রাহুলকে জেরা ইডির
ন্যাশনাল হেরাল্ড মামলায় নেতাকে তলব করেছে ইডি। তাই প্রতিবাদে সোচ্চার কংগ্রেস। সকাল থেকেই দিল্লির সদর কার্যালয়ের সামনে জড়ো হন সমর্থকরা। জড়ো হন সর্বোচ্চ পর্যায়ের নেতারাও। কারণ, এই তলব রাহুল গান্ধীকে। এই তলব সোনিয়া গান্ধীকে। কোভিড আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি সোনিয়া। তাই আপাতত হাজিরা এড়িয়েছেন তিনি। কিন্তু আগের দিন গরহাজির থাকলেও সোমবার ইডি অফিসে হাজিরা দেন রাহুল গান্ধী। তার আগে থেকেই চলে প্রতিবাদ-প্রস্তুতি। দেখা যায় পোস্টার। সেখানে লেখা, আমি সাভারকর নই, আমি রাহুল গান্ধী। দেখা যায়, সত্যের জয় হবে লেখা প্ল্যাকার্ড। রাত থেকে শুরু হওয়া এই প্রস্তুতি নিয়েই কংগ্রেস দফতরের সামনে হাজির হন দলের শীর্ষ নেতারা। হাজির হন কয়েক হাজার সমর্থক। রাহুলের সঙ্গে এসে দেখা করেন দিদি প্রিয়াঙ্কা। হাজির ছিলেন অধীর চৌধুরী, অশোক গেহলট,মল্লিকার্জুন খাড়গে, জয়রাম রমেশরা। তাঁদেরকে আটক করে তুঘলক থানার পুলিশ। সিল করে দেওয়া হয় আকবর রোডে কংগ্রেসের সদর দফতর থেকে ইডি-র অফিস পর্যন্ত পুরো রাস্তা। বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি আটকাতে পুলিশের এই উদ্যোগ। দলীয় সদর দফতর থেকে পায়ে হেঁটেই ইডি অফিসে যান রাহুল গান্ধী। কিন্তু ইডি দফতরে হাজিরার আগে তাঁর এই ভূমিকা নিয়েই প্রশ্ন তুলেছে বিজেপি। বিজেপি মুখপাত্র সম্বিৎ পাত্রর কথায়, ভ্রষ্টাচারের উৎসব পালন করছে কংগ্রেস। সুর আরও একধাপ চড়িয়ে কংগ্রেস নেতাকে আক্রমণ করেছেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী স্মৃতি ইরানি। তাঁর মতে, দুর্নীতি প্রকাশ্যে এসেছে। তাই কেন্দ্রীয় তদন্ত সংস্থাকে চাপ দেওয়ার চেষ্টা চলছে। এভাবে গান্ধী পরিবারের বেআইনি সম্পত্তিকে আগলাতে চাইছে গোটা দল। বিজেপি সাংসদের প্রশ্ন, একসময়ের যে পত্রিকা প্রকাশনা সংস্থা এখন রিয়েল এস্টেটের ব্যবসা চালাচ্ছে, তা কব্জায় রাখতে এত উৎসাহী কেন গান্ধী পরিবার? স্মৃতির কটাক্ষ, শুধু জিজাজি নন, গোটা গান্ধী পরিবারই এখন রিয়েল এস্টেট ব্যবসায় মজে গেছে। আটক নেতাদের সঙ্গে তুঘলক রোড থানায় গিয়ে দেখা করেন প্রিয়াঙ্কা গান্ধী। পুরো ঘটনাকে অঘোষিত জরুরি অবস্থা বলে মন্তব্য করেছেন কংগ্রেসের মুখপাত্র রণদীপ সিং সুরজেওয়ালা। মিছিল করে ইডি দফতরে যেতে না দেওয়ায় কংগ্রেস বলছে অঘোষিত জরুরি অবস্থা। কিন্তু তাঁর যুক্তিকে নস্যাৎ করে দিয়েছেন দিল্লি পুলিশের আইন-শৃঙ্খলা দফতরের স্পেশ্যাল সিপি এসপি হুডা। তিনি জানিয়েছেন, রবিবার রাতে ১০০০ সমর্থককে নিয়ে জমায়েতের কথা বলে একটা চিঠি দেয় কংগ্রেস। কিন্তু তাদের জানিয়ে দেওয়া হয়, জমায়েত করতে হলে যন্তর মন্তরে গিয়ে করুন। কারণ ওই এলাকায় ১৪৪ ধারা জারি আছে। তাই নিয়ম মাফিকই জমায়েত বেশি হলে আটক হতে হবে। এদিকে রাহুল গান্ধীকে এদিন তিন ঘণ্টা জিজ্ঞাসাবাদ করে ইডি। আর্থিক তছরূপ মামলায় ফের রাহুলকে তলব করা হতে পারে। তবে এদিন ইডি দফতর থেকে বেরিয়ে সোজা মায়ের সঙ্গে দেখা করতে যান রাহুল। প্রিয়ঙ্কাকে নিয়ে পৌঁছন স্যার গঙ্গারাম হাসপাতালে। কোভিডের কারণে এখন সেখানে ভর্তি আছেন সোনিয়া গান্ধী। তাঁকেও জেরা করবে ইডি। তাই ন্যাশনাল হেরল্ড মামলা যে গান্ধী পরিবারের এখন গলার কাঁটা, তা দিনের আলোর মতোই পরিষ্কার।