অভিষেক-পত্নী রুজিরাকে জেরায় কী উঠে এল?
গত বছর মার্চ মাসের পর ফের জেরা অভিষেকের স্ত্রী রুজিরা বন্দ্যোপাধ্যায়কে। কয়লা পাচার কাণ্ডে মঙ্গলবার টানা সাত ঘণ্টা ধরে রুজিরাকে জেরা করে কেন্দ্রীয় গোয়েন্দারা। এদিন সকাল এগারোটা নাগাদ অভিষেকের কলকাতার বাড়ি শান্তিনিকেতন বিল্ডিংয়ে যান সিবিআইয়ের আট সদস্যের প্রতিনিধি দল। এর মধ্যে মহিলা গোয়েন্দারাও ছিলেন। সন্ধে নাগাদ শান্তিনিকেতন বিল্ডিং থেকে বেরিয়ে যান তাঁরা। সম্প্রতি অভিষেক ও রুজিরাকে চিঠি দিয়েছিল সিবিআই। ওই চিঠিতে গোয়েন্দারা জানতে চান, তাঁরা কবে সিবিআইয়ের সঙ্গে কথা বলতে পারবেন? সেই চিঠির উত্তর পেয়েই এদিন সটান শান্তিনিকেতন বিল্ডিংয়ে হাজির হয় সিবিআই। গোয়েন্দা সূত্রে খবর, লালার অফিসে তল্লাশি অভিযান চালিয়ে বেশ কিছু নথি মেলে। সেই নথি খতিয়ে দেখতে গিয়ে উঠে আসে একের পর এক চাঞ্চল্যকর তথ্য। একটি বিদেশি ব্যাংক একাউন্টের হদিস পান অফিসাররা। যেখানে মোটা অঙ্কের টাকা ট্রান্সফার করা হয়েছিল। সেই অ্যাকাউন্টের বিষয় রুজিরা কি কিছু জানতেন?হাওড়ার বাসিন্দা নিরজ সিংহ, পেশায় অ্যাকাউন্টেন্ট, তাঁকে কি কোনও ভাবে চিনতেন? কয়লা পাচারের টাকা কোন কোন ব্যাংকের অ্যাকাউন্টে গিয়েছিল? কোন কোন প্রভাবশালী ব্যক্তির কাছ থেকে টাকা এসেছিল? কারা লাভবান হয়েছেন?এই সমস্ত একাধিক প্রশ্ন দফায় দফায় জিজ্ঞাসাবাদ করা হয় রুজিরা বন্দ্যোপাধ্যায়কে। রেকর্ড করা হয় বয়ানও এমনটাই খবর সিবিআই সূত্রে।
কয়লাপাচার কাণ্ডে জেরা করতে এর আগে, অভিষেক ও তাঁর স্ত্রীকে দিল্লিতে তলব করেছিল সিবিআই।এর পরেই দিল্লি হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন অভিষেক। তিনি জানিয়েছিলেন, করোনা পরিস্থিতিতে রুজিরার পক্ষে সন্তানদের ছেড়ে দিল্লিতে গিয়ে সিবিআইয়ের মুখোমুখি হওয়া সম্ভব নয় । তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদকের সেই আর্জি খারিজ করে দেওয়া হয়। এর পর সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হন অভিষেক। দেশের শীর্ষ আদালত জানিয়ে দেয়, অভিষেক ও তাঁর স্ত্রীকে জেরা করা হোক কলকাতায়। সেই মতো এদিন তাঁর বাড়িতে হাজির হয় সিবিআই। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক সিবিআই কর্তা বলেন, মামলার বিষয়ে আমরা কিছু নতুন তথ্য পেয়েছি। তার জন্য ফের রুজিরার বক্তব্য রেকর্ড করার প্রয়োজন রয়েছে।
এদিনই প্রচারের কাজে ত্রিপুরা গিয়েছেন অভিষেক। কিছুদিন আগেই তাঁকে দিল্লিতে জেরা করেছিল ইডি। কয়লা কেলেঙ্কারির মূল পাণ্ডা বিনয় মিশ্রের সঙ্গে তাঁর যোগসাজশ নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। ফলে ইডি থেকে সিবিআই, কেলেঙ্কারির উৎসে পৌঁছতে তৎপর দুই কেন্দ্রীয় বাহিনীই।