বাংলায় ৭ মাসে ১০০ কোটি cash উদ্ধার!উৎস কী?
টাকার পাহাড়ে তৃণমূল নেতারা। কিন্তু এর উৎস কী? তা নিয়েই ধন্দে ১২ কোটি বাঙালি। গত ৭ মাসে রাজ্য জুড়ে তল্লাশিতে যেভাবে কোটি কোটি টাকা উদ্ধার হয়েছে,তা দেখে চোখে সর্ষে ফুল রাজ্যবাসীর। হিসেব করলে দেখা যাচ্ছে, গত বছরের ২২ জুলাই থেকে এবছর ১২ জানুয়ারি পর্যন্ত পশ্চিমবঙ্গের বুকে উদ্ধার হয়েছে মোট ৯৮ কোটি ১৯ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা। মানে প্রায় ১০০ কোটির গণ্ডি ছুঁই ছুঁই। এই বিপুল পরিমাণ টাকা, তার সঙ্গে সোনাদানা, এ যেন কুবেরের ধন। গত বছর প্রথম নজরে এসেছিল মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্য়ায়ের বান্ধবীর ফ্ল্যাটে গচ্ছিত টাকার। এবার উদ্ধার হল প্রাক্তন মন্ত্রী তথা তৃণমূল বিধায়ক জাকির হোসেনের ডেরা থেকে। মুর্শিদাবাদের বিড়ি কারখানায় তল্লাশি চালিয়ে ১১ কোটি টাকা উদ্ধার করেছে আয়কর দফতর। শুধুমাত্র জাকিরের শিব বিড়ি কারখানা থেকেই উদ্ধার হয়েছে ৮ কোটি টাকার ওপর। এছাড়া আরও তিনটি বিড়ি কারখানা, রাইস মিল ও বাড়ি মিলিয়ে মোট ১১ কোটি টাকা পাওয়া গেছে। কয়েকটি সূত্র বলছে, বাড়ি ও কারখানা মিলিয়ে উদ্ধারের টাকার পরিমাণ ১৬ কোটি টাকা। সব টাকাই বাজেয়াপ্ত হয়েছে। জাকির হোসেন দাবি করেছে, এই টাকা তাঁর কারখানার শ্রমিকদের বা কৃষকদের। তবে এত নগদ টাকা কেন জমা ছিল তার ব্যাখ্য়া চেয়ে জাকির হোসেনকে কলকাতায় ডেকে পাঠিয়েছে আয়কর দফতর। ২০১৬ সালে মুর্শিদাবাদের জঙ্গিপুর থেকে তৃণমূলের টিকিটে বিধায়ক হন জাকির। মন্ত্রী হন শ্রম দফতরের। ২০২১ সালেও জেতেন তিনি। এবার মন্ত্রী হননি। তবে সামান্য বিড়ির কারবারি থেকে তৃণমূল জমানায় তাঁর এই কোটি কোটি টাকার সম্পত্তি মুর্শিদাবাদে গুঞ্জন তুলেছে। কেন্দ্রীয় সংস্থা সূত্রে খবর, জাকিরের সঙ্গে গরু পাচার কাণ্ডের মূল অভিযুক্ত এনামুল হকেরও যোগসূত্র পাওয়া গেছে। তবে কি গরু পাচারের টাকাও রয়েছে জাকিরের ডেরায়? তদন্তের অপেক্ষায় মুর্শিদাবাদ বাসী।
তৃণমূল বিধায়কের বাড়ি থেকে যখন টাকা উদ্ধার হচ্ছে, তখন টানা তল্লাশি চলছে কলকাতা পুরসভার ৫৪ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর আমিনুদ্দিন ববির হোটেল আইভরি গ্রান্ডে। মোতায়েন রয়েছে কেন্দ্রীয় বাহিনী। বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে বহু নথি। তৃণমূল নেতাদের বাড়িতে তল্লাশি আর তারপর টাকা উদ্ধারে কটাক্ষ করতে ছাড়েননি বিজেপি নেতা দিলীপ ঘোষ।
