নতুন বছরে বাংলা কী কী চায় না ?
২০২৩ সালে (2023) বাংলা (Bengal) কী কী চায় না ? নতুন বছরকে (New Year) স্বাগত জানানোর মুহূর্তে এই প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছে বাঙালীর মনে। আসলে ২০২২ মানেই সকলের মনে পড়বে একটা কেলেঙ্কারির (scam) বছর। বাংলায় শিক্ষায় কেলেঙ্কারি (ssc scam), গরু থেকে কয়লা পাচার (coal scam) কেলেঙ্কারি, লটারি কেলেঙ্কারি (lottery scam) , আবাস কেলেঙ্কারি (ayas yojana scam)। কেলেঙ্কারির নির্লজ্জ ধাপ পেরিয়ে হাজির নয়া সাল। চলুন ফিরে দেখা যাক সেই কেলেঙ্কারির নগ্ন চেহারাকে।
প্রথমেই শিক্ষায় কেলেঙ্কারি। খোদ প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী থেকে শিক্ষা বিভাগের শীর্ষ আধিকারিকরা কীভাবে টাকার বিনিময়ে নিয়োগ কেলেঙ্কারিতে জেলে গেছে, তা প্রত্যক্ষ করেছে ২০২২। সামনে এসেছে মন্ত্রীর সঙ্গে অর্পিতা মুখোপাধ্যায়ের সম্পর্কের কথা। পার্থ ঘনিষ্ঠ অর্পিতার বাড়ি থেকে উদ্ধার হয়েছে বস্তা ভর্তি কোটি কোটি টাকা। প্রথমে টালিগঞ্জ, তারপর বেলঘরিয়া। দুটি ফ্ল্যাট থেকে যেভাবে টাকা গোনার মেশিন নিয়ে টাকা গুনতে হয়েছে, তাতে চোখ ধাঁধিয়ে গেছে গোটা দেশবাসীর। মিলেছে রাশি রাশি সোনার গয়না। জেলে গেছেন মন্ত্রী। জেল বন্দি তাঁর বান্ধবী। এই কেলেঙ্কারি সামনে আসতেই ক্রমশ দুর্নীতির পর্দা ফাঁস হয়েছে। দেখা গেছে তৃণমূল জমানায় শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মী নিয়োগের নামে ছেলেখেলা হয়েছে। কেন্দ্রীয় সংস্থার তদন্তে প্রকাশ্যে এসেছে সরকারের কঙ্কালসার চেহারা। প্রাথমিক থেকে উচ্চ শ্রেণী, সব পর্যায়ে শিক্ষক নিয়োগেই কেলেঙ্কারি হয়েছে। চলেছে টাকার খেলা। ফাঁকা মার্কশিট জমা দিয়েই শিক্ষকতা করছেন অনেকে। শাসকের বদান্যতায় এভাবেই শিক্ষায় কবর খোঁড়া চলেছে দিনের পর দিন। যোগ্য ব্যক্তি চাকরি পাননি। উল্টে শিক্ষকতা মিলেছে মন্ত্রীর মেয়ের। আদালতের নির্দেশে তাঁর চাকরি গেছে। দিতে হয়েছে জরিমানাও। এখনও চলছে বিভিন্ন পর্যায়ে মামলা। ঘটনার শেষ দেখতে চেয়েছে বিচারবিভাগ। মূলত হাইকোর্টের সজাগ দৃষ্টিই রাজ্যকে সর্বনাশের হাত থেকে বাঁচানোর চেষ্টা করছে।
শিক্ষায় কেলেঙ্কারির পাশাপাশিই রাজ্যবাসীর সামনে এসেছে কয়লা ও গরু পাচার কেলেঙ্কারি। কেন্দ্রীয় তদন্তে সামনে এসেছে, কীভাবে প্রভাবশালীরা দিনের পর দিন এই দুই জায়গায় প্রতিপত্তি খাটিয়ে দুর্নীতি চালিয়ে এসেছে। কেলেঙ্কারির দায়ে জেলে যেতে হয়েছে বীরভূমের তৃণমূল সভাপতি অনুব্রত মণ্ডলকে। সামনে এসেছে তাঁর কোটি কোটি টাকার দুর্নীতির খবর। সামান্য মাছ ব্যবসায়ী থেকে ক্ষমতায় ভর করে কীভাবে কোটি কোটি টাকার মালিক হওয়া যায়, তার এক দৃষ্টান্ত তৈরি করেছেন অনুব্রত। সিবিআই তদন্তে সামনে এসেছে তাঁর মেশিনারি। জেলায় জেলায় ছড়িয়ে তাঁর এজেন্ট। গরু থেকে কয়লা পাচারে তারা সিদ্ধহস্ত। এখানের কালো টাকাই খেটেছে নানা স্তরে। তদন্তে নেমে একাধিক রাইস মিলে তল্লাশি চালিয়েছে সিবিআই। সেখানে মিলেছে একাধিক বিলাসবহুল গাড়ি। তবে সবকিছু জানা সত্ত্বেও মুখ্যমন্ত্রী প্রকাশ্যে যেভাবে পাশে দাঁড়িয়েছেন,কেষ্টকে বীর বলেছেন, তাও অবাক করেছে রাজ্যবাসীকে।
