মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: ভাঙড়ে অশান্তি যেন কিছুতেই থামছে না। জুন মাসে মনোনয়ন পর্ব (Panchayat Vote) শুরু হতেই মুড়ি মুড়কির মতো বোমা পড়তে থাকে। ঝরে বেশ কতগুলি তাজা প্রাণ। ভোটের দিনও অগ্নিগর্ভ হয়ে ওঠে ভাঙড়ের পরিস্থিতি। আবার ভোট গণনার দিনও বদলায়নি চিত্র। সপ্তাহখানেক আগে ভোটের ফলাফলের দিন বোমা-গুলির লড়াইয়ে উত্তপ্ত হয়েছিল ভাঙড়। সেই ঘটনার রেশ কাটার আগেই আবারও গুলি চলল ভাঙড়ে। ব্যাপক বোমাবাজিতে আতঙ্কিত সাধারণ মানুষ।
উত্তপ্ত ভাঙড়
মঙ্গলবার রাত দশটা নাগাদ ঘটনাটি ঘটে বিজয়গঞ্জ বাজার সংলগ্ন পানাপুকুর গ্রামে। স্থানীয় সূত্রে খবর, চালতাবেড়িয়া গ্রামসভার পরাজিত তৃণমূল প্রার্থী হাতেম মোল্লাকে লক্ষ্য করে গুলি চালানো হয়। পানাপুকুরের বাসিন্দা হাতেম যখন বাড়ি ফিরছিলেন তখন তাঁকে লক্ষ্য করে গুলি চলে। হাতেমের ডান কান ছুঁয়ে গুলি বেরিয়ে যায়। কোনও রকমে প্রাণে বাঁচেন হাতেম। একইসঙ্গে ওই এলাকার পঞ্চায়েত সমিতিতে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়ী এক তৃণমূল প্রার্থীর (Panchayat Vote)র বাড়ি লক্ষ্য করেও ব্যাপক বোমাবাজি হয় বলে অভিযোগ। দুটি ঘটনাতেই নাম জড়িয়েছে আইএসএফ-এর। হাতেমকে উদ্ধার করে জিরেনগাছা গ্রামীণ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে বলে খবর। ঘটনার খবর পেয়েই কাশীপুর থানার বিশাল পুলিশ বাহিনী ঘটনাস্থলে যায়। যদিও এই ঘটনার দায় অস্বীকার করেছেন আইএসএফ নেতারা। রাজ্যে লাগামছাড়া সন্ত্রাসের অভিযোগ তৃণমূলের বিরুদ্ধে উঠলেও ভাঙড়ে আবার উলট পুরাণ! এখানে খোদ শাসকদল অভিযোগ করছে আইএসএফ-এর বিরুদ্ধে। স্থানীয় তৃণমূল নেতা জহিরুল মোল্লা বলেন, ‘‘হাতেমের কান ছুঁয়ে গুলি বেরিয়ে গিয়েছে, তার অবস্থা আশঙ্কাজনক।’’ আইএসএফ-এর বিরুদ্ধে সন্ত্রাসের অভিযোগও তোলেন জহিরুল।
ভাঙড় নিয়ে কী বলছেন নওশাদ?
অন্যদিকে, মঙ্গলবার বারুইপুর সংশোধনাগার থেকে জামিনে মুক্ত ১২ জন আইএসএফ সমর্থককে স্বাগত জানাতে যান নওশাদ সিদ্দিকি। সেখানে সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে নওশাদ সিদ্দিকি বলেন, ‘‘১৪৪-এর অজুহাতে আমাকে আটকানোর চেষ্টা করা হয়েছে। আমাকে আটকে রাখতে পারবে না। আমি ইতিমধ্যেই আদালতের দ্বারস্থ হয়েছি। আদালতের মাধ্যমে আমি সেখানে ছাড়পত্র পাব।’’ নওশাদের কথায়, ‘‘আমায় ১৪৪ ধারার কথা বলে যে ভাবে আটকাচ্ছে (পুলিশ), তাতে আমি রাজ্যপাল, মুখ্যমন্ত্রী, স্পিকার স্যার (বিধানসভার স্পিকার)—সমস্ত দফতরকে জানিয়েছি। এর পর যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামো মেনে আমি কেন্দ্রের দ্বারস্থ হব। আমার লক্ষ্য, ভাঙড়ে শান্তিপ্রতিষ্ঠা করা।’’ ভাঙড়ের পরিস্থিতি সম্পর্কে বলতে গিয়ে নওশাদ বলেন,‘‘ভাঙড়ের মানুষকে যে ভাবে অশান্তির মধ্যে রাখার চেষ্টা হচ্ছে সেটাকে প্রতিহত করে, সুস্থ স্বাভাবিক জীবনযাপন যাতে ভাঙড়বাসী করতে পারেন সেটা ব্যবস্থা করব আমি। যারা শান্ত ভাঙড়বাসীকে অশান্তির মধ্যে রেখেছিল, আতঙ্কের মধ্যে রেখেছিল, যারা ভাঙড়কে রাজনৈতিক উত্তাপের (Panchayat Vote) শিরোনামে নিয়ে গেল, সেই সমস্ত রাজনীতির কারবারীদের আমি গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় ঘুমোতে দেব না।’’
দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের Facebook, Twitter এবং Google News পেজ।
+ There are no comments
Add yours