নবান্নে সাংবাদিক বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়
সিঁদুরে মেঘ দেখছেন মমতা? পার্থ অর্পিতা কাণ্ডে দেশজুড়ে যখন ছি ছিক্কার, তখন মন্ত্রীদের সতর্ক করলেন তিনি। কেলেঙ্কারি সামনে আসার পর প্রথম মন্ত্রিসভা বৈঠকে তাঁর বার্তা, এমন কোনও কাজ করবেন না যাতে মন্ত্রিসভার অপমান হয়। গত এগারো বছরে এই কথা তিনি একাধিকবার বলেছেন। প্রকাশ্যে বলেছেন। রুদ্ধদ্বার বৈঠকে বলেছেন। কিন্তু বাস্তবে অন্য ছবি দেখেছে বাংলা। কখনও সামনে এসেছে সারদা কেলেঙ্কারি, কখনও নারদা কাণ্ড। এসব কেলেঙ্কারি বাদ দিলে শহর ও শহর তলিতে শাসক দলের নেতাদের যেভাবে আঙুল ফুলে কলাগাছ অবস্থা হয়ে গেছে, তাতে আমজনতা তীব্র বিরক্ত। কোথাও তারা মুখ খুলতে পারে না ভয়ে, কোথাও আবার সংকোচে এড়িয়ে যায় কেচ্ছার ইতিবৃত্ত।
ইডি, সিবিআই জেরার পর জনতা জানতে পেরেছে কীভাবে গরু পাচার থেকে কয়লা কেলেঙ্কারি জাঁকিয়ে বসেছে শাসক দলের ছত্রছায়ায়। এখন আবার খুল্লাম খুল্লা হয়ে গেছে এসএসসি কেলেঙ্কারি। গরীব বেকারের টাকার পাহাড়ে কীভাবে মোচ্ছব চালাচ্ছিলেন মমতার মন্ত্রী, সেই পর্দা ফাঁস হয়ে গেছে। জনগণেশের কাছ থেকে যখন খালি ছিছিক্কারই শুনছে শাসক, তখন তলিয়ে যাওয়ার আগে আর একবার ভেসে ওঠার চেষ্টা করছে তৃণমূল সরকার। আর তাই নতুন করে মন্ত্রিসভা সাজাতে চান মুখ্যমন্ত্রী। কামরাজ প্ল্যানের লজ্জাকে দূরে সরিয়ে রাখতে চেয়ে তিনি বলেন, বুধবার বিকেলে ৫-৬ জন নতুন মুখকে মন্ত্রিসভায় আনবেন তিনি।
নতুন মন্ত্রিসভা সাজাতে গিয়ে পিসি-ভাইপোর চাপানউতোর সামনে আসছে বলে কানাঘুষো শোনা যাচ্ছে। শেষমেষ অভিষেকের কথা শুনে এক মন্ত্রী, এক পদের পথে হাঁটতে পারেন মমতা। সেক্ষেত্রে মন্ত্রিসভায় ঠাঁই পেতে পারেন তাপস রায়, শুভাশিস চক্রবর্তী, বাবুল সুপ্রিয়, পার্থ ভৌমিক। পরিবহণ, শিল্পবাণিজ্য সহ মোট ১৮টি দফতরে নতুন মুখ আসতে চলেছে। কেলেঙ্কারির দায়ে সরতে হতে পারে পরেশ অধিকারীকে। জায়গা মিলতে পারে উদয়ন গুহর। মন্ত্রিসভা থাকলে মন্ত্রী থাকবেন। সেখানে একজন আসবেন, আর একজন যাবেন। কিন্তু তৃণমূলের জমানায় রাজ্যের মানুষ কোন পথে যাবে, সেই প্রশ্নই ঘুরপাক খাচ্ছে বাংলার আকাশে বাতাসে।