কোথায় যেত গরু পাচারের টাকা?
গরু পাচারের টাকা কোথায় খাটাতেন অনুব্রত মণ্ডল? তদন্তে বেরিয়ে আসছে চাঞ্চল্যকর খবর। খোঁজ মিলছে একের পর এক রাইস মিলের। যেখানকার মালিক অনুব্রতর আত্মীয়রা । সিবিআই সূত্রে খবর, দশ থেকে পনেরোটি চাল কলে টাকা খাটে অনুব্রত মণ্ডলের। শুধু চালকলই নয়, গরু পাচারের টাকা বিনিয়োগ হয়েছে নেপালেও। সেখানে মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে টাকা পাঠানোর খবর মিলছে। তদন্ত শুরু করেছে সিবিআই। উঠে আসছে বীরভূমেরই এক প্রভাবশালী নেতার নাম। ফলে পেঁয়াজের খোসার মতো একসময় যেমন সামনে আসছিল পার্থর সম্পত্তি, তেমনি একইভাবে ফাঁস হচ্ছে আর এক তৃণমূল নেতা অনুব্রতর।
রহস্যের জট খুলতে গত সপ্তাহেই সিবিআই পৌঁছে গিয়েছিল ভোলে ব্যোম রাইস মিলে। সেখানে উদ্ধার হয় বেশ কিছু নথি। দেখা যায় দাঁড়িয়ে আছে একাধিক বিলাসবহুল গাড়ি, যেগুলি ব্যবহার করতেন অনুব্রত। ভোলে ব্যোম রাইস মিলের পর আজ খোঁজ মেলে শিব শম্ভু রাইস মিলের। সেখানে এফসিআইয়ের অফিসাররা যেমন তল্লাশি চালান, তেমনি ঢুঁ মারেন সিবিআই আধিকারিকরাও। দেখা যায়, এই চালকলে অংশীদারিত্ব রয়েছে অনুব্রতর ভাগ্নে রাজা ঘোষের। যদিও রাজা ঘোষ তা মানতে চাননি। তিনি জানিয়েছেন, এই চালকলে তিনি কোনও দিন আসেননি। তাহলে কি দিদি, জামাইবাবু, ভাগ্নের নাম দিয়ে বকলমে অনুব্রতই এই রাইস মিলগুলির মালিক? প্রশ্ন উঠছে। জট খোলার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে সিবিআই। খোঁজ মিলছে আর এক চাল কলের। এর পিছনেই কিছুটা অপরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে আছে শঙ্কর নামের রাইস মিলটি। স্থানীয়রা বলছেন, বন্ধ থাকলেও লোকজনকে ঢুকতে দেখেছেন তাঁরা। ফলে প্রশ্ন উঠছে, এখানকার কাজ কারবার নিয়েও।
দশ থেকে পনেরোটি চালকলের সন্ধানে যখন সিবিআই তল্লাশি চলছে, তখন বেরিয়ে আসছে আর এক চাঞ্চল্যকর খবর। অনুব্রতর আয়ের সঙ্গে মিলছে নেপাল যোগ। সেখানেও কালো টাকা সাদা করার চেষ্টা হয়েছে। এব্যাপারে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পেয়েছে সিবিআই। গোয়েন্দারা জানতে পেরেছেন, নেপালের ত্রিভুবন বিশ্ববিদ্যালয়ের ছত্রছায়ায় নির্মিত চিতওয়ান মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে কালো টাকা বিনিয়োগ করা হয়েছে। সিবিআই সূত্রে খবর, বীরভূমের এক প্রভাবশালী নেতা সেখানে টাকা পাঠাতেন। এই নেতাকে বীরভূমে অনুব্রতর পরে দ্বিতীয় সারির নেতাদের মধ্যে গণ্য করা হয়। গরু পাচার থেকে আসা কালো টাকার একটি বড় অংশ বেআইনিভাবে অনেক দেশে বিনিয়োগ করা হতো। নেপাল তার মধ্যে একটি। উত্তরবঙ্গ হয়ে টাকা পাঠানো হতো নেপালে। প্রভাবশালী ওই নেতা অনুব্রতর বাড়িতে যেতেন নিজের ভাগ নিতে।
নেপালের পাশাপাশি ঝাড়খন্ডেও গরু পাচারের টাকা খাটছে বলে জানতে পেরেছে গোয়েন্দারা। সন্ধান মিলেছে একাধিক ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের। পড়শি রাজ্য়ের অনেক প্রভাবশালী ব্যক্তির সঙ্গেই অনুব্রতর যোগাযোগ রয়েছে। তাঁরা মাঝেমাঝেই তারাপীঠে আসেন। সেখানে তাঁদের থাকা খাওয়ার ব্যবস্থা করেন অনুব্রতই। ফলে বীরভূমের তৃণমূল নেতা যতই দাবি করুন, তাঁর কোনও অবৈধ সম্পদ নেই, যেসব তথ্য সামনে আসছে, তাতে সবকিছুই দিনের আলোর মতো স্পষ্ট হয়ে উঠছে।
সামনে আসছে অনুব্রতর একাধিক চালকলের মেন অপারেটরের নামও। তাঁর নাম রাজীব ভট্টাচার্য। একসময় চালের ব্যবসা করতেন। এখন পাঁচটি চালকলের মালিক। অনুব্রত মণ্ডলের ঘনিষ্ঠ হওয়ার পরই এই বিপুল সম্পত্তির অধিকারী হন তিনি। জেরা করে তাঁর কাছ থেকেও চাঞ্চল্যকর তথ্য পেয়েছে সিবিআই। কোম্পানির ব্যালান্স শিটে দেখা যাচ্ছে, তাঁর সংস্থা টাটা মেডিকেল সেন্টার ট্রাস্টকে ৬৬ লক্ষ টাকা দিয়েছে। সেসময় ওই হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন অনুব্রতর স্ত্রী ছবি মণ্ডল। সেই চিকিৎসার জন্যই কি এই টাকা দেওয়া হয়েছিল? উত্তর খুঁজছে সিবিআই। আর এভাবেই পরতে পরতে বেরিয়ে আসছে গরু পাচারের সঙ্গে চালকলের যোগসূত্র।
Tags:
bjp
Madhyom
tmc
anubrata mondal
bangla news
Bengali news
Anubrata Mandal
Cattle smuggling
Cow smuggling
anubrata mondal cbi
anubrata mondal news today
anubrata mondal latest news
anubrata mondal news
anubrata mondal daughter
CBI Anubrata Mondal
Anubrata Aide
Anubrata Aide Bidyutbaran Gayen
vole bome rice mill
wb bjp
anubrata cbi