মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: বাবার হাত ধরেই কেরালায় কাজে যাচ্ছিলেন কাটোয়ার করুই গ্রামের উনিশ বছরের ছটু সর্দার। তাঁদের সঙ্গে আরও সাতজন ছিলেন। করমণ্ডল এক্সপ্রেসের (Coromandel Accident) একই কামরায় সকলেই ছিলেন। ভয়াবহ ট্রেন দুর্ঘটনায় সব কিছু তছনছ করে দেয়। চোখের সামনে ছটুকে রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখেন দুর্ঘটনায় জখম হওয়া বাবা সুখলাল সর্দার। দুর্ঘটনার পর পরিবারের লোকজন তাঁদের সঙ্গে যোগযোগ করেন। সুখলাল সর্দার ফোন করে ছেলের মৃত্যুর খবর দেন। এছাড়া কড়ুই গ্রামের আরও সাতজন দুর্ঘটনার পর থেকে নিখোঁজ রয়েছেন। নির্মাণ শ্রমিকের কাজ করতে দল বেঁধে তাঁরা কেরালায় কাজে যাচ্ছিলেন। মৃত ছটু সর্দারের কাকা দিলু সর্দার বলেন, "এভাবে সব শেষ হয়ে যাবে ভাবতে পারিনি। বাবার সঙ্গে কত খোশমেজাজে গল্প করতে করতে গেল ভাইপো। এবার তার নিথর দেহ বাড়ি ফিরবে। ভাবতেই পারছি না।" পাশের কৈথন গ্রামের সাদ্দাম সেখ নামে এক যুবকও দুর্ঘটনার পর থেকে নিখোঁজ। চরম উদ্বেগের মধ্যে রয়েছেন পরিবারের লোকজন।
স্ত্রীর সঙ্গে ভিডিওকলে শেষ কথা হয় সফিকের
ট্রেন ছাড়়ার পর শুক্রবার বিকেলের দিকে স্ত্রীর সঙ্গে ভিডিও কল করে কথা বলেছিলেন পূর্ব বর্ধমান জেলার বর্ধমান-২ ব্লকের বড়শুল কুমিরখোলার সফিক কাজি। সেটাই ছিল শেষ কথা। সন্ধ্যা নামতেই খবর দেখে জানতে পারেন করমণ্ডল এক্সপ্রেসে দুর্ঘটনা (Coromandel Accident) ঘটেছে। পাগলের মতো পরিবারের লোকজন সফিকের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। কিন্তু, কোনওভাবেই তাঁর আর হদিশ মেলেনি। শনিবার তাঁর মৃত্যুর খবর আসে বাড়িতে।
কী বললেন সফিকের বাবা?
ওড়িশার বালেশ্বরে গিয়ে সফিকের মৃতদেহ সনাক্ত করেন তাঁর আত্মীয়-স্বজনেরা। শনিবার তাঁর মৃত্যুর খবর পৌঁছাতেই কান্নায় ভেঙে পড়েন পরিবারের লোকজন। শোকের ছায়া নেমে আসে গ্রামে। পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, মাথায় আঘাত লেগেই মৃত্যু হয়েছে তাঁর। বাড়িতে বাবা, মা, স্ত্রী সহ পাঁচ বছরের সন্তান রয়েছে। সফিকের বাবা উজির কাজি বলেন, ট্রেন দুর্ঘটনার (Coromandel Accident) পর থেকে ছেলের সঙ্গে আর যোগাযোগ করতে পারিনি। এদিন ছেলের মৃত্যুর খবর এল বাড়িতে। ওর রোজগারে সংসার চলত। এখন কী করে সংসার চলবে বুঝতে পারছি না।
দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের Facebook, Twitter এবং Google News পেজ।
+ There are no comments
Add yours