রাজ্যের ভূমিকায় ক্ষুব্ধ মানবাধিকার কমিশন! দিতে হবে ক্ষতিপূরণ
প্রতীকী চিত্র
মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: রাজ্যের ভূমিকায় বরাবরই ক্ষুব্ধ জাতীয় মানবাধিকার কমিশন। এবার একটি নির্মম ঘটনা সামনে এল। যেখানে রাজ্যের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলে দিয়েছে কমিশন। মালদা জেলার বামনগোলা থানার পাকুয়াহাটে দুই মহিলাকে নির্যাতনের ঘটনায় রাজ্য সরকারের ভূমিকায় ক্ষুব্ধ জাতীয় মানবাধিকার কমিশন। ৬ সপ্তাহের মধ্যে দুই নির্যাতিতাকে তিন লক্ষ টাকা করে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে জাতীয় মানবাধিকার কমিশন। অন্যদিকে পুলিশকে জমা দিতে বলা হয়েছে অ্যাকশন টেকেন রিপোর্ট।
প্রসঙ্গত ২০২৩ সালের ২২ জুলাই সামাজিক মাধ্যমে একটি ভিডিও ক্লিপ ভাইরাল হয়ে যায়। ওই ভিডিওর ক্লিপের সামনে এনেছিলেন সামাজিক মাধ্যমে জানিয়েছিলেন বিজেপির আইটি সেল এর প্রধান অমিত মালব্য ভিডিও ক্লিপে দেখা যায় বহু মানুষের ভিড় দুই মহিলাকে বেধড়ক মারধর করে ক্ষিপ্ত জনতা। তাদের ব্যাপক জুতোপেটা করা হয়। চোর অপবাদ দিয়ে ওই মহিলাদের কার্যত বিবস্ত্র করে মারধর করা হয়েছিল। পুলিশের বিরুদ্ধে নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগ এনেছিলেন দুই মহিলা। অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নিয়ে উল্টে পুলিশ দুই মহিলার বিরুদ্ধে মামলা রুজু করে পুলিশ। বিষয়টি প্রকাশ্যে আসতেই রাজ্যে মহিলাদের সুরক্ষা নিয়ে ফের প্রশ্ন উঠে যায়।এই ঘটনার প্রেক্ষিতে ১৮ জুনের মধ্যে দুই নির্যাতিতাকে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে কমিশন। নির্দেশ কার্যকর না হলে পদক্ষেপের হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়েছে। এক্ষেত্রে জানিয়ে রাখা দরকার এর আগেও কমিশন ক্ষতিপূরণের নির্দেশ দিয়েছিল। কিন্তু রাজ্য সেই নির্দেশ মানে নি। তাই শেষ বারের মতো নিগৃহীতাদের তিন লক্ষ টাকা করে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এ বিষয়ে আইনজীবী অমিতাভ মৈত্র বলেন, “ক্ষতিপূরণ তো দূরের কথা রাজ্য সরকার সেই নির্দেশের কোন উত্তর দেওয়ার প্রয়োজনীয়তা বোধ করেনি। কমিশনকে বুড়ো আঙ্গুল দেখিয়েছে রাজ্য সরকার। সেই কারণে আমরা পুনরায় জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের মধ্যে কাছে দরবার করেছি। ১৮ জুনের মধ্যে ক্ষতিপূরণের টাকা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। না হলে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে রাজ্যের মুখ্য সচিবকে।
এক্ষেত্রে প্রশ্ন উঠছে কমিশনের নির্দেশ যদি শেষ পর্যন্ত রাজ্য সরকার না মানে তাহলে কি পথ খোলা থাকছে নিগৃহীতা কিংবা কমিশনের কাছে। এক্ষেত্রে দুপক্ষই আদালতের দ্বারস্থ হতে পারে। সে ক্ষেত্রে আরও মুখ পুড়বে করবে রাজ্য সরকারের। এ বিষয়ে রাজ্য তৃণমূল কংগ্রেসের সহ-সভাপতি কৃষ্ণ নারায়ণ চৌধুরী বলেন, “সরকার মহিলাদের পাশে আছে। মানবাধিকার কমিশনের নির্দেশ পালন করবে পুলিশ। অন্যদিকে রাজ্য সরকারকে ক্ষতিপূরণের শেষ নির্দেশ দেওয়া প্রসঙ্গে শুরু হয়েছে শাসকবিরোধী রাজনৈতিক টানাপোড়েন।
আরও পড়ুন: মুখ্যমন্ত্রীর প্রতিশ্রুতিই সার, রেল দুর্ঘটনায় মৃতদের পরিবারে আজও মেলেনি চাকরি
প্রসঙ্গত এ রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মহিলা। তিনি মহিলাদের জন্য ভাবেন বলে রাজনৈতিক মঞ্চ থেকে বারংবার দাবি করেছেন। অথচ দেখা গিয়েছে অতীতে মহিলাদের হওয়া উপর হওয়া অপরাধের ক্ষেত্রে অনেক নিরিখেই এই রাজ্য দেশের আরো বহু রাজ্যকে পিছনে ঠেলে এগিয়ে গিয়েছে। বিজেপি নেতা শুভেন্দু অধিকারী বলেন, “মহিলা মুখ্যমন্ত্রীর আমলে এই রাজ্যের সবচেয়ে বেশি নির্যাতিতা হয়েছে মহিলারা। সন্দেশখালি তার জ্বলন্ত উদাহরণ। রাজ্য সরকার মহিলাদের জন্য সুরক্ষা – নিরাপত্তা দিতে পারছে না। লক্ষীর ভান্ডারের নামে ১০০০ টাকা ভাতা দিয়ে মহিলাদের মুখ বন্ধ করার চেষ্টা করছে এই সরকার।”
দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের Whatsapp, Facebook, Twitter, Telegram এবং Google News পেজ।