শ্রাবণের তৃতীয় সোমবারে শৈবতীর্থে ভক্তের ঢল
শ্রাবণ মাস মানেই বাবা মহাদেবের মাস। এই মাসের প্রতি সোমবারই বাবার মাথায় জল ঢালার জন্য ভক্তদের ঢল নামে। ভিড় হয় প্রতিটি শৈব তীর্থে। আমাদের এরাজ্য়ে দলে দলে ভক্তেরা হাজির হয় তারকেশ্বর মন্দিরে। কথিত আছে, তারকেশ্বর মন্দিরের প্রতিষ্ঠাতা উত্তরপ্রদেশের বাসিন্দা বিষ্ণুদাস নামের এক শিবভক্ত। উত্তরপ্রদেশ থেকে এসে হুগলিতে বসবাস শুরু করেন তিনি। লোককথা অনুযায়ী, বিষ্ণুদাসের ভাই দেখেন স্থানীয় জঙ্গলে একটি কালো পাথরের ওপর গরুরা নিয়মিত দুধ দান করে আসে। এই অদ্ভুত দৃশ্য দেখে তিনি সেকথা বিষ্ণুদাসকে জানান। স্বপ্নাদেশ পান বিষ্ণুদাস। তারপর ওই পাথরটিকে তিনি শিবজ্ঞানে পুজো করতে শুরু করেন । গড়ে ওঠে শিব মন্দির।সময়ের সঙ্গে সঙ্গে বহুবার মেরামত আর পুনর্নির্মাণ করা হয়েছে এই মন্দিরের। ১৭২৯ সালে মল্ল রাজারা মন্দিরটির সংস্কার করেন। তৈরি হয় একটি আটচালা মন্দির। বর্তমানে মন্দিরটিকে যে ভাবে দেখা যায়, তা মল্লরাজাদেরই তৈরি। মন্দিরের সামনে একটি নাটমন্দির আছে। আছে কালী ও লক্ষ্মী-নারায়ণের মন্দির । শিবমন্দিরের উত্তর দিকে দুধপুকুর নামে একটি পুকুর আছে। ভক্তদের বিশ্বাস, এই পুকুরে ডুব দিয়ে স্নান করলে যাবতীয় মনস্কামনা পূর্ণ হয়। আজও ভক্তেরা বহু দূর দূর থেকে এই মন্দিরে আসেন শিবের মাথায় জল ঢালতে।
এবার চলুন নজর দেওয়া যাক বাবা বৈদ্যনাথ ধামে। দেওঘরে শ্রাবণ মাস জুড়েই ভক্তের ঢল। আর সোমবার হলে তো কথাই নেই। বাবার মাথায় জল ঢালতে লম্বা লাইন পড়ে যায়।
বৈদ্যনাথ জ্যোতির্লিঙ্গ মন্দির বা বৈদ্যনাথ ধাম হল হিন্দু দেবতা শিবের ১২টি পবিত্রতম জ্যোতির্লিঙ্গ মন্দিরের অন্যতম। বৈদ্যনাথ মন্দির চত্বরে মূল বৈদ্যনাথ জ্যোতির্লিঙ্গের মন্দির ছাড়াও আরো ২১টি মন্দির আছে। হিন্দু বিশ্বাস অনুসারে, রাবণ এখানে শিবকে খুশি করার জন্য তপস্যা করেছিলেন। তিনি তার দশটি মাথা একটি একটি করে কেটে যজ্ঞের আগুনে আহুতি দিচ্ছিলেন। এতে শিব সন্তুষ্ট হয়ে আহত রাবণকে সুস্থ করে তুলতে আসেন। শিব যেহেতু এখানে বৈদ্য বা চিকিৎসকের ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছিলেন, তাই এখানে শিবকে বলা হয় বৈদ্যনাথ।
দেওঘরের বৈদ্যনাথ ধামের পর অবশ্যই বাঙালিদের নজরে আসে আর এক শিব মন্দির। কাশীর বাবা বিশ্বনাথের মন্দির। শ্রাবণ মাসের প্রতি সোমবার এই মন্দিরেও অগণিত ভক্ত আসেন বাবার মাথায় জল ঢালতে। মন্দিরটি গঙ্গা নদীর পশ্চিম তীরে অবস্থিত। হিন্দু বিশ্বাস অনুযায়ী, কাশী বিশ্বনাথ মন্দির "জ্যোতির্লিঙ্গ মন্দির" নামে পরিচিত শিবের বারোটি পবিত্রতম মন্দিরের অন্যতম। মন্দিরের প্রধান দেবতা শিব "বিশ্বনাথ" বা "বিশ্বেশ্বর" নামে পূজিত হন। মন্দিরের ১৫.৫ মিটার উঁচু চূড়াটি সোনায় মোড়া। মন্দিরটি শৈবধর্মের প্রধান কেন্দ্রগুলির অন্যতম। অতীতে বহুবার এই মন্দিরটি ধ্বংস হয়েছে। আবার তাকে তৈরি করা হয়েছে। বর্তমান মন্দিরটি ১৭৮০ সালে ইন্দোরের মহারানি অহল্যা বাই হোলকর তৈরি করে দেন।
শুধু এই শৈব তীর্থগুলিই নয়, রাজ্যে রাজ্যে বহু মন্দিরেই এসময় ভক্তের ঢল নামে। শৃঙ্খলিত হয়ে মাইলের পর মাইল পাড়ি দেন তাঁরা। বয়ে নিয়ে যান হিন্দু ধর্মের সনাতন ধারা । সারা দুনিয়া দেখে ভক্ত আর ভগবানের মেলবন্ধন।
Tags:
Kolkata
bangla news
Bengali news
Tarakeswar
Sawan 2022
Shravan Maas
sawan
sawan somvar
sawan maas 2022
sawan vrat 2022
madhyom bangla
bangla khobor
bangla khabar
shravan
shravan 2022
sawan song
saawan
#sawan somvar vrat katha
baba dham
kashi biswanath temple
deoghar
joy baba mahadev
joy volenath
bhole baba par karega
vole baba song
vole baba
joy vole baba
shravan monday