রাজ্য সরকারি কর্মীদের ডিএ নেই, উন্নয়ন খাতে বরাদ্দ নেই, ছেলে মেয়েদের চাকরি নেই, অথচ নেতাদের বাড়িতে টাকার অভাব নেই। মিলছে কোটি কোটি টাকা। দুর্নীতির পাহাড়। এধরনের কেলেঙ্কারি প্রথম সামনে এসেছিল গত বছর ২২ জুলাই। মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্য়ায়ের বান্ধবী অর্পিতা মুখোপাধ্যায়ের টালিগঞ্জের ফ্ল্যাট থেকে উদ্ধার হয়েছিল ২২ কোটি টাকা। এরপর পাঁচ দিন যেতে না যেতেই ২৭ জুলাই ফের মেলে টাকার সন্ধান। বেলঘরিয়ার ফ্ল্যাট থেকে উদ্ধার হয় ২৭ কোটি ৯০ লক্ষ টাকা। সঙ্গে বিপুল পরিমাণ সোনার গয়না।
৩০ জুলাই মালদার গাজলের এক মাছ ব্যবসায়ীর কাছ থেকে উদ্ধার হয় ১ কোটি ৩৯ লক্ষ টাকা। সেদিনই ঝাড়খন্ডের ৩ বিধায়কের কাছে মেলে ৪৯ লক্ষ টাকা। কলকাতার কাছে তাঁদের কাছ থেকে এই টাকা উদ্ধার হয়।
কিছুদিন যেতে না যেতেই গার্ডেনরিচে আর এক চমক। ১০ সেপ্টেম্বর এক ব্যবসায়ীর ঘর থেকে উদ্ধার হয় ১৭ কোটি টাকা। ১৫ অক্টোবর হাওড়া থেকে ২ কোটি টাকা উদ্ধার করে কলকাতা পুলিশ। তার পরদিন অর্থাৎ ১৬ অক্টোবর হাওড়ার এক চ্যাটার্ড অ্যাকাউন্টের বাড়ি থেকে উদ্ধার হয় যথাক্রমে সাড়ে ৮ কোটি ও ২ কোটি ২১ লক্ষ টাকা। ১৮ নভেম্বর হাওড়া স্টেশন থেকে বাজেয়াপ্ত হয় ৩৮ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা। এবছর ৭ জানুয়ারি খড়দার এক শিক্ষকের কাছে মেলে ৩২ লক্ষ টাকা।
এরপর ১২ জানুয়ারির যুব দিবসে জাকির হোসেনের ডেরা থেকে উদ্ধার ১৬ কোটি।
সবমিলিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায়ের জমানায় এ যেন ভোজবাজি। রূপকথার গল্পের যাবতীয় কাহিনীকে হার মানাবে বাস্তবের এই চিত্র। অনেকে বলছেন, এক দশকের শাসনে দুর্নীতি কীভাবে শিল্পের পর্যায়ে উন্নীত হয়, তা যেন দেখিয়ে দিচ্ছে বাংলা। শিক্ষিত ছেলেরা চাকরির জন্য যতই হা পিত্যেশ করুক, নেতারা যেভাবে রাশি রাশি টাকার গদিতে বসে আছেন, রবিনহুড কায়দায় মসিহা হয়ে উঠছেন, তা যেন একবিংশ শতকের গণতন্ত্রকে বিদ্রুপ করছে। বাংলা ডুবছে। আর শাসক হাসছে দম্ভের হাসি।
Tags:
Partha Chatterjee
tmc
Money Laundering
Money Laundering Case
TMC MLA
tmc leader
cut money
ED Raid
tmc news
partha chatterjee tmc
Money
money laundering act
black money
money laundering ssc
money laundering news
money recovered
TMC Money
zakir hussain
jakir hossain
jakir hossain bengal
jakir hossain income tax raid
jakir hossain money recovered
tmc mla money recovery
tmc mla money
jakir hossain money