WhatsApp_Image_2023-01-06_at_2013.01
১৭৭টি বেনামি ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট (177 fake bank accounts)। সই একজনের। আর এভাবেই চলছিল লেনদেন। সিউড়িতে ফাঁস চাঞ্চল্যকর তথ্য। সিবিআই (cbi) তদন্তে সমবায় ব্যাঙ্কে (Suri co-operative bank) কেঁচো খুঁড়তে কেউটে। গোয়েন্দাদের অনুমান, কালো টাকা সাদা (black money white) করতে এই কৌশল নেওয়া হয়েছিল। এর নেপথ্যে কে, তা নিয়ে তদন্ত চলছে। তাই কার সিগনেচারে এই কাণ্ড ঘটত, তা প্রকাশ্যে আনা হয়নি। তবে সিউড়ির এই ঘটনায় বীরভূমের তৃণমূল জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডলকে (Anubrata Mondal) ঘিরে নতুন করে সন্দেহ দানা বাঁধছে, তা স্পষ্ট।
গোয়েন্দাদের অনুমান,গরু পাচারের টাকা সাদা করার জন্য এই পথ বেছে নেওয়া হয়েছিল। কিন্তু কীভাবে চলত এই খেলা? গরু পাচারের টাকা সাজানো মিডল ম্যানদের হাত ঘুরে পৌঁছে যেত কৃষকদের কাছে। তাদের কাছ থেকে কম দামে ধান কেনা হত। সেই ধান পৌঁছে যেত চাল কলে। সিবিআইয়ের অনুমান, অনুব্রত মণ্ডলের হাতে যে সব চালকল ছিল, সেখানেই এই ধান পৌঁছে যেত। তারপর সেই চাল বিক্রি করা হতো খাদ্য দফতরে। খাদ্য দফতর চাল কেনার বিনিময়ে চেক জমা দিত সিউড়ি সমবায় ব্যাঙ্কে। এভাবে ১৭৭টি বেনামি অ্যাকাউন্টে টাকা জমা পড়ত। আর তা দেখভাল করত একজন। তার সই দিয়েই চলত কারবার। মানে গরু পাচারের টাকায় কৃষকের ধান কিনে তা থেকে চাল তৈরি করে পৌঁছে দেওয়া হতো সরকারের ঘরে। আর সরকারের টাকা অর্থাৎ সাদা টাকা ঢুকত ওই বেনামি অ্যাকাউন্ট গুলিতে।
এই তথ্য সামনে আসার পর সকলে চমকে উঠেছেন। অনেকে বলছেন, এ তো লটারি কেলেঙ্কারিকেও হার মানাবে। কালো টাকা সাদা করতে অনুব্রত মণ্ডল যেভাবে লটারির টাকা লুঠেছেন বলে অভিযোগ উঠেছিল, এই সমবায় ব্যাঙ্ক কেলেঙ্কারি তাকেও ছাপিয়ে যাবে বলে মনে করছেন গোয়েন্দারা। কারণ যাদের নামে ওই সব অ্যাকাউন্ট খোলা হয়েছে, তাঁরা এসবের বিন্দু বিসর্গও জানেন না।
আজই সিউড়ি সমবায় ব্যাঙ্কের ম্যানেজারকে ডেকে পাঠানো হয় নিজাম প্যালেসে। তবে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে মুখ খুলতে চাননি তিনি।ম্যানেজার মুখে কুলুপ এঁটেছেন। তবে ওই ব্যাঙ্কের আর এক কর্মী জানাচ্ছেন, গত ৬-৭ মাস ধরে তাঁদের ব্যাঙ্কে আসছিল সিবিআই। এই সমবায় ব্যাঙ্কের প্রাক্তন চেয়ারম্যান অনুব্রত ঘনিষ্ঠ নুরুল ইসলাম বলছেন, নগদ লেনদেন হতো না ওই অ্যাকাউন্ট থেকে। চেকে লেনদেন হতো। অর্থাৎ বেনামি অ্যাকাউন্টগুলি নিয়ে সিবিআই যা দাবি করছে, সেটা অনেকটাই মিলে যাচ্ছে। সবমিলিয়ে খোঁজ চলছে এখন সেই মানুষটির। যার নির্দেশে চলতো এত বড় কেলেঙ্কারি। সেই কেলেঙ্কারির খলনায়ককে হাতে নিতেই এখন তৎপর সিবিআই।