West Bengal Dengue Outbreak: ‘‘ডেঙ্গি আসছে বাংলাদেশ থেকে’’! রাজ্যে প্রকোপ বাড়তেই সাফাই মমতার

Suvendu Slams Mamata: ‘‘ঢাকায় প্রতিনিধি পাঠান, হাসিনার সঙ্গে বৈঠক করুন’’, মুখ্যমন্ত্রীকে খোঁচা শুভেন্দুর
dengue
dengue

মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: বর্ষার মরশুম শুরু হতেই রাজ্যে শুরু ডেঙ্গির (West Bengal Dengue Outbreak) প্রকোপ। সরকারের পেশ করা হিসেব অনুযায়ী, গত ২ সপ্তাহে ডেঙ্গিতে রাজ্যে মৃত্যু হয়েছে ৭ জনের। বেসরকারি মতে এ পর্যন্ত ডেঙ্গিতে রাজ্যে আক্রান্তের সংখ্যা আড়াই হাজার ছাড়িয়েছে। কিন্তু, কেন বর্ষা নামতেই রাজ্যে ডেঙ্গির বাড়বাড়ন্ত শুরু হয়ে গেল কেনই বা, গত বছরের থেকে শিক্ষা নিল না রাজ্য প্রশাসন (West Bengal Health Department)?

ডেঙ্গি নিয়ে কী সাফাই প্রশাসনের?

এরাজ্যে মুখ্যমন্ত্রী নিজেই স্বাস্থ্যমন্ত্রী। সেই নিরিখে, বৃহস্পতিবার বিধানসভায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee) দাবি করেন, রাজ্যে ডেঙ্গি (West Bengal Dengue Outbreak) সমস্যা প্রধানত এসেছে বাইরে থেকে। তাঁর মতে, ডেঙ্গি সমস্যা আসছে বাংলাদেশ থেকে। তিনি জানান, মূলত বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী এলাকায় ডেঙ্গির বেশি প্রাদুর্ভাব দেখা গিয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী যেখানে বিধানসভায় দাঁড়িয়ে বাংলাদেশ তত্ত্ব শোনাচ্ছেন, সেখানে জেলা প্রশাসন আবার পঞ্চায়েত ভোটকে ঢাল হিসেবে খাড়া করছে। প্রতিবারের মতো, এবছরও ডেঙ্গির প্রকোপ ধরা পড়েছে উত্তর ২৪ পরগনায়। সেই জেলার প্রশাসনিক কর্তাদের আবার দাবি, পঞ্চায়েত ভোটের জন্য ব্যাহত হয়েছে ডেঙ্গি প্রতিরোধের কাজ।

মুখ্যমন্ত্রীকে কটাক্ষ শুভেন্দুর

মুখ্যমন্ত্রীর এহেন দাবিকে অবশ্য কটাক্ষ করতে ছাড়েননি শুভেন্দু অধিকারী। রাজ্যের বিরোধী দলনেতার মতে, তাহলে তো এখন বাংলাদেশে প্রতিনিধিদল পাঠানো উচিত। সেদেশের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনায় বসা উচিত মুখ্যমন্ত্রীর। শুভেন্দু বলেন, ‘‘ওঁর উচিত অবিলম্বে চার্টার্ড বিমান নিয়ে ঢাকা যাওয়া। সঙ্গে ক্যানিংয়ের শওকত মোল্লা, ভাঙড়ের আরাবুল ইসলাম, ফলতার জাহাঙ্গিরদের নিয়ে যাবেন। কারণ, সীমান্ত এলাকায় এঁরা কাজকর্ম করেন, কে কী ভাবে ঢুকবে না ঢুকবে, নিয়ন্ত্রণ করেন। ডেঙ্গি বাংলাদেশ থেকে এলে এঁদেরও ব্যাপারটা দেখা উচিত। এই প্রতিনধিদল নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী আলোচনায় বসুন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে!’’

