগে বন্দুক হাতে প্রশাসনের কর্তাদের সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে হুমকি দিয়ে ভাইরাল হয়েছিল অভিযুক্ত এই দেব বল্লভ। সেই সময় পুলিশ তাকে গ্রেফতার করে। উদ্ধার করা হয় সেই আগ্নেয়াস্ত্রটি। কিন্তু তারপরে আবারও নতুন করে উন্নত মানের নাইনএমএম পিস্তল এবং দুটি ম্যাগাজিন অভিযুক্ত কোথা থেকে জোগাড় করল? এমনকী পেট্রোল বোমা বানাতে শিখল কীভাবে, এসবের পিছনে কোনও জঙ্গি সংগঠনের মদত রয়েছে কিনা, সে ব্যাপারেও পুলিশ নিশ্চিত করে কিছু জানাতে পারেনি। কিন্তু পুরো বিষয়টি (Malda School) নিয়ে তদন্তের কথা জানিয়েছেন পুলিশ সুপার প্রদীপকুমার যাদব।
দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের Facebook, Twitter এবং Google News পেজ।