আসানসোলে পুরবোর্ড গঠন সম্পূর্ণ করতে কেন নাজেহাল তৃণমূল?
Asansole: আসানসোলে কীসের অস্বস্তি তৃণমূলের? খোদ পুরসভার চেয়ারম্যানই বলছেন, মেয়র পারিষদ গঠন নিয়ে আশঙ্কা ছিল। চেয়ারম্যান স্বীকার করে ফেলেছেন। তবে গোটা আসানসোলবাসীই জানে, তৃণমূলের অন্তর্দন্দ্বে তাঁদের ভোগান্তির কথা। পুরভোটের ফল বেরনোর পর প্রায় চার মাস কাটতে চলল। কিন্তু এখনও পুরসভায় এখনও ডেপুটি মেয়র পদ খালি। পদ খালি বরো চেয়ারম্যানের। প্রায় চার মাসের মাথায় মেয়র পারিষদদের নাম ঘোষণা করা হয়েছে। কিন্তু তাও মাত্র পাঁচজনের। ফলে প্রশ্ন উঠছে, কীসের ভয় শাসক দলের? এরমধ্যেই দলের অন্দরে বিদ্রোহের গুঞ্জন শোনা যাচ্ছে। ফলে অন্তর্দন্দ্ব মেটাতে হিমশিম অবস্থা শীর্ষ নেতৃত্বের। মাত্র পাঁচজন মেয়র পারিষদকে নিয়ে আপাতত গঠিত হয়েছে পুরবোর্ড।বিজেপি অভিযোগ করেছে, আদালতের ভয়ে অসম্পূর্ণ বোর্ড গঠন করেছে শাসক দল। বিজেপি কাউন্সিলরদের দলনেত্রী চৈতালি তিওয়ারি বলেন, আমাদের নিমন্ত্রণ বা বৈঠকের কথা জানানো হয়নি। এটা পুর আইন বিরোধী। মনে হচ্ছে শাসক দল ভয় পাচ্ছে। তিনি বলেন এমনও দিন এল আসানসোল বাসীকে এখন ইনস্টলমেন্টে মেয়র পারিষদ দেওয়া হচ্ছে। এখনও ১০৬ টি ওয়ার্ডের জন্য ১০ টি বোরোর জন্য চেয়ারম্যান করা হয়নি। বিষয়টি আদালতে জানানোর হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তিনি । চৈতালি তিওয়ারি বলেন, তাঁদের উদ্দেশ্য দল নয়, সব মানুষ যাতে পুর পরিষেবা পান সেদিকেই লক্ষ্য রাখা। অস্বস্তি ঢাকতে পারছে না শাসক দল। তাদের যুক্তি ভালো কাজের কথা ভেবেই দুজন মেয়র ঠিক করা হয়েছে। কলকাতা পুরসভার ৯ বছর পর শুরু হয় এই আসানসোল পুরসভা। ১৮৮৫ সালে গঠিত হয় পৌরসভাটি। প্রথম কমিটিতে পুরবোর্ডে ছিলেন সাতজন সরকারি কর্মকর্তা ও ১২ জন মনোনীত সদস্য। সেই শতাব্দী প্রাচীন পুরসভার আজ এমন হাল কেন? গত পুর বোর্ডেই আসানসোলে ৭ জন মেয়র পারিষদ ছিল। কিন্তু শাসক দলের টানাপোড়েনে এতদিন তা আটকে ছিল। বৃহস্পতিবার ৫ মেয়র পারিষদ বা এমআইসির নাম ঘোষণা করেন মেয়র বিধান উপাধ্যায়। এদিন বেলা বারোটার পরে আসানসোল পুরনিগমের “মুখোমুখি” ভবনে মেয়র পারিষদদের নাম ঘোষণা নিয়ে একটি বৈঠক ডাকা হয়। পুর চেয়ারম্যান অমরনাথ চট্টোপাধ্যায় সেই বৈঠকের সূচনা করেন। মেয়র বিধান উপাধ্যায় ৫ মেয়র পারিষদ গুরুদাস ওরফে রকেট চট্টোপাধ্যায়, মানস দাস, দিব্যেন্দু ভগৎ, ইন্দ্রানী মিশ্র ও সুব্রত অধিকারীর নাম ঘোষণা করেন। পরে তাঁদের শপথ বাক্য পাঠ করান মেয়র। মেয়র বিধান