Year Ender 2022: ফিরে দেখা সাল ২০২২! মহিলাদের স্বার্থে দেওয়া যুগান্তকারী কয়েকটি রায় শীর্ষ আদালতের

ভারতীয় সমাজের প্রেক্ষাপটে ২০২২ সালে মেয়েদের স্বার্থে প্রগতিশীল কয়েকটি রায় দেয় সুপ্রিম কোর্ট
Supreme_court
Supreme_court

মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: আর মাত্র কয়েকটা দিন, শেষ হতে চলল সাল ২০২২। ঘটনাবহুল এই বছরে ভারতীয় মহিলাদের স্বার্থে যুগান্তকারী বেশ কয়েকটি রায় দেয় দেশের শীর্ষ আদালত। নারীর অধিকার সুরক্ষিত রাখতে  সুপ্রিম কোর্টের সেই রায়গুলির একঝলক:

বৈবাহিক ধর্ষণ

‘বৈবাহিক ধর্ষণ’ও ‘ধর্ষণ’ বলে মন্তব্য করেছে আদালত। এই প্রসঙ্গে বিচারপতি চন্দ্রচূড় বলেন, বিবাহিত মহিলারও যৌন হেনস্থা বা ধর্ষণের শিকার হতে পারেন। বিনা সম্মতিতে স্বামীর আচরণে এক জন মহিলা অন্তঃসত্ত্বা হতে পারেন। প্রসঙ্গত, এ দেশে ‘বৈবাহিক ধর্ষণ’কে আইনি অপরাধ হিসাবে গণ্য করা হয় না। সেই নিরিখে শীর্ষ আদালতের এ হেন পর্যবেক্ষণ উল্লেখযোগ্য। স্বামীও ধর্ষক হতে পারেন এমন একাধিক অভিযোগ থানায় জমা হলেও সেগুলি অপরাধের সামিল বলে মনে করা হত না। চলতি বছরের ২৯ সেপ্টেম্বর সুপ্রম কোর্ট জানিয়েছে বিবাহের সম্পর্কে ধর্ষণও আইনত দণ্ডনীয়। অর্থাৎ এখন থেকে কোনও স্ত্রী স্বামীর বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ আনলে পুলিশ তার বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করতে বাধ্য। এত দিন পর্যন্ত একে কোনও অপরাধ বলেই ধরা হত না।

গর্ভপাতের অধিকার

দেশের সব নারীই নিরাপদে গর্ভপাত করাতে পারবেন। গত ২৯ সেপ্টেম্বর এই সংক্রান্ত এক মামলায় এমনই যুগান্তকারী রায় দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। গর্ভপাতের ক্ষেত্রে বিবাহিত ও অবিবাহিত মহিলার ফারাক করা অসাংবিধানিক বলেও উল্লেখ করেছে দেশের শীর্ষ আদালত। ২০ থেকে ২৪ সপ্তাহের মধ্যে অবিবাহিত মহিলারাও গর্ভপাত করাতে পারবেন। ২০০৩ সালে গর্ভপাতের আইনে সংশোধন করে সুপ্রিম কোর্টের তিন বিচারপতির বেঞ্চ এই রায় দেন। সেই বেঞ্চে ছিলেন বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়, বিচারপতি এএস বোপান্না এবং বিচারপতি জেপি পড়িওয়াল। 

আরও পড়ুন: রাজ্যে সঠিকভাবে নষ্ট করা হয় না মেডিক্যাল বর্জ্য, অভিযোগ স্বাস্থ্য দফতরের বিরুদ্ধে 

মায়ের পদবী ব্যবহার করতে পারবে সন্তান

জন্মের পর নিজের বাবার পদবীই পায় সন্তান,বহুকাল ধরেই এই নিয়ম চলে আসছে। কিন্তু সুপ্রিম কোর্ট এই চিরাচরিত প্রথা ভেঙে নজিরবিহীন রায় দিয়ে জানায়,সন্তানের পদবী কি হবে তা নির্ধারণ করার অধিকার একমাত্র মায়ের। সন্তানের জন্মের সঙ্গে সঙ্গে তার লালন পালনেও মায়ের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা থাকে। সেই সঙ্গে একা অনেক মা তাঁদের সন্তানকে বড় করে তোলেন। সেক্ষত্রে পদবীর ব্যবহার নিয়ে জটিলতা তৈরি হয় স্কুলে-কলেজে। সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি দীনেশ মাহেশ্বরী এবং বিচারপতি কৃষ্ণা মুরারীর বেঞ্চ একটি মামলার প্রেক্ষিতে জানিয়েছে সন্তান কোন পদবী ব্যবহার করবে তার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা মায়েরও রয়েছে।

টু-ফিঙ্গার টেস্ট

ধর্ষণের একটি মামলায় গত ৩১ অক্টোবর গুরুত্বপূর্ণ রায় দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। ধর্ষিতার ‘টু ফিঙ্গার টেস্ট’ বা ‘দুই আঙুলের পরীক্ষা’ নিষিদ্ধ ঘোষণা করে বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড় ও বিচারপতি হিমা কোহলির বেঞ্চ। বেঞ্চ আরও জানিয়েছে, এরপর কোনও ধর্ষণ মামলায় ‘টু ফিঙ্গার টেস্টের’ নির্দেশ দেওয়া হলে, তাদের অভব্য আচারণের জন্য দোষী সাব্যস্ত করা হবে। নিম্ন আদালতে ধর্ষণের দায়ে দোষী সাব্যস্ত এক ব্যক্তির সাজা বহাল রেখেছিল তেলঙ্গানা হাইকোর্ট। হাইকোর্টের এই রায়ের বিরুদ্ধে শীর্ষ আদালতে আবেদন করা হলে, সেই মামলার শুনানির শেষে গুরুত্বপূর্ণ রায় দেয় আদালত। 

বাড়ি তৈরির টাকা পণ নেওয়ার সামিল

বাড়ি তৈরির জন্য টাকা চাওয়া পণ নেওয়ার সামিল সুপ্রিম কোর্ট আরও একটি ঐতিহাসিক রায় দিয়েছে এই বছর। কোনও মেয়ের বাড়ির কাছে যদি বাড়ি তৈরির জন্য টাকা নেওয়া হয় সেটা পণ নেওয়ার সামিল অর্থাৎ পণ নেওয়ার মতই দণ্ডনীয় অপরাধ বলেই বিবেচিত হবে। সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি হিমা কোহলি এবং বিচারপতি এএস বোপান্না এই রায় দিয়েছেন।

দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের Facebook এবং Twitter পেজ। 

Share:

Facebook
Twitter
WhatsApp
LinkedIn

You may also like

+ There are no comments

Add yours

Recent Articles