বাংলার শিল্প চা ঘুগনি বেচা বললেন মুখ্যমন্ত্রী
সেই চা, সেই চপ। নতুন করে উঠে এল বিস্কুট আর ঘুগনি। উৎকর্ষ বাংলা প্রকল্পে প্রশিক্ষণ প্রাপ্ত ছাত্রছাত্রীদের ভবিষ্যতের পথ বাতলাতে গিয়ে সেই তেলেভাজার ব্যবসাতেই আটকে রইলেন মুখ্যমন্ত্রী। নতুন করে শোনালেন কাশফুল থেকে লেপ আর কচুরিপানা থেকে খাবার প্লেট তৈরির কথা। হায় রে বাঙালি। এই প্রকল্পটি শুরুই হয়েছিল ছাত্রছাত্রীদের প্রশিক্ষণ দিয়ে কর্মমুখী করা। কাজ শিখিয়ে রাজ্যের বিভিন্ন সরকারি বেসরকারি সংস্থায় কাজের ব্যবস্থা করে দেওয়া। চাকরির আশ্বাস নিয়ে সেখানে পড়ুয়াদের মন কেনার চেষ্টা করে গেলেন তিনি। কিন্তু রেখে গেলেন এক অন্ধকার দিশা। শোনাতে পারলেন না এই স্বপ্নসন্ধানিদের কোনও স্বপ্নের কথা। যা বাংলা তথা বাঙালিকে গৌরবের পথে ঠেলে দেবে।
মুখ্যমন্ত্রী মমতার মুখে বারবার ফিরে আসছে চা-চপ শিল্প। অথচ এই বাংলাই একদিন সারা বিশ্বকে পথ দেখিয়েছিল। পরাধীন ভারতে এখানেই বেঙ্গল কেমিক্যালের মতো শিল্প প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলেছিলেন প্রফুল্ল চন্দ্র রায়। অতীতের কথা ছেড়ে দিন, কয়েক দশক আগেই হলদিয়া পেট্রোকেমিক্যালস তৈরি করেছেন বাঙালি উদ্যোগপতি পূর্ণেন্দু চট্টোপাধ্যায়। কিছু বছর আগে বন্ধন ব্যাঙ্কের মতো প্রতিষ্ঠান বানিয়ে দেখিয়ে দিয়েছেন চন্দ্রশেখর ঘোষ। পিয়ারলেস তৈরি করেছিলেন সুনীল কান্তি রায়। ১৯৩৯ বঙ্গজীবনের অঙ্গ বোরোলিন। উদ্যোগপতি বাঙালি, নাম গৌরমোহন দত্ত। দেশ বিদেশের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের মাথায় আছেন বাঙালিরা। কিন্তু আজ বাংলার কেন এই হাল?
বড় শিল্প তো কবেই থমকে গেছে। এর সঙ্গে ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পেরও দফা রফা। রাজ্য পরিবেশ দফতরের একটি রিপোর্ট থেকে জানা যাচ্ছে, ২০১৬ সাল থেকে ২০২১ পর্যন্ত পশ্চিবঙ্গে ২১,৫২১টি কারখানা বন্ধ হয়ে গেছে। ২০১৬ তে রাজ্যে মাঝারি ও ছোট শিল্প ছিল ৬০,৯৮০টি। পরবর্তী কালে তা কমে দাঁড়িয়েছে ৩৯,৩৫৯ এ। ২০১৬ সালে রাজ্যে বড় শিল্প ছিল ১৩৩৭টি। ২০২১ সালে এসে তা কমে দাঁড়িয়ে ছিল ১০৬৬ টিতে। মানে বন্ধ হয়ে গেছে ২৭১টি। এই হিসেবই স্পষ্ট করে দিচ্ছে রাজ্যে শিল্পের করুণ অবস্থা।
রাজ্যের মানুষ বুঝতে পারছে এই করুণ পরিস্থিতির কথা। হাড়ে হাড়ে টের পাচ্ছে যুবসমাজ। কিন্তু কোটি কোটি টাকা খরচা করে বিশ্ববঙ্গ সম্মেলন করার সময় খালি প্রতিশ্রুতির বন্যা বইয়ে দিচ্ছেন মুখ্যমন্ত্রী। এবছর এপ্রিল মাসেও ঘটা করে পালিত হয়েছে এই সম্মেলন। কিন্তু কাজের কাজ কিছুই হয়নি। কোভিডের জন্য মাঝের দু বছর বন্ধ থাকলেও মুখ্যমন্ত্রী পদে শপথ নেওয়ার পর থেকেই বিনিয়োগের বুলি আওড়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। কিন্তু ১১ বছর ধরে গঙ্গা দিয়ে অনেক জল বয়ে গেলেও রাজ্যবাসী দেখছে, কাজের কাজ কিছুই হয়নি। ফলে কলকাতা থেকে খড়গপুর, উৎকর্ষ বাংলায় প্রশিক্ষণ প্রাপ্ত ছাত্রছাত্রীদের আশার কথা কিছুই বলতে পারেননি। উল্টে হুগলির বহু চাকরি প্রার্থীদের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে ভুয়ো নিয়োগপত্র। সরকারি ভাবে যখন এই তুঘলকিপনা চলছে, তখন দ্বিতীয় সভাতে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী শোনাচ্ছেন পুজোয় ঘুগনি বেচার কথা। দেখাচ্ছেন চপ, ঘুগনি বিক্রি করে কোটিপতি হওয়ার স্বপ্ন। এই জন্যই কি কারিগরি প্রশিক্ষণ? প্রশ্ন তুলছে লক্ষ লক্ষ যুবক যুবতী। আর তাই এভাবেই ধিক্কার জানাচ্ছে জনতা।
Tags:
Mamata Banerjee
CM Mamata
CM Mamata Banerjee
Employment Opportunity
Unemployment
tea
mamata banerjee news
mamta banerjee
bengal cm mamata banerjee
tea stall
tea seller
make tea stall
chai tea stall
tea stalls daily income
stall
Mamata on Employment
Utkarsh Bengal
Catkin Pillow
pakora maker
Bengali youth
bengal unemployment
Water Hyacinth Mat
mamata banerjee Industry
mamata bannerjee Unemployment
kasher balish
kochuripanar madur
Puja festival