পাহাড় চুড়ায় 'সম্পত্তি' ED নজরে উনিশ TMC মন্ত্রী বিধায়ক
নজরে উনিশ, শাসকদলের নেতা মন্ত্রীদের বিরুদ্ধে মামলায় এবার ইডিকে জুড়ল হাইকোর্ট। উনিশের পাশে কি দাঁড়াবেন মুখ্যমন্ত্রী? এটাই এখন লাখ টাকার প্রশ্ন।
সে প্রশ্নে পড়ে আসছি। তাঁর আগে জেনে নিন মূল ঘটনা। অভিযোগ আগে থেকেই ছিল। ২০১১ থেকে ২০১৬। অর্থাৎ তৃণমূল কংগ্রেস ক্ষমতায় আসার প্রথম পাঁচ বছরেই বিপুল সম্পত্তির মালিক হয়েছেন শাসক দলের নেতা মন্ত্রী বিধায়করা। কি করে শাসক দলের ১৯ জন নেতা মন্ত্রীর সম্পদ এমন গতিতে বাড়ল? শুধু নেতা মন্ত্রী নয় তাঁদের স্ত্রীর নামেও সম্পদ ২০১৭ সালে একটি জনস্বার্থ মামলা হয়েছিল আদালতে। সেই মামলায় এবার ইডি বা এনফোর্সমেন্ট ডাইরেক্টরেটকে পার্টি করার অনুমতি দিল কলকাতা হাইকোর্ট। অর্থাৎ আয় বহির্ভুত মামলায়, শাসক দলের ঐ উনিশ মহারথীর বিরুদ্ধে তদন্ত করতে পারবে ইডি।
হাই কোর্টের প্রধান বিচারপতি প্রকাশ শ্রীবাস্তব এবং বিচারপতি রাজর্ষি ভরদ্বাজের ডিভিশন বেঞ্চে এই আর্জি জানান আইনজীবী শামিম আহমেদ, সব্যসাচী চক্রবর্তী। হাইকোর্টে তাঁরা ১৯ জন নেতা-মন্ত্রীর একটি তালিকা-সহ তাঁদের স্থাবর-অস্থাবর সম্পত্তির হিসেব দিয়ে বলেন, ২০১১ সাল থেকে ২০১৬ সাল। ক্ষমতার প্রথম পাঁচ বছরেই তৃণমূলের এই নেতা-মন্ত্রীদের সম্পত্তি বেড়েছে লাফিয়ে। আইনজীবী শামিম আহমেদের আর্জি, পাঁচ বছরে এঁদের সম্পত্তি কী ভাবে এত বাড়ল, তা খতিয়ে দেখুক ইডি। এরই প্রেক্ষিতে ওই মামলায় ইডিকে যুক্ত করার নির্দেশ দেয় হাই কোর্টের বেঞ্চ।
কারা এই উনিশ জন? তালিকা দেখে চমকে উঠবেন না, এরা সবাই শাসকদলের মন্ত্রী সান্ত্রী।
তালিকায় আছেন বর্তমান মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম, ব্রাত্য বসু, মলয় ঘটক, জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক, জাভেদ খান, অরূপ রায়। রাজ্য বিধানসভার অধ্যক্ষ বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়, মন্ত্রীসভার প্রয়াত দুই সদস্য সাধন পাণ্ডে ও সুব্রত মুখোপাধ্যায়। আছে তৃণমূল বিধায়ক শিউলি সাহা, মদন মিত্র, ইকবাল আহমেদ, স্বর্ণকমল সাহা। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পরামর্শদাতা অমিত মিত্র। বিজেপি ঘুরে আসা বিধাননগরের প্রাক্তন মেয়র সব্যসাচী দত্ত, সাংসদ অর্জুন সিং,প্রাক্তন মেয়র মন্ত্রী শোভন চ্যাটার্জি, প্রাক্তন মন্ত্রী রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়। তৃণমূলের প্রাক্তন মন্ত্রী আবদুর রেজ্জাক মোল্লা।
আইনজীবীদের আর্জি, এঁদের সম্পত্তি বৃদ্ধি খতিয়ে দেখুক ইডি।
আইনজীবীরা আদালতকে জানিয়েছেন, এঁদের অনেকেরই ব্যক্তিগত সম্পত্তি ঐ সময় কালে, বিপুল পরিমাণে বেড়েছে। অনেক ক্ষেত্রে আবার এঁদের স্ত্রীরা তেমন ভাবে কোনও পেশার সঙ্গে যুক্ত না হওয়া সত্ত্বেও, তাঁদের সম্পত্তি পাঁচ বছরে বৃদ্ধি পেয়েছে ২৫০ শতাংশের বেশি।
হলফ নামায় বলা হয়েছে, ২০১১ থেকে ২০১৬ জাভেদ খানের সম্পত্তি বৃদ্ধির পরিমাণ সবচেয়ে বেশি। ৪৭৩৪ শতাংশ। তাঁর স্ত্রীর সম্পত্তি বেড়েছে ৪০৮ শতাংশ।
