মেয়ের গ্রেফতারিতে কী বললেন অনুব্রত?

একসময় তাঁর এই কথার প্রেক্ষিত ছিল আলাদা। সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে নিরাসক্ত মুখে বলতেন অন্যায় হয়েছে। আর সেই অন্যায়ের দায় চাপাতেন বিরোধীদের ঘাড়ে। এবার সেই দোষের ভাগীদার কে, তা বলেননি। তবে আজ আদালতে হাজিরার সময় মেয়েকে গ্রেফতারের প্রশ্নে সেই কথাই শোনা যায় বীরভূমের তৃণমূল সভাপতি অনুব্রত মণ্ডলের গলায়। বলেন, মেয়েকে অ্যারেস্ট করা অন্যায় হয়েছে। এটা কোনও বাহাদুরির কাজ হয়নি। (গ্রাফিক্স) সুকন্যা গ্রেফতারির পর এই প্রথম প্রতিক্রিয়া বাবার। কিন্তু কী অদ্ভূত সমাপতন। তাঁর মুখে সেই অন্যায়ের বুলি। তবে কি তাঁর মনে হচ্ছে, এ দারুণ লজ্জার ব্যাপার! একসময় তো তাঁর মুখে তো ভাইরাল ছিল, অন্যায় হয়েছে, দারুণ লজ্জার ব্যাপার। চলুন শুনি গ্রেফতারির আগে কী বলতেন অনুব্রত।
বাইট (অন্যায় হয়েছে, দারুণ লজ্জার ব্যাপার)
২৬ এপ্রিল গ্রেফতার হয়েছেন সুকন্যা। বাবার সঙ্গে তিহাড় জেলেই আছেন তিনি। অনুব্রত সাত নম্বর সেলে। সুকন্যা মহিলাদের জন্য ৬ নম্বর সেলে। পাশাপাশি আছেন। তবে দেখা করার সুযোগ নেই। কথা বলতে চেয়েছেন সুকন্যা। কিন্তু তা নির্ভর করছে জেল কর্তৃপক্ষের ওপর। তাই কি মনে মনে ক্ষিপ্ত হয়ে উঠছেন অনুব্রত? মনে মনে বলতে চাইছেন, সুঁটিয়ে লাল করে দেব? যা গ্রেফতারির আগে বিরোধীদের শাসাতে প্রায়ই বলতেন তিনি!

সিবিআই সূত্রের খবর, গত ৮ বছরে সুকন্যার আয় বেড়েছে ১৭৫ গুণ। আয়কর রিটার্ন ফাইল থেকে জানা যাচ্ছে, বছরে তাঁর আয় দাঁড়িয়েছে কোটি টাকার ওপর। সামান্য এক স্কুল শিক্ষিকার এত আয় হল কীভাবে? তবে কি বাবার কৌশলে ফেঁসে গেলেন সুকন্যা? মুখ খুলছেন না অনুব্রত। ইডিকে তিনি সত্যি জানালে তাঁর মেয়ে বাঁচতে পারে। কিন্তু এখনও তার লক্ষণ দেখা যায়নি। এই অবস্থায় বিরোধীরা শুধু মনে করিয়ে দিতে চাইছেন তাঁর পুরনো ডায়লগ। 

সত্যি। গরু থেকে কয়লা। লটারি থেকে বালি। আয় বাড়াতে বাড়াতে ধনকুবের হয়েই ধরা পড়ে গেলেন অনুব্রত। ফেঁসে গেলেন তাঁর মেয়েও। গোয়েন্দা তদন্তে সামনে আসছে সবকিছু। একসময় তিনি হুমকি দিতেন, হনুমান টুপি পরিয়ে ছেলে নামাবেন। ক্যামেরার ছোট লেন্সে ধরা পড়বে না। আজকে তাঁর কি মনে পড়ছে সেই কথা?

কিছুদিনের মধ্যেই তাঁকে মেয়ের সঙ্গে মুখোমুখি বসানো হতে পারে। সুকন্যা জানিয়েছেন, বাবা আর মণীশ কাকু সব জানে। মেয়ের সামনে সত্যি কথা বলবেন তো অনুব্রত? জানাবেন, কোথায় পৌঁছত কোটি কোটি টাকা? নাকি, বাহাদুরি দেখাতে গিয়ে মেয়েকেও কাঁদাবেন তিনি! অপরের অন্যায় ধরতে গিয়ে নিজেই বারবার অন্যায় করবেন!