সীমা দত্ত চট্টোপাধ্যায়, পাওয়ার লিফটিং-এ এশিয়া সেরা
এশিয়ার দ্বিতীয় শক্তিশালী মহিলা কে?
প্রশ্নটা ক্যুইজের হতে পারত। উত্তর দিলে পয়েন্ট মিলত। এখানে আর সে সুযোগ নেই! উত্তরটা দিয়েই দি'। এশিয়ার দ্বিতীয় শক্তিশালী মহিলার নাম সীমা দত্ত চ্যটার্জি। দুর্গাপুরের গৃহবধূ। বয়স ৪৫।
চমকে গেলেন তো? চমকের আরও বাকি আছে। যখন শুনবেন সীমা দত্ত চ্যাটার্জির পাওয়ার লিফটিং-এর কেরিয়ার মাত্র চার বছরের। ২০১৯ সালে পাওয়ার লিফটিং শুরুর করেন সীমা। শুরুটাও নাটকীয় ! গত ১৬বছর শরীর চর্চা করেন সীমা। দুর্গাপুর শহরে তাঁর নিজস্ব জিম রয়েছে। সেটা তাঁর নিজস্ব ব্যবসা। ব্যবসা চালাতে গেলে অনেক কিছু শিখতেও হয়। তেমনই শিখছিলেন। ২০১৯এ তাঁর ট্রেইনার কাম কোচ তাঁকে পাওয়ার লিফটিং সম্পর্কে বলেন। সেই শুরু। তারপর জেলা-রাজ্য-দেশের বিভিন্ন চ্যাম্পিয়নশিপ থেকে পুরস্কার জিতে ফিরেছেন সীমা। বাকি ছিল আন্তর্জাতিক স্বীকৃতির। ১৬ থেকে ২১ জুন। কোয়েম্বাটোরে হয়ে গেল এশিয়ান ইকুইপড পাওয়ার লিফটিং চ্যাম্পিয়নশিপ। এশিয়ান পাওয়ারলিফটিং ফেডারেশন এবং ইন্টারন্যাশনাল পাওয়ারলিফটিং ফেডারেশনের সহযোগিতায় এবারের উদ্যোক্তা ছিল ভারত। বাংলা থেকে সুযোগ পেয়েছিলেন মাত্র তিনজন তাঁদের একজনই সীমা। ৬৩কেজি ক্যাটাগরিতে ঐ মঞ্চ থেকেই ছিনিয়ে এনেছেন চার চারটে সোনা। কুড়িতেই বুড়ি হয়ে যাওয়া বাঙালি মেয়েরা যখন চল্লিশেই বানপ্রস্থে যেতে চান ! তখন ঠিক কি করে এমন অসম্ভবকে সম্ভব করলেন সীমা? দুর্গাপুর নগর নিগম থেকে সম্বর্ধনা দেওয়া হল সীমাকে। সম্মানিত করা হয় তাঁর কোচ অংশু সিংকেও । কাজাকস্তান, মঙ্গোলিয়া, ইরান,জাপান, উজবেকিস্তান, ওমান এবং কুয়েতের বাঘা বাঘা প্রতিযোগীদের হারিয়ে এশিয়ার দ্বিতীয় সেরা শক্তিশালী মহিলা হওয়ার লড়াইটা কেবলমাত্র জানেন সীমার পরিবারের সদস্যরা। বিমান বন্দরেই সম্বর্ধনা জানিয়েছিল জেলা প্রশাসন। সম্বর্ধনা দেন আসানসোল দুর্গাপুর পুলিশ কমিশনারেটের ডিসি ইস্ট অভিষেক গুপ্তাও। কিন্তু গল্পের শেষে যেটা রয়ে গেল, সেটা সীমা দত্ত চট্টোপাধ্যায়ের অসীম জেদ আর ইচ্ছের গল্পটা। কে যেন বলেছিলেন না, স্বপ্নটা শুধু দেখতে হয় না তাড়া করতে হয়।