সমবায়মন্ত্রী অরূপ রায়ের আয় বেড়েছে ১১০৮%
কলকাতার বর্তমান মেয়র ফিরহাদ হাকিমের সম্পত্তির বৃদ্ধি ৭০%, অস্থাবর সম্পত্তি বেড়েছে ২২৫%
বর্তমান শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসুর আয় বৃদ্ধি পেয়েছে ১০৩%, তাঁর স্ত্রীর অস্থাবর সম্পত্তি বেড়েছে ৩৮২%
মন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের স্ত্রী কোন পেশার সঙ্গে যুক্ত না থেকেও তাঁর অস্থাবর সম্পত্তি বেড়েছে ৭২৯%
এ সবই ২০১১ থেকে ২০১৬-র হিসাব। আইনজীবীদের দাবি ২০১৬ থেকে ২০১৯-এর হিসেব অর্থাৎ তৃণমূলের দ্বিতীয় টার্মেরও হিসেব দাখিল করা হবে আদালতে। তারপরেও থেকে যাবে ২০১৯ থেকে ২০২২...আইনজীবীদের দাবি, এ শুধু ঘোষিত সম্পত্তির পরিমাণ। অঘোষিত সম্পত্তি আরও বেশি। সরকারি অর্থে রীতিমত লুঠতরাজ না চালালে এমন বিপুল বৃদ্ধি সম্ভব নয় বলেই মনে করছেন আইনজীবীরা।
রাজ্যের নেতা-মন্ত্রীদের সম্পত্তি বৃদ্ধি নিয়ে মামলায় এবার তদন্ত চালাতে পারবে ইডি বা এনফোর্সমেন্ট ডাইরেক্টরেট। কলকাতা হাইকোর্টে দিভিশোন বেঞ্চ এই নির্দেশই দিয়েছে। কিন্তু প্রশ্ন হল এই উনিশের পাশে কি দাঁড়াবেন দলনেত্রী? সম্ভাবনা বলছে না। কারণ নিয়োগ দুর্নীতিতে ইডি তল্লাশি চলাকালীন দীর্ঘদিনের সঙ্গী অতি বিশ্বস্ত দলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের ফোন ধরেননি মমতা। চতুর্থবারের পর নাম্বার ব্লক করে দেন বলে অভিযোগ। গতকালই সিবিআই এর ডাকে নিজামে হাজিরা এড়াতে এসএসকেএম-এ ভর্তি হতে যান মমতার স্নেহ ধন্য অনুব্রত মণ্ডল। তাঁকেও ভর্তি না করে ফিরিয়ে দেয় হাসপাতাল। ক'দিন আগে থেকেই অনুব্রতর ফোনও নাকি ধরছেন না দলনেত্রী মমতা।
সম্প্রতি মন্ত্রিসভা পুনর্বিন্যাসেও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মলয় ঘটক, ফিরহাদ হাকিম অরূপ রায়দের ক্ষমতা কমিয়ে ইঙ্গিতও দিয়েছেন ইডি সিবিআই-এর পরের টার্গেট কারা হতে চলেছেন।
প্রশ্ন হল, আদালতের নির্দেশে এই ১৯-এর ঘরে ইডি তল্লাশি শুরু হলে কি মমতা কি আবারও কেটে দেবেন ফোন? ফের ব্লক লিস্টের তালিকা বাড়বে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী আই ফোনে?
Tags:
Calcutta High court
tmc
Mamata
High Court
Firhad Hakim
Money Laundering
Minister Partha Chatterjee
Money Laundering Case
Sovan Chatterjee
ED arrests TMC minister
ed raid tmc minister
Madan Mitra
tmc district leaders ed scanner
ed arrests bengal minister
west bengal chief minister
bengal minister
bjp on tmc minister arrest
ed list summon tmc leaders
high court orders probe
high court order
PIL
Javed Khan
arup roy
mamata cabinet minister
west bengal minister partha chatterjee
wst bengal minister
west bengal chief minister mamata banerjee
west bengal minister
bengal minister's aide
Mamata Cabinet under ED Scanner