ভয়াবহ বন্যায় বিপর্যস্ত আসাম
ASSAM FLOOD
বন্যায় ভাসছে গোটা আসাম। ভয়ঙ্কর অবস্থা শিলচরে। সব বড় রাস্তাই সেখানে জলের তলায়। বন্ধ যান চলাচল। একমাত্র উপায় নৌকা। একসময় যেখানে সরগরম থাকতো বাজার চত্বর, এখন সেখানেই বন্ধ দোকানের পর দোকান।
আসামে প্রায় ৫৫ লক্ষ মানুষ আক্রান্ত এই বন্যায়। বিপর্যস্ত অবস্থা ৩২টি জেলায়। ভেসে গেছে জমির পর জমি। ধস নেমে প্রাণ কেড়েছে বহু মানুষের। গত সাতদিনে ৪৪ জনের মৃত্যুর খবর এসেছে। প্রায় আড়াই লক্ষ মানুষ ৬৩১টি ত্রাণ শিবিরে আশ্রয় নিতে বাধ্য হয়েছেন। পরিস্থিতি মোকাবিলায় আসরে নেমেছে বিজেপি সরকার। আসামের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্বশর্মা জানিয়েছেন, বন্যা বিধ্বস্ত এলাকায় আকাশ পথে খাবার বিলি হচ্ছে। নেওয়া হচ্ছে ক্ষয়ক্ষতির হিসাব। সপ্তাহের শুরুতেই নলবারি ও কামরূপের বন্যা বিধ্বস্ত এলাকায় বিভিন্ন ত্রাণ শিবির ঘুরে দেখেন মুখ্যমন্ত্রী। তারপরই তিনি জানান, খুব শীঘ্রই ত্রাণ প্যাকেজ ঘোষণা করবে তাঁর সরকার। তৈরি করা হবে একটি পোর্টাল। সেখানে কার কী ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে, তা লিপিবদ্ধ করা হবে। এবং সেই মতো ত্রাণের ব্যবস্থা করা হবে।
টানা বৃষ্টিতে ফুঁসছে ব্রহ্মপুত্র। ফুঁসছে একাধিক নদী। বিপদ বাড়াচ্ছে লাগাতার বৃষ্টি। বন্যার জল যখন সবকিছু ভাসিয়ে নিয়ে যাচ্ছে তখনই শিলচরে ধরা পড়েছে এক মর্মস্পর্শী ছবি। সেখানকার রঙ্গিখারিতে জলবন্দি অবস্থায় বিপদের মুখে পড়েন এক গর্ভবতী মহিলা। প্রসব বেদনা উঠলে তাঁর পরিবার ফোন করে প্রশাসনে। ছুটে যায় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী। ওই মহিলাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠানো হয়।
কোথাও উদ্ধারের কাহিনী, তো কোথাও ভেসে যাওয়ার ঘটনা। জলে হাবুডুবু খেয়ে এখন প্রাণে বাঁচার লড়াইয়ে দিন কাটাচ্ছেন আসামের কয়েক লক্ষ মহিলা, পুরুষ ও শিশু। সকলেই ভাবছেন, কবে থামবে বৃষ্টি, কবে নামবে জল। তখন আবার এলাকায় ফেরা। নতুন করে ঘর বানানো। দিশাহারা পরিস্থিতির মধ্যেই ত্রাণ শিবিরের মানুষগুলোর মনে উঁকি দিচ্ছে নতুন করে বাঁচার স্বপ্ন।