এদিকে, ডেঙ্গি নিয়ন্ত্রণে (West Bengal Dengue Outbreak) দুই পর্যায়ে বৈঠক করল রাজ্য সরকার। প্রথমে, সব জেলার স্বাস্থ্য আধিকারিক, হাসপাতালের সুপারদের সঙ্গে বৈঠক করেন স্বাস্থ্যসচিব নারায়ণস্বরূপ নিগম। পরে বিকেলে সব জেলা-কর্তাদের সঙ্গে পৃথক ভাবে বৈঠক করেন মুখ্যসচিব হরিকৃষ্ণ দ্বিবেদী। এর পরই, রাজ্যের তরফে ডেঙ্গি মোকাবিলায় একগুচ্ছ নির্দেশিকা জারি করা হয়। হাসপাতালগুলি ও চিকিৎসকদের জন্য বিশেষ গাইডলাইন প্রকাশ করেছে স্বাস্থ্য ভবন (West Bengal Health Department)।

আরও পড়ুন: দশ হাজারের নিচে নামলে তবেই প্লেটলেট! ডেঙ্গি নিয়ে স্বাস্থ্য ভবনের নয়া নির্দেশিকায় বিতর্ক

ডেঙ্গি মোকাবিলায় একগুচ্ছ নির্দেশিকা রাজ্যের

নির্দেশিকায় স্পষ্ট বলা হয়েছে, পরীক্ষার বিষয়টাতে এতটাই জোর দিতে হবে যাতে কোনও ডেঙ্গি বা ম্যালেরিয়ার ঘটনা চোখ এড়িয়ে না যায়, পরীক্ষায় যেন দেরি না হয়। প্রত্যেক হাসপাতাল ও স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলিকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে যাতে জ্বরে আক্রান্ত রোগীর হিসেব রাখা হয়। ডেঙ্গি পরীক্ষার ক্ষেত্রে বলা হয়েছে, ২ থেকে ৭ দিন জ্বরে অসুস্থ থাকলেও পরীক্ষার প্রয়োজনীয়তা রয়েছে। এছাড়া মাথা ব্যাথা, রক্তক্ষরণ, দেহে র‌্যাশ বেরনোর মতো উপসর্গ থাকলেই ডেঙ্গি পরীক্ষা বাধ্যতামূলক বলে উল্লেখ করেছে স্বাস্থ্য দফতর। অর্থাৎ মশাবাহিত এই দুই রোগ নিয়ে যাতে কোনও রকম গা ছাড়া মনোভাব না দেখা যায়, সে ব্যাপারেই সতর্ক করেছে রাজ্য।

বৈঠকে স্থির হয়েছে, প্রতিটি হাসপাতালে সর্বোচ্চ পর্যায়ে ‘ফিভার ক্লিনিক’ চালু রাখতে হবে সর্বক্ষণ। সেটি দেখাশোনার দায়িত্ব এক জন সহকারী সুপারের। জেলায় ডেঙ্গি দমনে ৯০০০ চিকিৎসক, প্যারা মেডিক্যাল কর্মীকে দায়িত্ব দেওয়া হচ্ছে। নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, হাসপাতালগুলি এবং ব্লাড ব্যাঙ্কে অণুচক্রিকার (প্লেটলেট) জোগানে যাতে কোনও ঘাটতি না থাকে। রাজ্যের যে সব হাসপাতালে ডেঙ্গি (West Bengal Dengue Outbreak) আক্রান্ত রোগী ভর্তির সংখ্যা বেশি, সেখানে ডেঙ্গি পর্যবেক্ষক দল পাঠানোর সিদ্ধান্ত হয়েছে। প্রতিটি হাসপাতালকেও ডেঙ্গি রোগীদের জন্য বেড তৈরি রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

 

দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের FacebookTwitter এবং Google News পেজ।

Share:

Facebook
Twitter
WhatsApp
LinkedIn

You may also like

+ There are no comments

Add yours

Recent Articles