কেলেঙ্কারি ঢাকতেই পুজো ঢাল মমতার?
এক মাস আগে থাকতেই পুজোর বাদ্যি বাজিয়ে দিলেন মুখ্যমন্ত্রী (Mamata Banerjee)। এগোল মিছিল, চলল শোভাযাত্রা। ব্যস্ত কাজের দিনে শহরের বিভিন্ন রাস্তায় বন্ধ থাকল যান চলাচল। শহরের লক্ষ লক্ষ মানুষ, যাঁদের পেট চালাবার জন্য প্রতিনিয়ত লড়তে হয়, তাঁরা পড়লেন দুর্ভোগে। আর মুখ্য়মন্ত্রী ঘোষণা করে দিলেন, পুজো (pujo) শুরু হয়ে গেল।
মুখ্য়মন্ত্রী টাক ডুমাডুম বাজিয়ে দিলেন। আর তা নিয়েই এখন হাটে বাজারে নানা মন্তব্য। অনেকেই এর মধ্য়ে দূরভিসন্ধি দেখছেন। একুশে জুলাইয়ের পরদিন থেকে একের পর এক কেলেঙ্কারি (scam) যেভাবে সামনে এসেছে, তাতে টলে গেছে শাসকের গদি। যাঁরা তৃণমূলে ভোট দিয়েছেন, তাঁরাও এখন বিরক্ত। খোদ তৃণমূল সাংসদ বলছেন, দলের একাংশে পচন ধরেছে। এতদিন যেকথা শোনা যেত বিরোধীদের মুখে, এখন সেকথাই প্রকাশ্যে বলছে আমজনতা। যে তৃণমূল নেত্রী এতদিন সততার নামাবলি গায়ে চড়িয়ে ছিলেন, আজ দুর্নীতির সুনামিতে তা লন্ডভন্ড হয়ে গেছে। মানুষ হাঁ হয়ে গেছে কুবেরের ধন দেখে। যা অস্বস্তি বাড়িয়েছে সরকারের। যেখানেই তল্লাশি চালিয়েছে সিবিআই-ইডি, উদ্ধার হয়েছে কোটি কোটি টাকা। উদ্ধার হয়েছে সোনার গয়না। এক অশুভ চক্র কীভাবে শাসকের শক্তিতে বলীয়ান হয়ে উঠেছিল, তা প্রকাশ্যে এসেছে। প্রকাশ্যে আসছে একের পর এক তথ্য। যা নিয়ে রাজ্য জুড়ে চলছে আলোচনা। সেই আলোচনার মোড় ঘোরাতেই কি এই অ্যাকশন প্ল্যান? ক্লাবে ক্লাবে টাকা বিলির পর পুজোর মৌতাতে সবকিছু ভোলাতে চাইছেন মুখ্য়মন্ত্রী? তাই কি একমাস আগে থাকতেই সবকিছু ভুলিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করছেন?
মুখ্যমন্ত্রী ভালো করেই জানেন, বাংলার দুর্গাপুজো কীভাবে পেয়েছে হেরিটেজ স্ট্য়াটাস। এই কৃতিত্ব অর্জনে রাজ্যের যে কোনও ভূমিকা ছিল না, তা খোলসা করে দিয়েছেন পশ্চিমবঙ্গে বিজেপির পর্যবেক্ষক অমিত মালব্য। ট্যুইটে তিনি জানিয়েছেন, কেন্দ্রীয় সরকারের অধীনস্থ সঙ্গীত নাটক অ্যাকাডেমির প্রচেষ্টাতেই বাংলায় এই স্বীকৃতি এসেছে। এব্যাপারে সামনে এসেছে ২০১৯ সালের এক চিঠি। চিঠিটি লিখেছেন রাজ্য়ের তৎকালীন পর্যটন বিভাগের প্রধান সচিব অত্রি ভট্টাচার্য। সেখানে স্পষ্ট উল্লেখ রয়েছে, দুর্গাপুজো যাতে ইউনেস্কোর হেরিটেজ মর্যাদা পায়, তার জন্য উদ্যোগ নিয়েছিল কেন্দ্রীয় সংস্কৃতি মন্ত্রক। খসড়া ডসিয়ার তৈরির জন্য তারা সঙ্গীত নাটক অ্যাকাডেমিকে এই দায়িত্ব দেয়। ২০১৮ সালে সেই ডসিয়ার তৈরির কাজ শুরু করেন সেন্টার ফর স্টাডিজ ইন সোশাল সায়েন্সের অধিকর্তা তপতী গুহ ঠাকুরতা। ডসিয়ার জমা দেন ২০১৯ সালে। তারপরেই মেলে স্বীকৃতি। অর্থাৎ, রাজ্য সরকারের তৎকালীন সচিবই স্পষ্ট করে দিয়েছেন, কেন্দ্রের উদ্যোগে এই প্রাপ্তি। কিন্তু প্রচারের ঢাক বাজিয়ে এই স্বীকৃতিকেই রাজ্য সরকারের কৃতিত্বে পরিণত করতে চেয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। আর সেই স্বীকৃতিকে হাতিয়ার করেই এক মাস আগে থেকে শুরু করে দিতে চেয়েছেন দুর্গাপুজো।
এভাবেই মুখ্য়মন্ত্রী সবকিছু ধামাচাপা দিতে চাইছেন। এত বছর ধরে নানান কুকীর্তি যেভাবে ধামাচাপা দিয়েছেন তিনি। কিন্তু একবারও কি তিনি ভেবেছেন, এক মাস ধরে যে পুজো নিয়ে মানুষ মেতে থাকবে, তার রসদ পাবে কোথায়? চাকরি নেই, মানুষের হাতে টাকা নেই, চড়া মূল্যবৃদ্ধিতে সংসার চালাতেই নাভিঃশ্বাস। সেখানে এভাবে কি পুজোর অজুহাতে সবকিছু ভুলিয়ে রাখা যায়? বরং শাসকের বিভিন্ন স্তরের নেতাদের যেভাবে আঙুল ফুলে কলাগাছ অবস্থা, তাতে ফুঁসছে সাধারণ মানুষ। স্পষ্ট হয়ে গেছে সরকারের স্বৈরাচারী মনোভাব। তাই গুঞ্জন উঠছে নেতাদের বিরুদ্ধে, মুখ্যমন্ত্রীর বিরুদ্ধে। উলুধ্বনি ছাপিয়ে প্রকট হচ্ছে মানুষের ক্রোধ।
Tags:
Mamata Banerjee
Madhyom
Mamata
bangla news
Bengali news
WB cm mamata
mamata scam
mamata rally
mamata durga puja
mamata unesco
unesco durgapuja
mamata wants to hide scam
ssc scam mamata
mamata starts durga puja
mamata celebrates puja earlier
pujo start announce mamata
mamata announce puja one months before
why mamata announces puja earlier
mamatas plan on durga puja
mamata on bengal scam