মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: প্রায় সাড়ে সাত কোটি টাকার গ্রিন সিটি প্রকল্পের উদ্বোধনী ফলক প্রকাশ্যে জ্বলজ্বল করছে। কিন্তু সৌর বিদ্যুৎ প্রকল্পের কাজ কিছুই হয়নি। তৃণমূল পরিচালিত বোর্ডের বিরুদ্ধে কোটি কোটি টাকা নয়ছয়ের অভিযোগ বিরোধী দলগুলির। কাজ না হওয়ায় সরকারি বিদ্যালয়ের ছাদ থেকে সোলার প্যানেল খোলার আবেদন জানানো হল পুরসভাকে। পুরসভার (Arambag) বর্তমান তৃণমূলের চেয়ারম্যান বিগত তৃণমূল বোর্ডের দিকেই অভিযোগের আঙুল তুলেছেন।
বিদ্যালয়গুলি সোলার প্যানেল খুলে নেওয়ার আবেদন জানাচ্ছে
আরামবাগ (Arambag) পুরসভার উদ্যোগে স্টেট আরবান ডেভেলপমেন্ট অথরিটির সহায়তায় গ্রিন সিটি প্রকল্পে সরকারি বিদ্যালয়গুলিতে সৌর বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য সোলার প্যানেল বসানো হয়। ৭ কোটি ২৪ লক্ষ টাকার প্রকল্পে পুরসভার বিভিন্ন সরকারি বিদ্যালয় সহ রাস্তাঘাটে সৌর আলো লাগানো হয়। আরামবাগ পুরসভা থেকে ই টেন্ডার করে ঠিকাদারের মাধ্যমে এই কাজের বরাত দেওয়া হয়। সেইমতো আরামবাগ শহরে অবস্থিত বিভিন্ন বিদ্যালয়ের ছাদে সৌর প্যানেল বসানোর কাজও হয়। কিন্তু উদ্বোধনের ফলক থাকলেও জ্বলেনি আলো, চলেনি পাখা। এমতাবস্থায় বিদ্যালয়গুলি সোলার প্যানেল খুলে নেওয়ার লিখিত আবেদন জানিয়েছে আরামবাগ পুরসভায়। সৌর বিদ্যুৎ প্রকল্প কার্যকর না হওয়ায় বিরোধী দলগুলিও পুরবোর্ডের দিকে আঙুল তুলেছে।
উল্লেখ্য, আরামবাগ পুরসভা এলাকার ৩৩ টি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও শিশুশিক্ষা কেন্দ্র, ১১ টি আপার প্রাইমারি ও হায়ার সেকেন্ডারি বিদ্যালয়ের ছাদে সোলার প্যানেল বসে। লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৭৬৪.৪৬ কিলোওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন। যা এই সমস্ত বিদ্যালয় ছাড়াও আরামবাগ পুরসভার স্টিট লাইটে ব্যবহার করা হবে। ২০১৭-১৮ অর্থবর্ষে আরামবাগ পুরসভা থেকে গ্রিন সিটি প্রকল্পে সোলার বিদ্যুৎ প্যানেলের জন্য ই টেন্ডার হয়। বিভিন্ন বিদ্যালয়ের কাজও শুরু হয়। অডিট রিপোর্টে দেখা যায়, ২৭.০৪.২০১৯ তারিখে গ্রিন সিটির কাজ সম্পন্ন হয়েছে। ওই তারিখেই ফাইনাল পেমেন্ট হয়ে গেছে।
কী বললেন স্কুলের প্রধান শিক্ষক?
গ্রিন সিটি নিয়ে বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলি বিভিন্ন সময় আরটিআই-এর মাধ্যমে পুরসভায় (Arambag) জানতে চেয়েছে, কত টাকা মঞ্জুর হয়েছে, কাজটি কীভাবে সম্পন্ন হয়েছে। কিন্তু পুরসভা থেকে কোনও RTI এর সদুত্তর দিতে পারেনি। এমতাবস্থায় বিভিন্ন বিদ্যালয়ে গিয়ে সরজমিনে তদন্ত শুরু করতেই উঠে এল চাঞ্চল্যকর তথ্য। বিদ্যালয়ের ছাদে কোথাও সোলার প্যানেল লাগানো আছে। কিন্তু মেশিন ও ব্যাটারি নেই। কোথাও বা সোলার প্যানেল লাগানোই হয়নি। কোনও কোনও বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা সাংবাদিকদের ক্যামেরার সামনে মুখ খুলতে রাজি হচ্ছেন না। তবে আরামবাগ হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক বিকাশচন্দ্র রায় মুখ খুলেছেন। কয়েক মাস আগেই গ্রিন সিটির প্রকল্পের সৌর বিদ্যুতের সোলার প্যানেল খোলার দাবিতে প্রায় ৩০ টি বিদ্যালয় পুরসভাকে লিখিত অভিযোগ জানিয়েছে। বিদ্যালয় থেকে কেউ কেউ তো সরাসরি অভিযোগ করেছেন, সোলার বিদ্যুৎ পাননি। কিন্তু বিদ্যালয়ের ছাদে সৌর বিদ্যুতের প্যানেল বসানোয় ছাদ ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।
নয়ছয়ের অভিযোগে কী বললেন চেয়ারম্যান (Arambag)?
ইতিমধ্যেই বিরোধী দল বিজেপি ও সিপিএম গ্রিন সিটি প্রকল্পের টাকা নয়ছয়ের অভিযোগ তুলেছে। বিজেপি তো সরাসরি কোর্টে যাওয়ার হুমকি দিচ্ছে। যদিও এই নিয়ে আরামবাগ (Arambag) পুরসভার চেয়ারম্যান সমীর ভান্ডারি বিগত পুরবোর্ডের দিকেই আঙুল তুলেছেন। আর বিগত আরামবাগ পুরবোর্ডের চেয়ারম্যান তথা বর্তমান ৬ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলা্র, আরামবাগ সাংগঠনিক জেলা তৃণমূল কংগ্রেসের সহ-সভাপতি স্বপনকুমার নন্দী বলেছেন, এটা বিরোধীদের অপপ্রচার। তিনি বলেন, আগেই অডিট হয়েছে। সেই রিপোর্ট পুরসভায় আছে। এ বিষয়ে রাজ্য বিজেপির সম্পাদক বিমান ঘোষ বলেন, যাদের যা স্বভাব তাই করেছে। তদন্ত হবে, অবশ্যই আইন অনুযায়ী দোষীরা শাস্তি পাবে। আইনের ওপর আমাদের পূর্ণ আস্থা আছে। ইতিমধ্যেই আমরা অভিযোগ জানিয়েছি।
দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের Facebook, Twitter এবং Google News পেজ।
+ There are no comments
Add yours