বাংলায় কাজ নেই, মিজোরামে গিয়ে মৃত্যু বাঙালির
সুদূর মিজোরামের হাঁথিয়াল। পরিযায়ী শ্রমিকদের মৃত্যুর পর আজ যা কার্যত মৃত্যু উপত্যকা। পাথর খাদানে আচমকা ধস নেমে কেড়ে নিয়েছে ১১ টি তরতাজা প্রাণ। এরমধ্যে পশ্চিমঙ্গেরই পাঁচজন। পেটের ক্ষিধে আর সংসার চালানোর তাড়নায় ওরা ছুটে গিয়েছিল এই মিজোরামে। এই পাঁচ বঙ্গ সন্তানের মৃত্যু জানিয়ে দিল, সুদূর উত্তর পূর্বের মিজোরামেও এরাজ্য থেকে পরিযায়ী শ্রমিক হয়ে ছুটে যাচ্ছে যুবকের দল। গ্র্যাজুয়েশন শেষ করার পরও কেউ কেউ বেছে নিচ্ছেন এই পরিযায়ী শ্রমিকের পেশা। কারণ ঘরের কাছে কাজ নেই। চাকরি নেই মমতার বাংলায়। তাই সবাই ছুটছে। কোনওমতে দু মুঠো ভাত জোগাড়ের আশায়।
একটা ধস যেন চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিল বাংলায় অর্থনীতির ধসের ছবি। একদিন এখানেই সারা দেশ থেকে ছুটে আসত হাজারে হাজারে মানুষ। কলকারখানা থেকে অফিস। একটা না একটা চাকরি জুটে যেত এখানে। কিন্তু ৩৪ বছরের বাম শাসনের পর তৃণমূলের ১১ বছরের রাজত্ব। বাংলার অর্থনীতি এক শূন্যতায় ভরা। শিল্প নেই। চাকরি নেই। কলকারাখানা বন্ধ। গোটা রাজ্যটাই যেন হতাশার বোঝা নিয়ে তলিয়ে যাচ্ছে। সস্তার রাজনীতি করতে করতে মমতা সরকার একবারও ভেবে দেখছে না, কেন রাজ্য থেকে এভাবে লাখে লাখে মানুষ পাড়ি দিচ্ছে ভিন রাজ্যে। মিজোরামের মতো এমন দুর্গম প্রান্তে পৌঁছতে যেখানে তিন-চারদিন লেগে যায়, সেখানেও ছুটছে বাংলার যুবক। কারণ একটাই। বেকারত্বের জ্বালা। সংসার চালানোর বাধ্যবাধকতায় দক্ষিণ ভারত থেকে গুজরাট, মহারাষ্ট্রের পর মিজোরামও এখন পরিযায়ী বাঙালির অন্যতম ঠিকানা।
রোজগারের আশাতেই নদিয়ার বুদ্ধ, মিন্টু, রাকেশ থেকে সন্দেশখালির সুব্রতরা পাড়ি দিয়েছিল উত্তর পূর্বের পাহাড়ি রাজ্যে। ঠিকাদার সংস্থার অধীনে রাস্তা তৈরির কাজে যোগ দিয়েছিল তারা। খাদান থেকে বয়ে আনছিল পাথর। আর সেই সময়েই এই মর্মান্তিক ঘটনা। খবর পাওয়ার পরই চটজলদি প্রতিক্রিয়া দিতে কসুর করেননি মুখ্যমন্ত্রী। ঘোষণা করেছেন ক্ষতিপূরণ।
কিন্তু যে তৎপরতা তিনি এখন দেখাচ্ছেন, তার কিছুমাত্র উদ্যোগ তিনি নেননি রাজ্যে শিল্পস্থাপনে। তাঁর মাথাতে খালি ঘুরছে চা, মুড়ি, ঘুগনি আর চপ শিল্প। এই দৃষ্টিভঙ্গিই বিপদে ফেলছে রাজ্যের কয়েক লক্ষ যুবককে। পড়ালেখার পাঠ শেষ করেই বেশিরভাগ পাড়ি দিচ্ছে ভিন রাজ্যে। মুটে মজুরের কাজের জন্যই পালাতে বাধ্য হচ্ছে অন্যত্র। ১১ বছর ধরে শুধু বিনিয়োগের স্বপ্ন দেখিয়ে যাচ্ছেন মুখ্যমন্ত্রী। বাকি রাজ্যগুলিকে দেখেও তাঁর শিক্ষা হচ্ছে না। শিল্প, শিক্ষায় পিছিয়ে রাজ্য শিখরে উঠছে দুর্নীতির। রাজ্যের যুবক কাজে গিয়ে চাপা পড়ছে পাথর খাদানে। আর বাংলায় কয়েক কোটি মানুষের স্বপ্ন চাপা পড়ছে মুখ্য়মন্ত্রীর নীতি হীনতায়। তার দিশাহীনতায়।
Tags:
Mamata Banerjee
Mamata
chop shilpo
mamata banerjee news today
mizoram stone quarry collapse
mizoram news
mizoram
stone quarry collapse in mizoram
mizoram accident
mizoram mine collapse
mine collapse in mizoram
west bengal unemployment
unemployment in West Bengal
Bengal collapse economy
no industry only chopshilpo
no job at bengal
labour exodus
migrant labour