মহারাষ্ট্রের পর বাংলা কি ভাবছে বিজেপি?
মহারাষ্ট্রের পর কি এবার পশ্চিমবাংলায় হাত? বিজেপি কর্ম সমিতির বৈঠকের আলোচনা থেকে এমনই বেশ কিছু জটিল প্রশ্ন উঠে আসছে। ঠিক কি কারণে এই জিজ্ঞাসা?
প্রধানত দুটি প্রস্তাব নিয়ে আলোচনা হয় বিজেপির জাতীয় কর্মসমিতির বৈঠকে। রাজনৈতিক প্রস্তাব ও অর্থনৈতিক প্রস্তাব নিয়ে। রাজনৈতিক প্রস্তাব পেশ করার সময়েই গুরুত্বপূর্ণ মন্তব্য করেন দেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। তিনি বলেন, মহারাষ্ট্রের মত খুব শীঘ্রই তেলেঙ্গানা বাংলাও পারিবারিক শাসন থেকে মুক্ত হবে।
তেলেঙ্গানায় আগামি বছর নির্বাচন। কিন্তু পশ্চিমবঙ্গে বিধানসভা নির্বাচন হওয়ার কথা ২০২৬এ। রাজ্য সফরে এসে বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি জেপি নাড্ডাও বলেছিলেন গণতান্ত্রিক পথেই রাজ্যে ক্ষমতা দখল করবে বিজেপি। সেখানেই চলে আসছে প্রশ্ন তাহলে কি মহারাষ্ট্রের পথেই বিদ্রোহী তৃণমূল বিধায়করা যোগাযোগ রাখছে বিজেপির সঙ্গে?
কর্মসমিতির সমাপ্তি ভাষণে দেশের প্রধানমন্ত্রী কোন বিরোধী দলের নাম না করেই নিশানা করেন কংগ্রেসকে। বলেন কংগ্রেসের রাজনীতি হল পরিবারতন্ত্রে সীমাবদ্ধ। কংগ্রেস ভেঙে আসা দলগুলোর মধ্যেও একই পরিবারতন্ত্রের সংস্কৃতি বইছে। দেশের মানুষ এই পরিবারতন্ত্রের ওপর বীতশ্রদ্ধ। তারা পরিবারতন্ত্রের বদল চায়। প্রধানমন্ত্রী বলেন, শক্তিশালী ঐক্যবদ্ধ ভারত গড়ার পক্ষে এই পরিবারতন্ত্রের রাজনীতি বিপজ্জনক।
সরকারের ৮ বছর পূর্তি ভাষণেও মোদি-নাড্ডা পরিবারতন্ত্রের রাজনীতির কথা বলে এক ব্র্যাকেটে নিয়ে রেখে ছিলেন পশ্চিমবঙ্গ তেলেঙ্গানা বিহারসহ একাধিক রাজ্যের নাম। মোদির ইঙ্গিতও কি সেই দিকেই?
কর্মসমিতির সমাপ্তি ভাষণে যেমন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি, তেমনই উদ্বোধনী ভাষণে সংগঠন নিয়ে বলতে গিয়েও বিজেপি সর্বভারতীয় সভাপতি জেপি নাড্ডাও উল্লেখ করেন পশ্চিমবঙ্গের ভোট পরবর্তী হিংসার কথা। কিভাবে রাজ্যে নির্বাচন ঘোষণার পর ও নির্বাচন পরবর্তী সময়ে বিজেপি কর্মীদের ওপর তৃণমুলের হিংসা নেমে এসেছে। শতাধিক কর্মীর মৃত্যু, অসংখ্য ঘরছাড়া। জ্বালিয়ে দেওয়া হয়েছে বাড়ি-ঘর পার্টি অফিস। পুলিশের সামনেই চলেছে অবাধ ভাঙচুর।
অর্থনৈতিক প্রস্তাব পেশের সময়েও বার বার উঠে এসেছে, পশ্চিমবঙ্গে কেন্দ্রীয় সরকারি প্রকল্পের নাম বদল। প্রকল্প ব্যয়ে অসঙ্গতি, তৃণমূল নেতাদের তোলাবাজি, কাটমানি নেওয়ার প্রসঙ্গ। বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি জেপি নাড্ডা, দেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির ভাষণে বারবার পশ্চিমবঙ্গের নাম উঠে আসা। রাজ্য সরকার পরিচালনায় তৃণমূল নেতাদের দুর্নীতি, রাজ্যে গণতান্ত্রিক ব্যবস্থার অপব্যবহার,পরিবারতন্ত্র কায়েম বিভিন্ন প্রসঙ্গে উদাহরণ হিসেবে এসেছে পশ্চিমবঙ্গের নাম। রাজনৈতিক মহলের প্রশ্ন, তাহলে কি মহারাষ্ট্রের পর কি এবার বিজেপির টার্গেট পশ্চিমবঙ্গ?