উপাধ্যায় বলেন, পাঁচ মেয়র পারিষদের নাম ঘোষণা হল। এবার দ্রুত তাঁদের দফতর বন্টন করা হবে। উল্লেখ্য ,গত ফেব্রুয়ারি মাসে অভিজিৎ ঘটক ও ওয়াসিম-উল-হককে আসানসোল পুরনিগমের দুই ডেপুটি মেয়র হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছিল। গত ২৫ ফেব্রুয়ারি মেয়র হিসাবে বিধান উপাধ্যায় ও পুর চেয়ারম্যান হিসাবে অমরনাথ চট্টোপাধ্যায় শপথ নিয়েছিলেন। কিন্তু তারপর সাড়ে তিনমাসেরও বেশি সময় হয়ে গেলেও মেয়র পারিষদ ও বরো চেয়ারম্যান সহ পূর্ণাঙ্গ পুর বোর্ড গঠন করতে পারল না শাসক দল। ফলে বিজেপি সহ অন্য বিরোধী দলগুলি কটাক্ষ করতে ছাড়েনি শাসক দলকে। দরকারে উচ্চ আদালতে যাওয়ারও হুঁশিয়ারি দিয়েছে বিজেপি। আসানসোল উত্তর বিধান সভা থেকে গুরুদাস ওরফে রকেট চট্টোপাধ্যায়, আসানসোল দক্ষিণ বিধানসভা থেকে মানস দাস, জামুরিয়ার সুব্রত অধিকারী, রানিগঞ্জের দিব্যেন্দু ভগৎ ও কুলটি থেকে ইন্দ্রাণী মিশ্রকে মেয়র পারিষদ করা হয়েছে। একমাত্র দিব্যেন্দু ভগৎকে বাদ দিলে বাকি চারজনই আসানসোল পুরনিগমে প্রথমবার মেয়র পারিষদ হলেন। তারমধ্যে কুলটির ইন্দ্রানী মিশ্র আসানসোল পুরনিগম ভোটের কয়েকদিন আগেই মন্ত্রী মলয় ঘটকের হাত ধরে কংগ্রেস ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দেন। তারপর পুরভোটে জিতে কাউন্সিলর হওয়া ও মেয়র পারিষদের দায়িত্ব পেলেন ইন্দ্রানী। তার এই দায়িত্ব পাওয়া নিয়ে কুলটির শাসক দলের পুর কাউন্সিলরদের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। কুলটির এক প্রবীন কাউন্সিলর বলেন, এটা আমরা মানতে পারছি না। আরও অন্তত দুজনকে মেয়র পারিষদ করা হবে বলে শুনেছি। সেই সময় পর্যন্ত আমরা অপেক্ষা করব। যদি তখনও আমাদের করা না হয়, তাহলে আমরা কয়েকজন দল ছেড়ে দেওয়ার মতো কঠিন সিদ্ধান্ত নিতে পারি। তবে শুধু কুলটি নয়, অন্য বিধানসভা এলাকাতেও একই রকম খবর মিলছে। তার প্রমাণ হলো, এদিনের মেয়র পারিষদ গঠন করা নিয়ে, যে বৈঠক ডাকা হয়েছিল, সেখানে বিরোধী দলের পাশাপাশি শাসক দলের অনেক কাউন্সিলর গরহাজির ছিলেন। ফলে, সবুজ আবির উড়িয়ে আর তাসার বাজনা বাজিয়ে যতই উৎসবের চেহারা দেওয়ার চেষ্টা হোক, আসানসোলে তৃণমূলের ধুকপুকুনি যে বাড়ছে, তা দলের অন্দরে কান পাতলেই শোনা যাচ্ছে। বোর্ড গঠন করতে কেন নাজেহাল তৃণমূল? #asansole #municipalboard #banglanews #madhyam asansole, asansole municipal board, asansole purosava, asansole deputy mayor, asansole mayor parishad, asansole municipality,