KK_NAZRUL_MANCHA
মন ছুঁয়ে যাওয়া গান। একের পর এক হিট সং। আর এভাবেই কোটি কোটি মানুষের মন জয় করে নিয়েছিলেন কেকে। কিন্তু কে জানত, তাঁর এমন পরিণতি হবে। প্রিয় শিল্পীর মৃত্যুতে তাই হাজারো প্রশ্ন তুলছেন কেকে ভক্তরা। প্রশ্ন উঠছে, প্রশাসনের অব্যবস্থাতেই কি দমবন্ধকর পরিস্থিতিতে মৃত্যু হল এ প্রজন্মের কিশোর কুমারের?
নব্বই দশক থেকেই একের পর এক জনপ্রিয় গান উপহার দিয়েছেন কেকে। তাঁর গানের তালে বুঁদ হয়েছে আপামর জনতা। আর এ হেন শিল্পীকেই কলেজ ফেস্টে আমন্ত্রণ জানিয়েছিল গুরুদাস কলেজের ছাত্র ইউনিয়ন। কিন্তু ওই ছাত্রদের কি জানার কথা, রাজ্য়ের অন্যতম সেরা হিসেবে তুলে ধরা নজরুল মঞ্চের কি অবস্থা? অনুষ্ঠানে হাজির ছিলেন এমন ছাত্ররা জানাচ্ছেন, কেকের অনুষ্ঠান ঘিরে চূড়ান্ত বিশৃঙ্খলার সৃষ্টি হয়েছিল। হলে যা লোক ধরে, তার কয়েকগুণ বেশি লোক ঢুকে গিয়ে ছিল। এই অবস্থায় বন্ধ হয়ে যায় এসি। একদিকে গরম, অন্যদিকে হাজার হাজার ওয়াটের আলো। এসি না চলায় প্রাণান্তকর অবস্থা।
সারা জীবন নিয়ম মেনে চলেছেন যে শিল্পী, তাঁর তখন প্রাণান্তকর দশা। বারবার জল খাচ্ছেন। বলছেন, পিঠ জ্বলে যাচ্ছে। কোনও কিছুতেই কাজ হচ্ছে না দেখে লাইটসম্যানদের বলছেন, পিছনের আলোগুলো বন্ধ করে দিতে। কিন্তু কে শোনে কার কথা! স্টেজে পুরো দমবন্ধ করা পরিস্থিতি। উদ্যোক্তাদের ৫০-৬০ জন উঠে নাচছেন। এতটুকু হাওয়া নেই। কিন্তু এমন পরিস্থিতিতেও হেলদোল নেই প্রশাসনের।
রাজ্যে সবকিছু যখন গয়ংগচ্ছ অবস্থা, তখন পুলিশও কি তার নিজের কাজ করে? তাঁরাও আমজনতার জন্য দরজা খুলে দিয়ে, নির্বাক দর্শক। আজ কেকে'র মৃত্যুর পর যখন দেশজুড়ে সমালোচনার ঝড়, তখন জানা যাচ্ছে, নজরুল মঞ্চের হাল নাকি এমনই! অনেক শিল্পীর অনুষ্ঠানেই বেশি ভিড় হলে খুলে দেওয়া হয় দরজা। কাজ করে না এসি।
শিল্পী রূপম ইসলামের স্ত্রীও এমন অভিযোগ করেছেন। কর্তৃপক্ষকে জানিয়েও কোন কাজ হয়নি বলে আক্ষেপ তাঁর। এই আক্ষেপ নিয়েই দিন কাটছে রাজ্যবাসীর। দিন কাটছে একদা সংস্কৃতির পীঠস্থান কলকাতার। আর যন্ত্রণা নিয়েই এই বাংলায় এসে জীবনের শেষ গান গাইতে হচ্ছে আসমুদ্রহিমাচল কাঁপানো কেকে'র মতো শিল্পীদের।