আগেই দ্রৌপদীর পাশে, এবার যশবন্তের থেকে দূরত্ব বাড়ালেন মমতা
রথের দিন দ্রৌপদী মুর্মুর পাশে দাঁড়িয়েছিলেন। উলটো রথের আগেই যশবন্তের ওপর থেকে হাত তুলে নিলেন মমতা। সোমবার কলকাতায় ইন্ডিয়া টু-ডে' (একটি সর্বভারতীয় পত্রিকার) কনক্লেভে, বিশিষ্ট সাংবাদিক রাজদীপ সরদেশাইয়ের এক প্রশ্নের উত্তরে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানান,
"রাষ্ট্রপতি পদে বিরোধীদের ঐক্যবদ্ধ প্রার্থীর হিসেবে যশবন্তের নাম তিনি বলেননি। বাকি বিরোধী দলের নেতারা তাঁর নামে সিদ্ধান্ত করেন। আমাকে বলেন। আমি তা গ্রহণ করি।"
রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের আগেই ফের তাৎপর্যপূর্ণ হয়ে উঠল রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের এই মন্তব্য। পয়লা জুলাই, ইসকনের রথযাত্রার অনুষ্ঠানে, এনডিএ প্রার্থী দ্রৌপদী মুর্মুর জেতার বিষয় নিশ্চিত করেছিলেন মমতা। বলেছিলেন, বিজেপি আগে জানালে তপশিলি আদিবাসী নেত্রী দ্রৌপদীর নামই চূড়ান্ত করতেন তিনি। বিরোধীদলের সর্বসম্মত প্রার্থী ঘোষণার পরও কেন মমতা দ্রৌপদী মুর্মুর প্রতি এমন নরম ভাব দেখাচ্ছেন, এই প্রশ্নের জবাবেই, যশবন্ত সিনহার প্রার্থী হওয়ার দায়ও নিজের ঘাড় থেকে ঝেড়ে ফেলে দিলেন মমতা।
গত ২১ জুন, দিল্লিতে সংসদ ভবনে বিজেপি বিরোধী দলগুলোর বৈঠক ডেকেছিলেন, মহারাষ্ট্রের এনসিপি নেতা শরদ পাওয়ার। তৃণমূলের পক্ষ থেকে উপস্থিত ছিলেন মমতার প্রতিনিধি ও তাঁর নিজের ভাইপো অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। ওই বৈঠকেই যশবন্তের নাম চূড়ান্ত হওয়ার পর মমতা নিজে ট্যুইট করেন। এবং যশবন্তকে, প্রগতিশীল বিরোধী প্রার্থী হিসেবে নির্বাচিত হওয়ায় অভিনন্দন জানান। নাম ঘোষণার আগে, যশবন্ত মমতার সঙ্গে কথা বলেন। তৃণমূলের সর্বভারতীয় সহ সভাপতির পদ থেকে অব্যাহতি চেয়ে ট্যুইট করেন। যশবন্ত সিনহা ট্যুইটে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে ধন্যবাদও জানান।
অথচ সোমবার যশবন্তের বিরোধী জোটের প্রার্থী হওয়ার দায়িত্ব সচেতন ভাবেই এড়িয়ে গেলেন মমতা। ৯ জুলাই রাজ্য আসছেন বিজেপির রাষ্ট্রপতি পদপ্রার্থী দ্রৌপদী মুর্মু। ঐ দিন তাঁর সঙ্গে দেখাও হবে মমতার। তাঁর আগেই, সোমবার কলকাতায় ইন্ডিয়া টু-ডে' (একটি সর্বভারতীয় পত্রিকার) কনক্লেভে মমতাকে বলতে শোনা গেছে,
"রাষ্ট্রপতি পদ অত্যন্ত সম্মানের। দেশের সর্বোচ্চ পদ।"
মমতার অভিযোগ,
"বিজেপির প্রতিনিধি তাঁর সঙ্গে বিজেপির প্রার্থী কে হবেন তা নিয়ে আলোচনা করেনি। শুধু আমাদের প্রার্থী কে হবে জানতে চেয়েছিল।"
তাহলে এখন করণীয় কি? এড়িয়ে যান মমতা। বলেন
"এখন কিছু বললেই আপনারা সাংবাদিকরা বলবেন আমি বিভেদ করছি।"
তাহলে কি দ্রৌপদী মুর্মুকে ধরে বিজেপির আরও কাছে পৌছতে চাইছেন একদা এনডিএ সঙ্গী মমতা? নাকি সিবিআই-ইডির তদন্তের গতি কমাতে বিজেপির অন্দরে অমিত শাহের কাছে কোন মেসেজ পৌছাতে চাইছেন তিনি? নাকি ২৪ সাল পর্যন্ত সরকার টিকবে না রাজ্য বিজেপির এমন মন্তব্যে কাঁপন ধরেছে তৃণমূলের অন্দরে। তারই বহিঃপ্রকাশ মমতার স্ট্যান্ড বদল। আগেই দ্রৌপদীর পাশে, এবার যশবন্তের থেকে দূরত্ব বাড়ালেন মমতা