অনুব্রতর সঙ্গেই এই কেলেঙ্কারিতে নাম জড়িয়েছে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের। তাঁকেও একাধিকবার জেরার মুখোমুখি হতে হয়েছে। শুধু অভিষেকই নন, তাঁর স্ত্রী ও শ্যালিকাও রয়েছেন সন্দেহভাজনের তালিকায়। দেশ থেকে বিদেশে কোটি কোটি টাকা পাচারের অভিযোগ উঠেছে তাঁদের নামে। তদন্ত চলছে। তবে একটা রাজনৈতিক দলের শীর্ষ নেতাদের বিরুদ্ধে এই অভিযোগ এবং সেখানে মেলা বিভিন্ন তথ্য, এর আগে প্রত্যক্ষ করেনি বাংলা। কয়লা ও গরু পাচারের টাকা সাদা করতে লটারি শিল্পকে যেভাবে হাতিয়ার করেছেন অনুব্রত মণ্ডল, তা সব শিল্পকে ছাপিয়ে যায়। পাঁচ পাঁচবার তাঁর ও তাঁর কন্যার নামে লটারির প্রাইজ পাওয়ার খবর সামনে এসেছে। দুজনে মিলে পেয়েছেন ২ কোটি ১০ লক্ষ টাকা। অভিযোগ উঠেছে, যাঁর নামে লটারির প্রাইজ মিলেছে, তাঁকে ভয় দেখিয়ে সেই টিকিট আদায় করা হয়েছে। কালো টাকা সাদা করার জন্য এমন কেলেঙ্কারির খবর আগে শোনেনি বাংলা।
এই কেলেঙ্কারির পাশাপাশিই রাজ্য জুড়ে সামনে এসেছে আর এক কেলেঙ্কারি। এটা আবাস যোজনা কেলেঙ্কারি। গরিব মানুষকে ঘর তৈরি করে দেওয়ার জন্য কেন্দ্র যে প্রকল্প এনেছে, তার টাকা কীভাবে নিজেদের পকেটে পুড়েছে তৃণমূল নেতারা, তার নজির সামনে এসেছে। দেখা গেছে যার চার তলা বাড়ি, তার নামও উঠেছে আবাস যোজনার তালিকায়। অভিযোগ, টাকা চুরি করতে করতে, আর কোনও দিকেই নজর দেওয়ার সময় নেই শাসকের। তাই সুযোগ পেলেই লুঠের আসরে নাম লেখাচ্ছে তারা। রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী যে বাহানাই দিন, এমন নির্লজ্জ ছবি দেখে খোদ বাংলা মা-ও যে কাঁদছে, তা দিনের আলোর মতোই পরিষ্কার। রাস্তা হওয়ার নামে টাকা লুঠ, বনসৃজনের নামে অর্থ হরণ, বাড়ি তৈরি করে দেওয়ার নামে ঘুষ, এ যেন কেলেঙ্কারির সর্বগ্রাসী ছবি। শাসক লুঠ করছে। আর বিরোধীরা তার প্রতিবাদ করলেই নেমে আসছে অত্যাচার। চলছে শাসানি, খুন খারাপি। দিনের পর দিন এই ছবি দেখতে দেখতে বাংলার মানুষ ক্লান্ত। তারাও চাইছে প্রতিকার। তাই ২০২২ এর কালিমা মুছে নতুন দিন দেখতে চাইছে বঙ্গবাসী। তারা চাইছে নতুন বছর বয়ে আনুক এক নতুন দিন। এক সুন্দর সকাল। বিচারপতির বার্তা নিয়ে রাজ্যবাসীও চাইছে, নতুন বছরে ধরা পড়ুক ধেড়ে ইঁদুর।
Tags:
bjp
tmc
West Bengal
cow smuggling scam
ssc scam
Bengal
bengal ssc scam
bengal ssc scam news
coal scam
west bengal ssc scam
ssc scam west bengal
bengal teacher recruitment scam
teacher recruitment scam in west bengal
recruitment scam in west bengal
ssc scam in bengal
bengal ssc scam case
west bengal scam news
Lottery Scam
the bengal scam
lottery scam in West Bengal
ayas yojana scam in bengal
west bengal ayas yojana scam
2023
2022 scam in bengal