DVC: পুজোর আনন্দ ম্লান! ভাসছে দক্ষিণবঙ্গের সাত জেলা, কী করছে রাজ্য সরকার?

পুজোর আগেই দক্ষিণবঙ্গের সাত জেলার বহু এলাকা প্লাবিত, দুর্ভোগে বাসিন্দারা
DVC_(2)
DVC_(2)

মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: রবিবার থেকেই ডিভিসি-র (DVC) বিভিন্ন জলাধার থেকে জল ছাড়া শুরু হয়েছিল। গত দুদিন ধরে সেই জল ছাড়ার পরিমাণ ক্রমশ বেড়েছে। আর তার দোসর নাগাড়ে বৃষ্টি। বৃহস্পতিবার পর্যন্ত কলকাতা-সহ দক্ষিণবঙ্গে এই বৃষ্টি চলবে বলে জানাচ্ছে আবহাওয়া দফতর। ফলে, পুজোর আগেই বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে বাঁকুড়া, পুরুলিয়া, দুই বর্ধমান, হাওড়া, দুই মেদিনীপুর জেলায়। ফলে, দক্ষিণবঙ্গের এই সাতটি জেলার মানুষ চরম আতঙ্কে রয়েছেন। পুজোর আনন্দ একেবারে ম্নান হয়ে গিয়েছে। পুজোর মণ্ডপ তৈরির পরিবর্তে নিরাপদ আশ্রয়ে সরানো হচ্ছে প্লাবিত এলাকার বাসিন্দাদের। রাজ্য সরকার ও প্রশাসনের ভূমিকা নিয়ে উঠছে প্রশ্ন।

জলাধারগুলি থেকে কত পরিমাণ জলা ছাড়া হল? (DVC)

দীর্ঘদিন রাজ্যে তৃণমূল ক্ষমতায় থাকার পরেও পশ্চিম মেদিনীপুরের ঘাটালে নিকাশি ব্যবস্থার স্থানীয় কোনও সমাধান করতে পারল না। ফলে, ডিভিসি-র (DVC) মাইথন এবং পাঞ্চেত জলাধারের ছাড়া জল আর বৃষ্টির কারণে ঘাটাল মহকুমার অনেক জায়গায় জল ঢুকে গিয়েছে। এমনিতেই পুজোর কারণে পাড়ায় পাড়ায় সব প্রস্তুতি চলছিল। এখন বন্যা হওয়ার আশঙ্কায় রয়েছেন এলাকাবাসী। অতিবর্ষণে সবং ব্লকের ছয়-সাতটি অঞ্চল জলমগ্ন হয়ে পড়েছে। ১১ নম্বর মহাড় অঞ্চলের কানুচক বুথে বেশ কয়েক'টি পরিবারকে তুলে এনে একটি স্কুলের ত্রাণ শিবিরে করে রাখা হয়েছে। একই অবস্থা দক্ষিণ ২৪ পরগনায়। বকখালি, বালিয়াড়া-সহ গঙ্গাসাগরের সমুদ্র সৈকতে বেড়াতে আসা পর্যটকদের সমুদ্রে নামতে দেওয়া হয়নি। মঙ্গলবার বিকেল থেকে অবশ্য ডিভিসির জল ছাড়ার পরিমাণ কমিয়েছে। মাইথন জলাধার থেকে ২০ হাজার কিউসেক এবং পঞ্চায়েত জলাধার থেকে ৫৫ হাজার কিউসেক জল ছাড়া হয়েছে। সব মিলিয়ে ৭৫ হাজার কিউসেক জল ছাড়া হয়েছে।

পুজোর আগে বন্যার আশঙ্কা

পূর্ব মেদিনীপুরের একাধিক জায়গায় আবার বন্যার আতঙ্ক শুরু হয়েছে। ডিভিসির (DVC) ছাড়া জলে পশ্চিম মেদিনীপুরের একাধিক এলাকা প্লাবিত। বিভিন্ন জলাধার থেকে জল ছাড়ায় কেলেঘাই, চণ্ডীয়া, হলদি, রূপনারায়ণ-সহ নদী তীরবর্তী এলাকাগুলিতে আতঙ্ক ছড়িয়েছে। পূর্ব মেদিনীপুরের ময়না, ভগবানপুর, পাঁশকুড়া, কোলাঘাট, তমলুক, খেজুরি-সহ বিস্তীর্ণ এলাকায় জমা জলের সমস্যা রয়েছে। ঝাড়খণ্ডের গালুডি ব্যারেজে জল ছাড়়ার কারণে ঝাড়গ্রাম জেলার গোপীবল্লভপুর-১ এবং ২ ব্লক, সাঁকরাইল এবং নয়াগ্রাম ব্লক প্রশাসন নদী তীরবর্তী এলাকার বাসিন্দাদের পুজোর আনন্দ উধাও হয়ে গিয়েছে। বন্যার আতঙ্ক তাড়া করে বেড়াচ্ছে। অনেকে ঘরের চারিদিকে জল থাকায় বের হতে পারছেন না। চরম নাকাল হতে হচ্ছে বাসিন্দাদের।

হাওড়ার কোন কোন এলাকা প্লাবিত হওয়ার আশঙ্কা?

হাওড়়ার আমতা এবং উদয়নারায়ণপুরের পরিস্থিতি ইতিমধ্যেই আশঙ্কাজনক। দফায় দফায় বৃষ্টিতে মুণ্ডেশ্বরী, রূপনারায়ণ এবং দামোদরের জল বাড়ছে। আমতা-২ ব্লকের ভাটোরা এবং ঘোড়াবেড়িয়া চিতনান গ্রাম পঞ্চায়েতের বেশ কিছু গ্রামের মানুষজন বন্যার আতঙ্কে রয়েছেন। এলাকায় জল ঢুকতে শুরু করেছে। দামোদর নদের জলস্তর বেড়ে যাওয়ায় উদয়নারায়ণপুরের হরালি, দাসপুর, সীতাপুর, সুলতানপুর, গজা, কুড়চি, হরিহরপুর, হোদল, রামপুর বালিচক, শিবপুর, বিনোদবাটি, জঙ্গলপাড়া, শিবানীপুর, পাঁচারুল-সহ বিভিন্ন গ্রাম প্লাবিত হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।

সেতুর উপর দিয়ে বইয়ে জল

ফুঁসছে বাঁকুড়ার দ্বারকেশ্বর। এই নদের উপর বাঁকুড়া শহর লাগোয়া মীনাপুর ও ভাদুল সেতুর উপর প্রায় চার ফুট উচ্চতা দিয়ে প্রবল বেগে জল বইছে। সেতুর উপর দিয়ে জল বইতে থাকায় মীনাপুর ও ভাদুল সেতু দিয়ে যাতায়াত বন্ধ রয়েছে। শুধুমাত্র বাঁকুড়া জেলার ৯৭০ জন বাসিন্দাকে নিরাপদ আশ্রয়ে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে বলে প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে। বীরভূমের কাদরকুলা থেকে বাগসীনা যাওয়ার রাস্তা জলের তলায় গিয়েছে। আরও জল বৃদ্ধি হলে কীর্ণাহারের সঙ্গে লাভপুরের প্রায় ১৫টি গ্রামের  যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যাবে।

 

দেশের খবরদশের খবরসব খবরসবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের FacebookTwitter এবং Google News পেজ।

Share:

Facebook
Twitter
WhatsApp
LinkedIn

You may also like

+ There are no comments

Add yours

Recent Articles