শিক্ষক নিয়োগে আদালতের খাঁড়া, কতগুলি মামলা ঝুলছে হাইকোর্টে ?
শিক্ষক নিয়োগে দুর্নীতির পাহাড়। তাই এযাবৎকালে স্কুলে যত নিয়োগ হয়েছে, তার ওপর খাঁড়া ঝুলল হাইকোর্টের। এক জনস্বার্থ মামলার প্রেক্ষিতে আদালত জানিয়েছে, মামলা গ্রহণযোগ্য। শুনানি চলবে। চার সপ্তাহের মধ্যে হলফনামা জমা দিতে হবে সরকারকে। অর্থাৎ সোজা কথায়, দুর্নীতির বেড়াজাল টপকে নিয়োগ প্রক্রিয়া চালিয়ে যাওয়ার যে চেষ্টা চালাচ্ছে সরকার, তাতে সায় নেই হাইকোর্টের। ২০১৪ সালে প্রাইমারি টেটে যে নিয়োগ হয়েছিল, তার মধ্যে বেশিরভাগই ভুয়ো বলে আদালতে অভিযোগ দায়ের হয়েছে। ফলে প্রশ্নের মুখে ৪২ হাজার নিয়োগ।
নিয়ম অনুযায়ী টেট পরীক্ষায় যারা ৬০ শতাংশ বা তার বেশি নম্বর পাবে,তাদেরকেই কৃতকার্য হিসেবে ধরা হবে। প্রাইমারি শিক্ষক নিয়োগের ক্ষেত্রে টেট উত্তীর্ণের পাশাপাশি মৌখিক পরীক্ষা হবে। তাদের শিক্ষাগত যোগ্যতা খতিয়ে দেখার পাশাপাশি নজর দেওয়া হবে এক্সট্রা কারিকুলার অ্যাক্টিভিটিজে। মেরিট লিস্ট তৈরি করার নিয়ম ছিল জেলাভিত্তিক। কিন্তু অভিযোগ, মেধা তালিকা প্রকাশ হয়নি ৪২ হাজার জনের। চাকরি জুটেছে অর্থের বিনিময়ে, সুপারিশের ভিত্তিতে। এই অভিযোগই খতিয়ে দেখতে চায় আদালত।
শিক্ষক নিয়োগ নিয়ে মামলার পাহাড়। প্রাইমারিতে দুটি মামলা। একদা রাজ্যের মন্ত্রী উপেন বিশ্বাসের কথায় উঠে এসেছিল বাগদার ‘রঞ্জন’এর নাম। যার বাড়িতে লাইন পড়ত চাকরিপ্রার্থীদের। বিষয়টি তদন্ত করে দেখছে সিবিআই। এর পাশাপাশি আছে এসএসসি গ্রুপ সি, গ্রুপ ডিতে নিয়োগ দুর্নীতি। যা নিয়েও চলছে তদন্ত । প্রাইমারি থেকে হায়ার সেকেন্ডারি। দুর্নীতির জাল বিস্তর। সিবিআই তদন্ত করছে ক্লাস নাইন, টেনে ইতিহাস, ভূগোল ও বাংলা বিভাগে নিয়োগ দুর্নীতি নিয়ে। তদন্ত চলছে ইলেভেন, টুয়েলভে শিক্ষক নিয়োগ নিয়েও। সিপিএম থেকে তৃণমূলে আসা মন্ত্রী পরেশ অধিকারীর মেয়ে কীভাবে চাকরি পেয়েছিল তা সবাই জানে। খোদ হাইকোর্টের নির্দেশে তাঁর চাকরি গেছে। জরিমানা দিতে হয়েছে।
সব মিলিয়ে এটা স্পষ্ট যে শিক্ষা দফতরে এমন কোনও শাখা বাকি নেই যা নিয়ে তদন্ত চলছে না। নতুন করে তথ্য সামনে আসছে বাজেয়াপ্ত হওয়া কম্পিউটারের হার্ড ডিস্ক পরীক্ষা করে। বেরিয়ে আসছে প্রচুর নকল নথি। কিন্তু কার নির্দেশে এই পাহাড় প্রমাণ দুর্নীতি? কার অঙ্গুলি হেলনে জলাঞ্জিল দেওয়া হচ্ছে রাজ্যের শিক্ষা ব্যবস্থাকে? জানতে চায় সাধারণ মানুষ। জানতে চায় আসল সত্য।