কালো টাকার সেফ ভল্ট বাংলা!
বাংলায় কি এখন কালো টাকার পাহাড়! ২২ জুলাই যে ছবি দেখে চমকে গিয়েছিল রাজ্যবাসী তথা গোটা দেশ, ক্রমশ তা কি গা সওয়া হয়ে যাচ্ছে? তৃণমূল জমানায় এই ছবির সঙ্গে অভ্যস্ত হয়ে পড়ছেন সাধারণ মানুষ? রাজ্য জুড়ে প্রতিটি চায়ের ঠেকে এখন এটাই হট টপিক হয়ে উঠেছে।
ঘরের মধ্যে যে কোটি কোটি টাকা এভাবে রাখা যায়, তা রাজ্যবাসী প্রথম দেখেছিল টালিগঞ্জে। প্রাক্তন মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের ঘনিষ্ঠ অর্পিতা মুখোপাধ্যায়ের ফ্ল্যাট থেকে উদ্ধার হয়েছিল নগদ ২১ কোটি ৯০ লক্ষ টাকা। মিলেছিল ৫৬ লক্ষ টাকার বিদেশি মুদ্রা, বাজেয়াপ্ত হয়েছিল প্রচুর সোনার গয়না। এই টাকা উদ্ধারের পর, ২৩ জুলাই গ্রেফতার হন পার্থ চট্টোপাধ্যায় ও অর্পিতা মুখোপাধ্যায়।
এই নাটকীয় ছবির ঠিক পাঁচদিন পর একই ঘটনা ঘটে বেলঘরিয়ায়। সেখানে বহুতল আবাসনে অর্পিতার নামে থাকা দুটি ফ্ল্যাটে অভিযান চালায় ইডি। একটি ফ্ল্যাটে ঢুকে দেখা যায়, সেখানে জমা আছে রাশি রাশি টাকা। শোওয়ার ঘর ও বাথরুম থেকে মেলে নগদ ২৭ কোটি ৯০ লক্ষ টাকা। উদ্ধার হয় সোনার গয়না, এমনকি সোনার বাটও।
কয়েকদিনের মধ্যে দুটি ফ্ল্যাটে নগদ ৫০ কোটি টাকার বেশি উদ্ধার করে ইডি। উদ্ধার হয় ৫ কোটি টাকারও বেশি মূল্যের সোনার গয়না। খোদ মন্ত্রী এহেন কীর্তির সঙ্গে জড়িত দেখে তাজ্জব বনে যায় রাজ্যবাসী। যত দিন যায়, একের পর এক ফাঁস হয় শাসকের কীর্তি কাহিনী।
এই পরিস্থিতিতেই শনিবার ফের খোঁজ মিলল বিপুল টাকার। উদ্ধার হল ১৮ কোটি টাকা। টাকা গুনতে নিয়ে আসা হল মেশিন। বাংলা তথা গোটা দেশ দেখল, কালো টাকা উদ্ধারে রেকর্ড করছে বাংলা। তবে টাকা উদ্ধার নিয়ে আমজনতা যখন প্রশাসনের ভূমিকায় ক্ষুব্ধ, তখন ইডি কেন তদন্ত করছে, সেদিকে নজর ঘোরাতে চাইছেন মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম। দু নম্বরি টাকা উদ্ধার নিয়ে মন্ত্রীর এহেন বয়ানে বিষ্মিত বঙ্গবাসী। যা নিয়ে প্রশ্ন তুলতে ছাড়েনি বিজেপিও।
রাজ্য জুড়ে এখন একটাই প্রশ্ন। টাকা গোনার তিনটি পর্ব শেষ। এবার চতুর্থ পর্ব কোথায়? ইডির পরবর্তী তল্লাশি কার ডেরায়? সেখানে কি ভেঙে যাবে আগের রেকর্ড? মুখ্যমন্ত্রী এক মাস আগে পুজো শুরুর ডাক দিয়ে সবকিছু ভোলাতে চাইলেও, বাস্তব ছবি বড় নির্মম ভাবে ধরা দিচ্ছে। এই অন্ধকার দূর হয়ে বাংলায় কবে স্বচ্ছ প্রশাসনের আলো ফুটবে, তার অপেক্ষাতেই দিন গুণছে রাজ্যবাসী।
Tags: