গরু পাচারের সেকাল একাল
চলুন প্রথমেই আপনাদের একটা ছবি দেখাই। যে ছবি দেখছেন, তা ভারত বাংলাদেশ সীমান্তের। কাঁটাতার পেরিয়ে গরু থেকে বাছুর, কীভাবে এপার থেকে ওপারে পাঠানো হচ্ছে, তা ভালো করে দেখুন। একেবারে কপিকল সিস্টেম। যেভাবে পুকুর থেকে জল তুলে চাষের মাঠে ফেলা হয়, সেভাবেই চলছে একদিক থেকে অপরদিকে গরু পাচার। আসলে আজ নয়, বহুদিন ধরে এভাবেই চলছে গরু পাচার। কিন্তু ক্ষমতায় আসার পর সেই মধুভান্ডটিকে কব্জায় আনতে আসরে নেমে পড়ে শাসক দল। সিবিআইয়ের দাবি, পাচার হওয়া গরু পিছু আড়াই থেকে তিন হাজার টাকা কমিশন ধার্য করে দিয়েছিলেন অনুব্রত। বেআইনি করিডরকেই রক্তচক্ষু দেখিয়ে অবাধ ও মসৃণ করে তুলেছিল অনুব্রতের দলবল। এব্যাপারে বীরভূমের তৃণমূল জেলা সভাপতির ডানহাত ছিল এনামুল। এনামুলের আত্মীয় দেখত পাচারের কারবার। রাইসমিলে বসে চলত গোরুর প্যাড কাটার কাজ। ৩০-৩৫ হাজার টাকায় বিক্রি হত প্যাডের পাতা। হাট থেকে গরু বিক্রির সময় নগদে গরুর দামের সঙ্গেই দিতে হত এই টাকা। তাহলেই নিরুপদ্রবে এই গরু পৌঁছে যেত সীমান্তে। আর সেখান থেকে চলে যেত ওপারে।
তদন্ত করে সিবিআই জানতে পেরেছে, ২০১৫ সাল থেকে চলছে এই গরু পাচারের ডিল। তিন মাসে ৬ কোটি টাকার ডিল হয়েছিল। এই টাকা এনামুল পৌঁছে দিত সায়গলের কাছে। সায়গল দিত অনুব্রতকে। এভাবে পাচার করতে গিয়ে ২০১৫ সাল থেকে ২০১৭ পর্যন্ত ২০ হাজার গরু মালদহ ও মুর্শিদাবাদ সীমান্তে ধরাও পড়ে। তবে গরু ধরা পড়লেও কোনও এজেন্ট গ্রেফতার হয়নি।
বছরের পর বছর কারবার চলেছে মসৃণ গতিতে। কিন্তু সিবিআই তদন্ত শুরু হওয়ার পরই নতুন পথ খুঁজতে থাকে পাচার কারীরা। দক্ষিণী ছবি পুষ্পা দেখে মাথা খুলে যায় তাদের। সিনেমায় দেখানো হয়, দুধের গাড়িতে চন্দন কাঠ পাচার। সেই স্টাইলেই এবার,কখনও পার্সল ভ্য়ানে, আবার কখনও প্রসিদ্ধ ডেয়ারি কোম্পানির গাড়ি করে পাচার হতে থাকে গরু। তবে সেখবরও বেশিদিন চাপা থাকে না। তাই একদিন তা ধরা পড়ে ধানবাদে। আর একটি গাড়ি দুর্ঘটনায় পড়ে পুরুলিয়ায়। ডালা খুলতেই বেরিয়ে আসে একের পর এক গরু। গরু পাচারের এই নতুন পদ্ধতি দেখে সকলের চোখ কপালে ওঠে।
আসলে অন্ধকার জগৎ সবসময়ই খুঁজতে থাকে তার দুর্নীতির নতুন নতুন পথ। একটা পথ বন্ধ হলে শুরু হয় আর এক পথে চোরা কারবার। সেই ছবিই দেখা যাচ্ছে গরু পাচারের ক্ষেত্রে। একসময় গরুর পালকে তাড়া করে পায়ে পায়ে পৌঁছে যাওয়া যেত সীমান্তে। সেখানে কপিকল সিস্টেমে গরু থেকে বাছুর পৌঁছে যেত বাংলাদেশে। তবে কেলেঙ্কারি সামনে আসার পরই সকলের নজর পড়েছে এই পাচার কারীদের দিকে। তাই তারাও বেছে নিয়েছে এই নতুন পথ।
Tags:
bjp
Madhyom
tmc
CBI probe
bangla news
Bengali news
Cattle smuggling case
Cattle smuggling
Cow smuggling
cow smuggling case
cow smuggling news
anubrata cow smuggling
cow smuggling probe
cattle smuggling in west bengal
cow smuggling racket
cow smuggle case
cattle smuggling racket
cow smuggling chase
purulia cow smuggling
cow smuggling bengal
cbi cow smuggling
jharkhand cow smuggling
murshidabad cow smuggling
maldah cow smuggling