মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: এ যেন আরেকটা সন্দেশখালি (Sandeshkhali)! এবার বীরভূমে (Birbhum) বউ সুন্দরী না হলে রাজ্য সরকারের প্রকল্প (Govt Schemes) থেকে বঞ্চিত করার অভিযোগ তুললেন গ্রামবাসীরা। তাই নির্বাচনী প্রচারে বিক্ষোভের মুখে পড়লেন বীরভূমের তৃণমূল প্রার্থী (TMC Candidate) শতাব্দী রায় (Satabdi Ray)। তিনবারের এই তৃণমূল সাংসদের গাড়ি থামিয়ে বিক্ষোভ দেখালেন স্থানীয় জনতা। কোথাও পানীয় জল নেই, কোথাও রাস্তা খারাপ, আবার কোথাও তৃণমূল না করায় মেলেনি বাড়িও। ভোটের আগে ফের আরেকবার তোপের মুখে শতাব্দী।
বীরভূমের কোথায় তোপের মুখে শতাব্দী (Birbhum)?
কেন বিক্ষোভ করছেন? জিজ্ঞেস করায় গ্রামবাসীদের যা অভিযোগ, তা শুনলে যে কোনও সুস্থ স্বাভাবিক মানুষের রক্ত মাথায় উঠে যাবে। “বউ সুন্দরী হলে তবেই মিলবে সরকারি প্রকল্পের টাকা।” শতাব্দীকে সামনে পেয়ে এমনই অভিযোগ করলেন মোহাম্মদ বাজার (Birbhum) ব্লকের লাউজোড়া গ্রামের বাসিন্দারা। জানা গিয়েছে, এদিন এই এলাকায় প্রচারে এসেছিলেন বীরভূমের তৃণমূল কংগ্রেস সাংসদ শতাব্দী রায়। সাংসদকে হাতের নাগালে পেয়ে চাঞ্চল্যকর অভিযোগ ওঠে। সেই সঙ্গে এলাকার এক মহিলা বলেন, “যাঁদের বউ দেখতে ভালো তাঁরা সরকারি টাকা পাচ্ছে। আর যাঁদের বউ দেখতে ভালো নয়, তাঁদের সরকারি টাকা দেওয়া হচ্ছে না।” গ্রামবাসীদের এই ভয়ঙ্কর অভিযোগ শুনে শতাব্দী রায়ের মুখের চিত্রটা বদলে যায়। এমনকী স্থানীয় অপর আরেক মহিলা অভিযোগ করে বলেন, “সাংসদকে ভোটের পর আর দেখা যায় না। তাই আগে প্রকল্পের সুবিধা, তারপর ভোট।”
কী বললেন শতাব্দী?
বীরভূমে (Birbhum) নির্বাচনী প্রচারে বিক্ষোভের মুখে পড়ে শতাব্দী রায় বলেন, “যদি কেউ বলে ভোট দেব টাকা নেব, তাহলে এই মন্তব্যের আমি কী আর বলব? কয়েকজন গ্রামবাসী কোনও প্রকল্প পায়নি শুনেছি। স্থানীয় পঞ্চায়েত থেকে সেগুলো যাতে তাঁরা পান তার ব্যবস্থা করব।” অভিযোগ আরও উঠেছে যারা তৃণমূলের সঙ্গে যুক্ত তারাই টাকা পাচ্ছে। অথচ সাধারণ মানুষ যারা কোনও দলের সঙ্গে সরাসরি যুক্ত নয় তারা সুবিধা পাচ্ছে না। অনেকে আবার তৃণমূলে যোগ না দেওয়ায় কেন্দ্র সরকারের প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনার ঘরবাড়ি ও পায়নি বলে অভিযোগও উঠছে।
আরও পড়ুনঃ ভূপতিনগরকাণ্ডে এনআইএ-র ওপর আক্রমণে গ্রেফতারি নেই, চাপে পড়েই কি পুলিশ অফিসার বদল?
বিজেপি প্রতিক্রিয়া
সম্প্রতি সন্দেশখালিতে মহিলাদের উপর নির্যাতনের অভিযোগে সারা দেশে রাজনৈতিক ঝড় উঠেছিল। শ্লীলতাহানি ও ধর্ষণের অভিযোগ ছিল প্রচুর। এছাড়াও রাত্রিবেলা পিঠে বানানোর নামে মহিলাদের তুলে নিয়ে রাতভর চলত তৃণমূল পার্টি অফিসে যৌন নির্যাতন। শাহজাহানেরা চাষের জমিতে নোনা জল ঢুকিয়ে ভেড়ি বানিয়ে করত জমি দখল। সেই পথেই কি তাহলে বীরভূম পা বাড়িয়েছে? শাসক দলের তৃণমূল নেতাদের আচরণ ঘিরে মানুষের যা অভিযোগ, তাতে এই প্রশ্ন এখন ঘোরাফেরা করছে সর্বত্র। তৃণমূল সন্দেশখালি ইস্যুতে আগে থেকেই কোণঠাসা। তবে নির্বাচনের প্রাক্কালে শাসক দলের নেতার চোখে চোখ রেখে অভিযোগ তুলে ধরার ঘটনা খুবই বিরল। তৃণমূলের বিরুদ্ধে ওঠা এই মারাত্মক অভিযোগ নিয়ে সরব হয়েছে বিজেপি। বিজেপি সাংসদ শমীক ভট্টাচার্য বলেছেন, “বাংলার প্রতিটি কোণে কোণে এরকম সন্দেশখালি তৈরি হয়েছে। তার মধ্যে বীরভূম (Birbhum) জেলাও রয়েছে। মানুষের এখন দেওয়ালে পিঠ ঠেকে গিয়েছে। তাই এখন তাঁরা আর ভয় পাচ্ছেন না। নির্বাচনে তৃণমূলকে মানুষ বয়কট করবেন।”
দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের Whatsapp, Facebook, Twitter, Telegram এবং Google News পেজ।
+ There are no comments
Add yours